মোংলায় মাদকাসক্ত ও বিবাহিতদের দিয়ে পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি

মাসুদ রানা,মোংলা

আপডেট : ০৫:১০ পিএম, শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১ | ১১১১

দীর্ঘ ১৭ বছর ৩ মাস পর গঠন হওয়া মোংলা পৌর ছাত্রদলের কমিটিতে মাদকাসক্ত, বিবাহিত ও অছাত্ররা স্থান পাওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে সমালোচনার ঝড়।

গত ১২ জানুয়ারী বাগেরহাট জেলা ছাত্রদল সভাপতি ইমরান খান সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক আলী সাদ্দাম আহমেদ দ্বীপ স্বাক্ষরিত ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, বিবাহিত, অছাত্র, মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ছাত্রদলের কমিটি। মূল্যায়ন পাননি ত্যাগী নেতারা।

সদ্য ঘোষিত পৌর শাখার আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম শুভ'র বেশ কয়েকটি বিদেশী মদের (বিয়ার) বোতল হাতে এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ( ম্যাসেঞ্জারে) ভাইরাল হলে সবার কাছে তিনি সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হন। অনেকে বলছেন, তিনি মাদকাসক্ত আবার অনেকের ধারনা তিনি ব্যাবসা করেন। কিভাবে এমন একজনকে ছাত্রদলের আহবায়ক করা হয়েছে তা নিয়ে নেতাকর্মীরা হতাশায় ভুগছেন। আবার অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপির এক প্রভাবশালীনেতা নিজের বলয় তৈরী করতে লবিং করে কমিটি এনেছেন।

এদিকে নতুন আহবায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়ার মধ্যে বর্তমান নতুন কমিটির ৬ নম্বর যুগ্ন আহবায়ক ইয়ার হোসেন,সদস্য সাইফুর রহমান সাব্বির, সদস্য আতিক উল্যাহ সুমন,সদস্য সজিব নিকারী,সদস্য কাজী নাজমুল হোসেন রাজ পদত্যাগ করেছেন বলে নিশ্চত করেছেন তারা।

মোংলা পৌর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক নেতাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় অনেক সক্রিয় কর্মী পদ-পদবির বাইরে ছিলেন। মূলত তাদের কথা বিবেচনায় রেখে কমিটিতে হয়তো কয়েকজন বিবাহিতদের রাখা হয়েছে। তবে অছাত্র, মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের কমিটিতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি তারা।


মোংলা উপজেলার সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি ও পৌর যুবদলের সভাপতি মোঃ ইমরান হোসেন বলেন,আমি মোংলায় সাবেক ছাত্রনেতা হিসাবে অবস্থান করছি কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউ কোন সময় যোগাযোগ করে নাই এবং পরামর্শ নেয় নি। তবে মাদকাসক্তের ব্যাপারে তিনি জানেন না। জেলা কমিটি যদি পরামর্শ নিতো তাহলে আমরা ভালো একটি গাইড লাইন দিতে পারতাম কাদেরকে নেতৃত্ব দিলে ভবিষতে ছাত্রদল স্-ুসংগঠিত ও শক্তিশালী হতো রাজপথে অবস্থান করার জন্য। তবে বাগেরহাট জেলা কমিটির সাবেক ছাত্রনেতা হিসাবে তার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ সাবেক ছাত্রদল নেতা। তিনি আরো বলেন জেলা কমিটি এমত পার্থক্যকে দ্রুততার সাথে গুরুত্ব দিয়ে তাদের ব্যাবস্থা গ্রহন করা উচিত ।

মোংলা পৌর যুবদলের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মানিক বলেন, , গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যথাযথ দ্বায়িত্ব পালন করতে এ কমিটি পারবে কিনা তিনি সন্ধিহান, আমার কাছে অভিযোগ করেন ছাত্রদলের নেতারা কমিটিতে মাদকাসক্তদ ও বিবাহিতদের স্থান দেয়া হয়েছে। যেহেতু আমাদের সাথে কোন আলাপ আলোচনা বা পরামর্শ না করে গোপন আতাত ও অর্থ বানিজের মাধ্যমে এ আহবায়ক কমিটি দেয়ার জন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ কমিটির ব্যাপারে মোংলা পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ হতাশ এবং বির্তকিতদের বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের নেতাদের দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবী করেন তিনি।


মোংলা সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক খালিদ মাহমুদ সোহাগ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বেল্লাল হোসেন বলেন, সারা বছর যারা দলের জন্য পরিশ্রম করেছেন, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। মূল্যায়ন করা হয়েছে অছাত্র-মাদকাসক্তদের। তাদের মধ্যে আবার কয়েকজন বিয়ে করেছেন। জেলা কমিটি অ-পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছেন, সিনিয়র জুনিয়র সিরায়াল মেনে কমিটি ঘোষনা করে নাই এটা অত্যান্ত দুঃখের ও কষ্টের।

নব ঘোষিত পৌর শাখার আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম শুভর কাছে হাতে থাকা বিদেশী মদের বোতল গুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোংলার রাজনীতিতে প্রতিহিংসা চলে, সাবেক ছাত্রদলের কিছু সিনিয়র নেতাদের গ্রুপি চলমান। আসলে আমি জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতী করি এটা সবাই ভুলে গেছে। আমার বিষয়ে অভিযোগ গুলো মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এ ব্যাপারে আর কিছুই বলতে রাজি না বলে মোবাইল ফোনের কলটি কেটে দেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত