বড় ভাইয়ের রোষানলে অবরুদ্ধ ছোট ভাইয়ের পরিবার

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা 

আপডেট : ০৮:২৭ পিএম, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০২২ | ৪৭৮

শরণখোলায় বড় ভাইয়ের রোসানলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ছোট ভাইয়ের পরিবার। বড় ভাই জলিল হাওলাদারের মিথ্যা মামলা ও অব্যাহত হুমকিতে ছোট ভাই খলিল হাওলাদার এখন বাড়ি ছাড়া। স্ত্রী ছোট ছোট চার সন্তান নিয়ে এখন নিরাপত্তাহীন। এব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো ফল হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন খলিল ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজিমন উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর গ্রামে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৎস্য ব্যবসা করেন খলিল হাওলাদার। আর্থিকভাবেও মোটামুটি সচ্ছল। তার বৃদ্ধ মা-বাবাকেও দেখভাল করেন তিনি। ছেলের প্রতি খুশি হয়ে মা মনোয়ারা বেগম কয়েক বছর আগে তার নামের জমিতে ঘর তুলতে দেন খলিলকে। সেই থেকেই চাঁন মিয়া হাওলাদারের অন্য তিন ছেলে ক্ষীপ্ত হন খলিলের ওপর। এর পর তারা জোটবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন অজুহাতে খলিল ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ক্ষতি করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।

খলিলে স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম বলেন, ভাসুর জলিল হাওলাদার আমার স্বামীকে মেরে ফেলতে চায়। হত্যার উদ্দেশে কয়েকবার হামলা করেছে। কয়েকদিন আগে একটি মিথ্যা মামলাও দিয়েছে। এখন আমার স্বামী বাড়ি ছাড়া। আমার ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা রাস্তায় গেলে ভাসুর ও তার ছেলেরা মারধর করে। স্বামী বাড়িতে না থাকায় তারা রাতে ঘোরাফেরা করে আমার বসতঘরের আশপাশে। জানালার ফাঁকা দিয়ে ঘরের মধ্যে লোহার রড়, রাম দা ঢুকিয়ে দেয়। ভয়ে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। চার সন্তান নিয়ে আমি একপ্রাকার অবরুদ্ধ এবং নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছি।

খলিলের বৃদ্ধ মা মনোয়ারা বেগম (৭০) বলেন, আমার সাইজ্যা (সেজ) ছেলেরে থাকার জন্য জায়গা দিছি। এই জন্য জলিল ও অন্য ছেলেরা খলিলরে দ্যাকতে পারে না। তারে মাইর‌্যা ফালাইবে। বৌ, পোলা-মাইয়ারা বাইরে যাইতে পারে না। পোলামাইয়ারে স্কুলে যাইতে দেয় না। ওরা আমার খলিলরে বাচতে দেবে না।

বৃদ্ধ বাবা চাঁনমিয়া হাওলাদার (৭৫) বলেন, আমার চার ছেলে। খলিল ব্যবসা-বাণিজ্য কইয়া ভলো আছে। সব পোলাগো আলাদা আলাদা জমি দিছি। খলিল তার মায়ের জমিতে ঘর উঠাইছে। এটাই দ্বন্দ্বের মূল কারণ। ওরা ভাই ভাই দ্বন্দ্ব কইরা যাতে ধ্বংন না হয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে সেই দাবি জানাই।

প্রতিবেশী রফিক হাওলাদার (৯০), বাবুল হাওলাদার (৬৫) ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুলতান আহমেদ খান (৬০) বলেন, এখানে কেউরে কেউ মানে না। লাঠিসোটা, খোন্তা-কেদাল নিয়া ঝাপাইয়া পড়ে। দ্বন্দ্ব মিমাংসা না হলে ভাইদের মধ্যে যে কোনো সময় খুনাখুনি ঘটতে পারে। এব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জলিল হাওলাদার বলেন, আমার এবং আমার ছেলেদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সাজানো কথা। কয়েকদিন আগে খলিল আমার ছোট ছেলেকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে। এই ঘটার পর তাদের নামে মামলা করেছি। আমার ভাই হলেও খেলিল খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হেলাল সরদার বলেন, এ বিষয় নিয়ে বহুবার সালিশ করার উদ্যোগ নিলেও কোনো পক্ষই আসেনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত