রামপালে সুপেয় পানি বঞ্চিত ৫০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ৪ হাজার শিশু

এম, এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ০৫:৫২ পিএম, শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২১ | ৫২৬

রামপালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ৪ হাজার শিশু শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানি বঞ্চিত বলে জানা গেছে। সরকারি হিসাবমতে এ উপজেলার ১২৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ২০ হাজার শিশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ টি বিদ্যালয়ের ৪ হাজার ৫৪০ জন শিশু সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। শুষ্ক মৌসুমে তীব্র লবণাক্ততাপ্রবন উপকূলীয় এ এলাকায় দিনকে দিন সুপেয় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সরকারিভাবে গভীর নলকূপ, ওয়াটার হার্ভেস্ট ট্যাংক, ও সোলার সিস্টেমের আওতায় বেশ কিছু বিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এখনো ৫০ টি বিদ্যালয়ের শিশুরা পানি বঞ্চিত।রামপালের পেড়িখালী, মল্লিকেরবেড়, হুড়কা, রাজনগর ও রামপাল সদরের কিছু এলাকার বিদ্যালয় এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রসাদনগর ভৈরবডাঙ্গা স. প্রা. বিদ্যালয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতাধীন একটি সুপেয় পানির প্লান্ট স্থাপন করা হয়। প্লান্টটি বিদ্যালয়সহ আশপাশের মানুষের সুপেয় পানির সংকট দূরীকরণের জন্য স্থাপন করা হয়। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্লান্টটি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, শিশুরা পানি পান না করতে পেরে পিপাসার্ত থাকে। সিংগড়বুনিয়া বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বাবু জানায়, আমরা বাড়িরতে পানি নিয়া আসি। যেদিন পানি আনতি ভুলে যাই সে দিন লাইব্রেরিতে খাই। সব সময় আবার পানি স্কুলে থাহে না। একই কথা বলে, বেতকাটা স্কুলের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী সুমাইয়া। সে জানায়, বাড়িতে ও ভালো খাবার পানি নেই।
মল্লিকেরবেড় ইউপি চেয়ারম্যান ছাবির আহমেদ তালুকদার জানান, আমার ইউনিয়নের ১০ টি বিদ্যালয়ের কোনটিতে খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। তিনি জরুরীভাবে বিদ্যালয় গুলোতে পানির ব্যবস্থার দাবী জানান। একই দাবী জানান হুড়কা ইউপি চেয়ারম্যান তপন কুমার গোলদার। তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের লোকজন প্রশ্ন করে, আমরা জবাব দিতে পারি না।
এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন জানান, ১২৮ বিদ্যালয়ের মধ্যে আমরা ৮৯ টি বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় পূূর্বে স্থাপনকৃত অনেক নলকূপ অকেজো অবস্থায় আছে। এগুলো সংস্কার করার বিষয়ে কি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে কি না ? তিনি বলেন, বরাদ্দ পেলে এবং পর্যায়ক্রমে সকল বিদ্যালয়ে নলকূপ, ওয়াটার হার্ভেস্ট ট্যাংক স্থাপন করে পানির সংকট দূরীরকরণ করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর তথ্যের দ্বিমত পোষণ করে বলেন, মোট ৫০ টি বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয় এর সাথে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। বিদ্যালয়গুলোতে খাবার পানির যে সংকট রয়েছে তার খুব দ্রুততার সাথে নিরসন করা হবে। যাতে আমাদের সোনানিরা বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে সুপেয় পানির সংকটে না থাকে সে জন্য বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত