চিকিৎসক পলাতক থাকায় ভোগান্তিতে রোগী
বাগেরহাটে হাড় ভাঙ্গার অপ-চিকিৎসায় পঙ্গু প্রায় পিরোজপুরের ট্রাক চালক
আপডেট : ০৯:০৯ পিএম, মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০২২ | ৩৯৪
ভুক্তভোগীর স্ত্রী ডলি বেগম আরো জানায়, বাগেরহাটের একটি টিনশেডের বাসায় চলছে হাড়ভাঙ্গার চিকিৎসা। গত দুই মাস ধরে ঢাকা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন বাসায় রেখে পায়ের হাড় ভাঙ্গার চিকিৎসা চালাচ্ছে একদল প্রতারক চক্র। ঘুমের ব্যথার ওষুধ এবং গরুর প্রসাব ও লতা পাতার জাব দিয়ে চলছে হাড় ভাঙ্গার চিকিৎসা। সারাক্ষণ বাসায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছে অপ চিকিৎসার শিকার পিরোজপুর শহরের আলামকাঠি এলাকার মৃত মোশারফ শেখের ছেলে মিলন শেখ (২৮) । পায়ের বর্তমান অবস্থায় শংকিত হয়ে পড়েছে মিলন শেখ ও তার পরিবার। তাদের হাতে থাকা পয়সা গুলো হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েছে বাগেরহাটের খানজাহান আলী মাজার এলাকার সুন্দরঘোনা স্কুলের পাশে বদর খন্দকারের জামাই হাড় ভাঙ্গার চিকিৎসক মোঃ মনিরুজ্জামান।
অপ-চিকিৎসার শিকার মিলন শেখ জানান, পেশায় সে একজন ট্রাক ড্রাইভার। দুই মাস আগে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সে আহত হয় এবং পুলিশের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরের দিন সে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চলে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসক মনিরুজ্জামানের সাথে পরিচয় হলে সে আমাকে দুই মাসের মধ্যে চিকিৎসা করে পা ভালো করে দিবে সেই শর্তে তারই নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে চিকিৎসা সেবা দিতে থাকে। এক মাস পর মনিরুজ্জামান আমাকে বাগেরহাটে নিয়ে এসে শহরের হাড়িখালি এলাকার সিঙ্গাপুর প্রবাসী ইউনুস মল্লিকের বাড়িতে উঠায়। এখানে এনে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয় এই এলাকার মুকুল, এমাদুল, তুহিন সহ নাম না জানা আরও একজনকে।
সে আরো বলেন, বর্তমানে আমার পায়ের অবস্থা ভালো না। সারাক্ষণ জ্বালা যন্ত্রণা করে। এই চক্রটি আমার সকল টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। নতুন কোথাও গিয়ে চিকিৎসা করাবো সেরকম টাকা পয়সা আমার কাছে নাই। ঠিকমতো খাবার জুটছে না আমার পরিবারের। মাঝে মাঝে জোরপূর্বক ৭ হাজার টাকা মূল্যের ফাইল কিনতে হয় তাদের কাছ থেকে। সকল ওষুধ আমারই কিনতে হয়। পুরো চক্রটি এখন আর আমার সাথে যোগাযোগ করছে না। ডাক্তার মনিরুজ্জামানের মোবাইল বন্ধ, তার কোন খোঁজ নাই। আমি অসহায়, আমি এই প্রতারক চক্রের বিচার দাবি করছি।
ভুক্তভোগীর ভাই রাজু সেখ জানান, হাড়ের ডাক্তার মনিরুজ্জামান আমার ভাইকে গত এক মাস নারায়ণগঞ্জে চিটাগাং রোডের ভাড়া বাসায় রেখে চিকিৎসা করেছে। এক মাসের অধিক সময় ধরে আমাদের বাগেরহাটের এই বাড়িতে এনে চিকিৎসা করছে। এপর্যন্ত আমাদের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়াও ঔষধ খরচ ও অন্যান্য খরচ সহ লক্ষাধিক টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে ডাক্তার মনিরুজ্জামান। এত দিনেও পায়ের চিকিৎসার কোন উন্নতি হচ্ছে না। জ্বালা যন্ত্রনায় সে সারাক্ষণ কাতরাতে থাকে। আমরা খুব বিপদের মধ্যে পড়ে গেছি। ডাক্তারকেও মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না।
বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ কুমার বকসী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এসব অবৈধ ক্লিনিক এবং ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।