শরণখোলায় মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র পেটানোর অভিযোগ

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৯:২৫ পিএম, রোববার, ৪ এপ্রিল ২০২১ | ৬৬৭

শরণখোলায় একটি কওমী মাদরাসায় ছাত্র পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মো. তামিম (১৪) নামের ওই ছাত্রকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সহপাঠীর সঙ্গে দুষ্টুমি করার অপরাধে শিক্ষক মুফতি আবু দাউদ গাবের লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটায়। এই ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের নলবুনিয়া হাজি বাড়ি কওমী মাদরাসায়।

আহত ওই কিশোর মাদরাসা সংলগ্ন মধ্য নলবুনিয়া গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক (রাজমিস্ত্রি) শামীম হাওলাদারের ছেলে। এব্যাপারে শরণখোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তামিমের বাবা।

দুপুরে শরণখোলা হাসপাতালে গেলে চিকিৎসাধীন কিশোর তামিম তার হাত-পা, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্নগুলো দেখায়। প্রতিটি আঘাতে রক্ত জমাট বেধে ফোঁসকা পড়েছে। লাঠির আঘাতে তার বাম হাতের কনু আঙ্গুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এসময় তামিম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানায়, সকালে সহপাঠী রাব্বির সঙ্গে দুষ্টুমি (ভেংচি কাটে) করলে তা দাউদ হুজুরের কাছে বলে দেয়। এর পর হুজুর একটি গাবের লাঠি নিয়ে এসে তাকে পেটাতে শুরু করেন। পেটাতে পেটাতে একপর্যায় লাঠি ভেঙে যায়। কয়েকবার পা ধরে ক্ষমা চাইলেও তাতে হুজুরের মন গলেনি। আবার লাথি মেরে সরিয়ে দেন ছেলেটিকে।


অভিযুক্ত শিক্ষক মুফতি আবু দাউদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, রাব্বি নামের ওই ছেলেটির হাত ভাঙা। তামিম তাকে প্রতিবন্ধী বলে টিটকারী মারে। এই অভিযোগ করার পর আমার খুব খারাপ লাগে। তখন আমার মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় আমি কয়েকটি পিটান দিয়েছি। এ ঘটনার জন্য আমি অনুতপ্ত।


মাদরাসার মোহতামিম (সুপার) হাফেজ মো. আল-আমীন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। সকালে ঘটনা শুনে মাদরাসায় জানতে পারলাম, দুই ছাত্র (তামিম-রাব্বি) মারামারি করেছে। এতে দাউদ হুজুর তামিমকে শাসন করতে গিয়ে একটু অতিরঞ্জিত করে ফেলেছে। এভাবে শাসন করায় আমি হুজুরকে ধমক দিয়েছি। আমরা তামিমের অভিভাবকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছি।


আহত কিশোরের বাবা মো. শামীম হাওলাদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ছাত্ররা ছাত্ররা একটু দুষ্টুমি করায় আমার ছেলেকে অমানবিকভাবে পেটায় দাউদ হুজুর। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।


শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আরিফুল ইসলাম রাকিব বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ছেলেটির শরীরে ১৩টি আঘাতে চিহ্ন দেখা গেছে। আঘাতগুলো লালবর্ণ হয়ে গেছে। তবে, বাম হাতের কনু আঙ্গুল ভেঙেচে কি না তা এক্স-রে করার পরে জানা যাবে।


শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, তামিম নামের এক মাদরাসা ছাত্রকে পেটানোর অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত