মোংলায় কঠোর বিধি নিষেধে ক্ষতিগ্রস্থ কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সহ দিনমজুর

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ১১:৪৩ এএম, শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ | ৬৭৮

চলতি বছরের মে মাসের ২য় সপ্তাহ থেকে মোংলায় করোনার সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে। সরকারি হাসপাতালে কোভিড রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ঘরে থাকার অনুরোধ করে স্থানীয় প্রশাসন।
মোংলা পৌরসভার করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হওয়ায় ৩০ মে থেকে ৮ দিনের বিধিনিষেধ আরোপ করে উপজেলা প্রশাসন৷ এসময় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে নির্দেশনা জারি করা করা। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আবারো বিধি- নিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হয়। শহরে কোস্টগার্ড পুলিশ ও আনসার সদস্যরা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখে।
বিধি-নিষেধ চলাকালেও করোনায় উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ হার দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মোংলাবাসী। করোনার উপসর্গ ও আক্রান্ত হয়ে বাড়তে থাকতে মৃত্যুর সংখ্যাও। করোনার সংক্রমণরোধে বারবার বিধি- নিষেধের মেয়াদ বাড়তে থাকায় দোকান- বিপণী বিতান ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিরুপায় হয়ে পড়েছে মোংলা পৌরসভার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সর্বশেষে ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ ৪র্থ ধাপে বর্ধিত করা হয়েছে।
টানা ৩০ দিন একটানা ব্যবসা- বাণিজ্য বন্ধ থাকায় আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এমন দূর্যোগকালীন মুহুর্তে কোনো প্রতিষ্ঠান বা জনপ্রতিনিধির সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেন দিনমজুর ও ব্যবসায়ীরা ।
ট্রেডার্স মসজিদ রোডের তামিম ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক শেখ আসাদুজ্জামান দুলাল বলেন, করোনার কারনে ৩০ দিন আমার প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কারখানার ৭ জন শ্রমিককে প্রতিদিন কাজ ছাড়াই বেতন দিতে হচ্ছে৷ করোনার কারনে নতুন কাজের অর্ডার নেই। এভাবে চলতে থাকলে আর্থিক সংকটে আমার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।
শেখ আব্দুল হাই সড়কের ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম জানান, চলমান লকডাউনে আমাদের ব্যবসার খুব ক্ষতি হচ্ছে। কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রতিদিন খরচ হয় ২ হাজার টাকার উপরে। দোকান বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে আছি।
কবর স্থান রোডের দিনমজুর ভ্যানচালক শাহ আলম জানান, করোনার কারনে লকডাউনে রাস্তায় কোন গাড়ি চালাতে দেয়না পুলিশ। গাড়ি নামাইলে অনেক সময় জরিমানার মুখোমুখি হতে হয়। এই সময়ে কোনো জনপ্রতিনিধি আমাদের খোঁজ নেয়নি। আমাদের কষ্টে কেউ ফিরেও তাকায়না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, করোনার কারনে যে সকল ব্যক্তি বা ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি জানাতে বলা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন গত ৩০ মে থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোট ৯৪০ জনের নমুনা পরিক্ষা করে ৫২২ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়। সুস্থ্য হয়েছে মোট ৩১৫ জন, এবং মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব মতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের বলে জানায় এ কর্মকতা।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব মতে মোংলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোট করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য বেড রয়েছে ১৫ টি।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত