মোরেলগঞ্জে পাচিং ও আলোর ফাঁদ পদ্ধতিতে পোকা নিধণে সফলতা,কৃষকের মাঝে হাসি

মেহেদী হাসান লিপন, মোরেলগঞ্জ

আপডেট : ০২:০৩ পিএম, শুক্রবার, ৩০ মার্চ ২০১৮ | ৯৫২

পাচিং পদ্ধতি

দিনের বেলায় ফসলের জমিতে সারি সারি পোতা গাছের ডালে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসছে পোকা নিধণ করছে। রাতের বেলায় ক্ষেতের পাশে কিংবা আইলে উপরের কৃষকদের তৈরি আলোক ফাঁদে পড়ে হাজার হাজার ক্ষতিকারক পোকা ধ্বংস হচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে বিনা খরচে পোকা নিধণ করতে পেরে তারা বেজায় খুশি। পরিবেশ বান্ধব ধানের ক্ষতিকারক পোকা দমনের কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য পাচিং ও আলোক ফাঁদ উৎসবে ব্যাপক সাড়া পড়ছে কৃষক-কৃষাণীদের মধ্যে।


বোরো আবাদ মৌসুমে উপজেলার প্রতিটি ব্লকে একযোগে আলোক ফাঁদ ও পাচিং পদ্ধতি উৎসব পালিত হয়েছে। উপজেলার ৪৯ টি ব্লকের মধ্যে আলকিবুরুজবাড়িয়া ব্লক, দৈবজ্ঞহাটী ব্লক, পুটিখালী ব্লক , বলইবুনিয়া ব্লকে অনুষ্ঠানিকভাবে রাতে আলোর ফাঁদ উৎসবের উদ্ধোধন করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপম রায়। উপস্থিত ছিলেন কুষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. সিফাত আল মারুফ, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মেজবাহ আহমেদ, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. জাকির হোসেন প্রমুখ।

আলোক ফাদ


উপজেলা কৃষি অফিসার অনুপম রায় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ক্ষতিকারক পোকা নিয়ন্ত্রন করা ,ফসলের উৎপাদন খরচ কমানো,যত্রতত্র কীটনাশক ব্যবহার কমানো, জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় আলোর ফাঁদ ও পাচিং পদ্ধতিতে ক্ষতিকারক পোকা দমনে একটি ফলপ্রসু পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ধানের ক্ষতিকারক পোকা সুনির্দিষ্ট করা সম্ভব। আর সেই মোতাবেক বালাইনাশক প্রয়োগ করা হলে একদিকে যেমন অতিরিক্ত খরচের হাত থেকে বাঁচা যায় অপরদিকে জীববৈচিত্র্যের কোন ক্ষতিসাধিত হয়না। দিনের বেলায় ক্ষেতে পোতা ডালে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজাতির শত শত পাখি বসে এবং এসব পাখি ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা ধরে ধরে খায়। এতে করে যদি ক্ষেতে কোন ক্ষতিকারক পোকা থাকে তা একদিকে নির্মূল হচ্ছে। অপরদিকে রাতের বেলায় আলোফ ফাঁদে ধরা দেয় ক্ষতিকারক পোকা। আলো দেখে পোকা আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদে রাখা কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে পড়ে ধ্বংস হয়। তাছাড়া ক্ষতিকারক পোকা চিহ্নিত করে যথাযথ ও সঠিক ব্যবস্থা গ্রহন করা যায়। উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. জাকির হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, চলতি বছরে উপজেলায় ৪ হাজার ৮ শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে বেরো ধানের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এ বছরের ৭ শ’ হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে । আলোক ফাঁদ ও পাচিং পদ্ধতি এলাকার কৃষক কৃষানীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে এবং তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত