এক মাসেও খোলেনি রামপালে বৃদ্ধা নিহারিকা হত্যার জট 

এম.এ.সবুর রানা,রামপাল 

আপডেট : ০৮:২১ পিএম, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২ | ২৯৯

প্রতিকী ছবি

গত এক মাসেও বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার বৃদ্ধা নিহারিকা হালদার (৭০) হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এমন কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। হত্যাকারিদের দ্রুত আটক করে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবী করেছে স্থানীয়রা। পুলিশ বলছে হত্যাকারিদের ধরতে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও ডিবি মাঠে নেমেছে। অল্প দিনেই হত্যার রহস্য উদঘাটিত হবে।

উল্লেখ্য গত ১৭ অক্টোবর সোমবার উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ভোজপাতিয়া ইউনিয়নের বেতকাটা গ্রামের হত দরিদ্র বৃদ্ধা নিহারিকা হালদারের অর্ধগলিত মরদেহ তার নিজের ঘরে একটি স্টিলের বড় বাক্সের ভিতর থেকে উদ্ধার করে রামপাল থানা পুলিশ। ১৪ অক্টোবর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ওই দিন তার মেয়ে রাধিকা মায়ের কাছে বেড়াতে এসে তাকে না পেয়ে ফিরে যান। এরপর রাধিকা ও তার স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে সন্ধান মিলাতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েন।

এদিকে স্থানীয় লোকজন নিখোঁজের ৩ দিন পর গত ১৭ অক্টোবর বিকালে বসত ঘরের জানালা দিয়ে তাকিয়ে একটি স্টিলের বড় তালাবদ্ধ বাক্স দেখতে পায়। এসময় দুর্গন্ধ ভেসে আসতে থাকে। এতে তাদের মনে সন্দেহ জাগে। এক পর্যায়ে লোকজন ঘরের দরোজার তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে। ঘরে থাকা বাক্সের তালা ভাঙ্গলে বেরিয়ে আসে বৃদ্ধার অর্ধ গলিত মরদেহ। এরপর খবর পেয়ে রামপাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সন্ধ্যা ৬ টায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রামপাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর কেটে গেছে এক মাস। পুলিশ এ সময়ের মধ্যে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এমন কাউকে আটক করতে পারেনি।


গত ১০ নভেম্বর রামপাল উপজেলা পরিষদের মাসিক ্আইন সৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ মামলার বাদী রামপাল থানার ওসি তদন্ত কর্মকর্তা রাধেশ্যাম মামলার সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরে সভায় বলেন, পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও ডিবি আসামীদের ধরতে যৌথ ভাবে কাজ করছে। কারা এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তা ইতোমধ্যে প্রায় শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনি তা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অল্প সময়ের মধ্যে তাদের আটক করা হবে। তিনি বলেন ওই বৃদ্ধা পেশায় একজন ভিক্ষুক ছিলেন। তিনি একাই বসবাস করতেন। ভিক্ষাবৃত্তি করে তিনি বেশ কিছু টাকা পয়সা জমিয়েছিলেন। ধারনা করা হচ্ছে জমানো টাকা-পয়সার লোভে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

স্থানীয় একাধিক সুত্র বলছে, ওই বৃদ্ধার তিন সন্তান থাকলেও তারা কেউ মামলার বাদী হয়নি। তার মেয়ে রাধিকা হত্যাকান্ডের তিন দিন পুর্বে কেন মায়ের সাথে দেখা করতে এসেছিল। তা নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে তার একমাত্র পুত্র সন্তান পুলিশের কনষ্ট্রেবল বাবলু হালদার মায়ের হত্যাকান্ডের পর কোন মামলা না করে দুই বোনকে নিয়ে নিশ্চুপ থাকায় তাদের ভুমিকা নিয়ে এলাকায় রহস্য তৈরি হয়েছে।

আইন শৃংখলা বাহিনীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করে এ প্রতিনিধিকে বলেন ওই বৃদ্ধার স্বজনদের আচার-আচরণ দেখে তাদের নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তবে সবকিছু বিবেচনা করে আপাতত আমরা মুখ খুলছি না। আপনারা অপেক্ষা করুন অবশ্যই একটা ভাল রেজাল্ট পাবেন।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি দায়িত্বশীল সূত্র এবং স্থানীয় সচেতন মহলের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই হত্যাকান্ডটি অপেশাদার দুর্বৃত্ত চক্রের দ্বারা সংগঠিত হয়েছে। নিহত নিহারীকার নিকট আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে হত্যার রহস্য। নিহতের পুত্র পুলিশ সদস্য হওয়ায় পুলিশ একটু ধীরগতিতে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত