মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচন

জমে উঠেছে নির্বাচনী আমেজ, পোস্টারে ছেয়ে গেছে মোংলার অলি-গলি

মো. মাসুদ রানা,মোংলা

আপডেট : ০৬:৪৪ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২১ | ৭৮১

বাগেরহাট জেলার মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচন। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন কমিশন থেকে তফসিল ঘোষণার পরপরই জমে উঠেছে নির্বাচনী আমেজ। দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া আর প্রতীক বরাদ্ধের পর নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মোংলা পৌর এলাকায় পুরো জায়গা অলি-গলি ছেয়ে গেছে পোস্টার ও ব্যানারে। বন্দর নগরী এ পৌরসভার ভোটারদের মন জয় করতে বিভিন্ন রকমের আগামীর ভবিষ্যৎবানী আর লোভনীয় প্রচার-প্রচারণাও করছেন প্রধান দুই দলের মেয়র প্রার্থীরা। আগামী ১৬ জানুয়ারির নিবার্চনকে ঘিরে ওই সকল প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও।

মোংলা পোর্ট পৌরসভায় বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ জুলফিকার আলী মনের ভয় ও শংকা নিয়ে পৌর শহরের কিছু কিছু জায়গায় নিবার্চনী প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন পুরো পৌর শহর এলাকায়। এছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের নিজ নিজ এলাকায় ।

নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী শেখ আঃ রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়ে আমাকে পৌরবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন। মোংলার যত উন্নয়ন তা জননেত্রী শেখ হাসিনা, খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রলায়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের মাধ্যমেই হয়েছে। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মোংলাবাসীর কাছে যাচ্ছি, তাদের কাছে ভোটের আহ্বান জানাচ্ছি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি, নৌকায় ভোট দিবে বলে তাদের কাছ থেকে সেই প্রতিশ্রুওি পাচ্ছি। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমার সরকার ক্ষমতায় আছে, তাই আমি এই এলাকার অভিভাবক তালুকদার আব্দুল খালেকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এনে এই পৌরবাসীর প্রত্যাশা পুরণ করতে পারব।


নির্বাচন প্রচারণাকালে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মোঃ জুলফিকার আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর মেয়রের দায়িত্বপালনকালে পৌরবাসীকে নিরলসভাবে সেবা করে আসছি। তৃতীয় শ্রেনীর পৌরসভাকে প্রথম শ্রেনীর পৌরসভায় রুপান্তরিত করেছি। আগামী ১৬ জানুয়ারির নিবার্চনকে ঘিরে প্রতিকুল পরিবেশের মধ্যদিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রথম দিকে একটু সমস্যা থাকলেও এখন বর্তমানে সুষ্ঠভাবে প্রচার-প্রচারণা করতে পারছি। তবে দল মত নির্বিশেষে সাধারণ জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে পৌছে সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে ভোট দিতে পারে এ ব্যাপারে নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন ভালো থাকে সংশ্লিষ্টদের কাছে সেই প্রত্যাশা করছি। তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর পৌরবাসীকে সেবা দিয়েছি, হাটু পানিতে ডুবন্ত পৌরসভা ডিজিটাল পৌর শহরে উন্নয়ন করেছি, অন্ধকারাচ্ছন্ন থেকে আলোকিত করেছি এই পৌর শহরকে। আর আমার আগামী পরিকল্পনা এ পৌর শহর হবে বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানের পৌরসভা। যার ফলশ্রুতিতে আগামী অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে ১৬ জানুয়ারি আমি জনগণের রায় পাব, নিশ্চয়ই পৌরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে পুনরায় নির্বাচিত করবে, ইনশাল্লাহ।

মোংলা পোর্ট পৌরসভা নিবার্চনে মেয়র পদে তিনজন, নয়টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত তিনটি মহিলা ওয়ার্ডে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। নয়টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।

এবারই প্রথম ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এবারের নিবার্চনে পৌরসভার সাধারণ ভোটারের সংখ্যা ৩১ হাজার ৫২৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৬৮১ আর নারী ভোটার ১৪ হাজার ৮৪৭ জন। এর আগে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নিবার্চনে এ পৌরসভায় ভোটারের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৯৫১ জন।

উপজেলা নিবার্চন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সব প্রার্থীকে নিবার্চনী আচরণ বিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে কাউকেই কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। এর আগে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মীদেরকে নগদ জরিমানা করা হয়েছে। নিবার্চন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত