রামপালে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের তদন্ত শুরু

রামপাল প্রতিনিধি

আপডেট : ১২:২০ এএম, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩ | ৫২৯

বাগেরহাটের রামপালে এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সভাপতির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগ দাখিলের পরে তদন্ত শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে তদন্ত শুরু করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উল কুদ্দুস। তদন্ত কার্যক্রম ব্যহত করতে একটি কুচক্রী মহল উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোনাতুনিয়া আমিনা খাতুন নিন্মলিখিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামের ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এমন অবস্থায় সচেতন মহল ও এলাকাবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার সোনাতুনিয়া আমেনা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ওয়ালিউল্লাহ শেখের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এনেছেন একই বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষক হাওলাদার সাইদুর রহমান। তিনি মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও পরদিন বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর বিদ্যালয়ের প্যাডে লিখিত এ অভিযোগে জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর আনুমানিক (সোমবার) বেলা ১২টায় বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী (নৈশ প্রহরী) মনিরুজ্জামান কে বিশেষ কাজে প্রধান শিক্ষক হাওলাদার সাইদুর রহমান বিদ্যালয়ে আসতে বলেন।
কিন্তু মনিরুজ্জামান না আসায় তাকে প্রধান শিক্ষক মৌখিক ভাবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে নিষেধ করেন। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ওয়ালিউল্লাহ শেখ কে জানান। কিন্তু প্রধান শিক্ষককে কোন কিছু না জানিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আনুমানিক বেলা ৩ টায় সভাপতি অজ্ঞাত ১২/১৫ জন লোক নিয়ে প্রধান শিক্ষকের অফিসে আসেন এবং অশোভন আচরণ করেন। এ সময় ৪/৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী বাঁধা দিলে তাদের উপর চড়াও হয় এবং ধাক্কা দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এক পর্যায়ে শ্রেণিকক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বলে সাইদুর রহমান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক হাওলাদার সাইদুর রহমান অভিযোগ পত্রে সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ সহ একটি নতুন কক্ষ নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ আনেন। যে কারণে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেছেন।
অভিযোগ দাখিলের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক হাওলাদার সাইদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দপ্তরে গিয়ে তিনি অভিযোগ দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সভাপতির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যা তিনি ক্রমশ প্রকাশ্যে আনবেন বলেও জানান।
সুত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হওয়ায় একটি কুচক্রী মহল বিদ্যালয়টির সুনাম নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। রাতের আধারে শেখ রাসেল দেয়া লিকার সৌন্দর্য নষ্ট করেছে কে বা কারা ? বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রধান শিক্ষককে বহল রাখা সহ শৃঙ্খলা রক্ষার দাবী করেছেন এলাকাবাসী। তা না হলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে ওই প্রতিষ্ঠানটি এমনটি মনে করেন এলাকাবাসী।
শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা যাতে না ঘটে তাই তিনি প্রধান শিক্ষকের হাতে থাকা সংরক্ষিত ছুটি থেকে একদিনের ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বিদ্যালয় বন্ধ রাখেন । পরবর্তীতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনায় বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয় ।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে অভিযুক্ত সভাপতি মো. ওয়ালিউল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে সামাজিক ভাবে হেও করার জন্য প্রধান শিক্ষক মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছে। এর কোন সত্যতা নেই এবং এলাকাবাসীও সকল ঘটনা জনেন‌ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এ আনোয়ার-উল কুদ্দুসের কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) তদন্তের দিন ধার্য ছিল। আমি তদন্তের জন্য ওই বিদ্যালয়ে যাই।
সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তদন্ত কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় এবং অতি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করা হয়।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত