বাগেরহাটের ভোলা নদীর পূর্বপাশ দখল করে কাঁচা-পাকা ইমারত নির্মাণ

শেখ আনিছুর রহমান,চুলকাটি(বাগেরহাট)

আপডেট : ০৫:৪৮ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১ | ১৯৭৭

বাগেরহাটের রনজিৎপুর গ্রামে বহু বিতর্কিত বিনোদন কেন্দ্র চন্দ্র মহল ইকোপার্ক কর্তৃপক্ষ ভোলা নদীর পূর্বপাশ দখল করে সেখানে অর্ধশতাধিক পাঁকা ভবন নির্মাণ করে অবৈধ স্থাপনা তৈরী করেছে। যে কারণে প্রবাহমান নদী তার গতি হারিয়ে নদীটি এখন মারা যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অতিদ্রুত অবৈধ স্থাপনা গুলি ভেঙ্গে ফেলা না হলে প্রবাহমান নদীর শ্রোত বাঁধাগ্রস্থ হয়ে সেই স্থানে পলি জমে নদীটি ভরাট হয়ে মারা যাওয়ার আশংকা রয়েছে। আর নদীটি মারা গেলে বাগেরহাট সদর, রামপাল ও ফকিরহাট উপজেলাবাসী চরম সমস্যায় পড়ে যাবেন বলেও ধারনা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, ফকিরহাট উপজেলার পিলজংগ ইউনিয়নের উপর দিয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলার হয়ে রামপালের মধ্যদিয়ে এই ভোলা নদীটি মোংলা বন্দর ঘষিয়াখালী নৌ-চ্যানেল নদীতে গিয়ে মিশেছে। তার মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের রনজিৎপুর গ্রামের এসে ২/৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে তা চলে গেছে প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে। এই নদী দিয়ে যে পানি উঠা নামা করে থাকে সেই পানি কয়েকটি উপজেলার লক্ষ লক্ষ কৃষক ও মৎস্য চাষি ব্যাবহার করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। শুধু তাই নয়, প্রবল বষর্ণে জমে থাকা বিপুল পরিমানে পানি নিচেই সহজে সরবরাহ হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে এলাকাবাসিকে বন্যার কবলে পড়তে হয়না। সেই প্রবাহমান ও গুরুত্বপূর্ন ভোলা নদীর রনজিৎপুর গ্রামের একটি বৃহৎ অংশ বিনোদন কেন্দ্র “চন্দ্র মহল ইকোপার্ক” এর মালিক সেলিম হুদা দখল করে নিয়েছেন। তিনি ভোলা নদীর পূর্বপার্শ্বে নদীর কুলঘেষে ইট বালু খোয়া ও বাঁশখুটি দিয়ে ঘিরে বালু ফেলে ভরাট করে সেখানে অর্ধশতাধিক স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক ব্যাক্তিরা বলেন, ইকোর্পাকের মালিক নদীর পূর্বপার্শ্বে প্রবাহমান নদীটিতে ইট বালু খোয়া ও বালু ভর্তি বস্তা ফেলে সেটিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন। ঘুরিয়ে দেওয়ার ফলে সেখানে একটি বাক সৃষ্টি হয়েছে। আর বাক সৃষ্টি হওয়ার কারণে নদীর প্রবাহ গতি বাধাগ্রস্থ হয়ে চর পড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সঞ্জয় কুমার দাস বলেন পার্কের মালিক নদীর পূর্বপার্শ্বে প্রায় ৩০/৪০ফুট সরকারী জায়গা দখল করে সেখানে বিপুল পরিমানে কাঁচা-পাকা ইমারত নির্মাণ করে সরকারী জমি দখল করে নিয়েছেন। আর তার দেখা দেখি স্থানীয় গ্রামবাসিরাও নদীর দুইপাড়ে দখল করে নিচ্ছে।


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিন বলেন, আমার পূর্ববর্তী চেয়ারম্যান এবিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবগত করেছেন। আমি ও আমার ইউনিয়নবাসীর দাবী দখলকারীদের অতিদ্রুত উচ্ছেদ করা না হলে প্রবাহমান নদীর পানি বাধাগ্রস্থ হয়ে চর পড়ে নদীটি মারা যেতে পারে।


এনিয়ে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোছাব্বেরুল ইসলাম শনিবার ২০নভেম্বর সকালে চন্দ্র মহল ইকোপার্কের সেই দখলকৃত জায়গা পরিদর্শন করেন। এসময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন, ভাটপাড়া ইউনিয়ন (ভুমি) অফিসের ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভুমি কর্মকর্তা অনামিকা সেন এবং তার পরের দিন রবিবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ রাশেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত