সুন্দরবনের ৩ বনদস্যু গ্রেফতার

মাসুদ রানা,মোংলা 

আপডেট : ০৮:২৪ পিএম, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ | ২৬৪

সুন্দরবনের মিরগামারী খাল থেকে তিন বন দস্যুকে আটক করেছে মোংলা থানা পুলিশ। সোমবার ভোররাতে বনের গহীনের শেলা নদীর বাওন থেকে অস্ত্র সহ তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, নৌকা ও ডাকাতির কাজে ব্যাবহৃত বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে।


পুলিশ জানায়, ২০১৮ সালে সরকার সুন্দরবন দস্যু মুক্ত ঘোষনা করার পর থেকে বনের অভ্যান্তরে মাছ ও কাকড়া আহরিত জেলে বাওয়ালীরা শান্তিতে বনের বনজ সম্পদ আহরণ করছিল। দীর্ঘ ৫ বছর পর আবারও হঠাৎ গত ৯ ডিসেম্বর রাতে নতুন এক দল বন দস্যুর আভির্ভাব হয়। এ সময় তারা জেলে বহরে হামলা ও লুটপাট চালায় এবং মুক্তিপণের দাবীতে ১৫ জন জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দস্যুরা। পরে প্রতি জেলে ১০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দিয়ে তাদের জিম্মিদশা থেকে ২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুক্ত হয়ে পরিবারের কাছে ফিরে আসে। এঘটনা নিয়ে জেলে ও জেলে পরিবারদের মাঝে নতুন করে উৎকন্ঠা ও আতংঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।


এর পর থেকেই সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত করতে র‌্যাব, কোস্টগার্ড, বন বিভাগ ও পুলিশ যৌথ অভিযানে নামে। তাই এক গোপন সংবাদের সুত্রধরে সুন্দরবনের জয়মনি ঘোল এলাকায় অভিযানে নামে মোংলা থানা পুলিশ। বাগেরহাট পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে রাত সাড়ে ৪টার দিকে মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনির ঘোল শেলা নদী সংলগ্ন সুন্দরবনের মিরগামারী খালের উত্তর পাড় থেকে শরণখোলা থানার সাউথখালী ৪নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত মকবুল ফরাজী ছেলে মোঃ মাসুম ফরাজী (৩৫), একই ইউনিয়নের মোঃ আব্বাস কবিরাজের ছেলে মোঃ হাছান কবিরাজ (৩০) ও বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার চরদুয়ারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত আমির হোসেন হাওলাদারের ছেলে মোঃ আলমগীর হোসেন হাওলাদার (৫০) কে গ্রেফতার করা হয়।

তাদের কাছ থেকে ১টি দেশী তৈরী একনালা বন্দুক, ৩ রাউন্ড কার্তুজ, কাঠের বাটসহ ২টি রামদা, ২টি লোহার রড, ১টি কাঠের পুরাতন ডিঙ্গি নৌকা, ২টি টর্চ লাইট, ২ পুরাতন সুতী চেকের গামছা, জেলেদের হাত-পা বাধার লাইলনের রশি, ১টি স্কচ টেপ সহ বিভিন্ন সাইজের কয়েকটি গরান গাছের লাঠি ও তাদের ব্যাবহৃত অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত এসকল বনদস্যুদের বিরুদ্ধে মোংলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিকাশ চন্দ্র ঘোষ বাদী হয়ে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। (যার নং-২৬)।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, গত ৯ ডিসেম্বর নতুন করে সুন্দরবনে বনদস্যুর তৎপরতা ও জেলে অপহরণের খবরে প্রশাসন তাদের টহল জোরদার করেছে। তাদের অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে মুক্তিপণ নিয়ে জেলেদের ছেড়েও দিয়েছে কিন্ত সুন্দরবন দস্যুমুক্ত ও জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে অভিযান চালমান রয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর রাতে ৩ দস্যুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি বনদস্যুদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে, যতক্ষন পর্যন্ত সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করা না হয়, ততক্ষন পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানায় পুলিশের এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত