সিবিএ নির্বাচন নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া শুরু

মোংলা বন্দরের সিবিএ’র কর্মচারী সংঘের সাবেক সম্পাদক সহ ৩ জনের সদস্য পদ বাতিল

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০১:০৪ পিএম, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | ২০৬

আগামী ৯ মার্চ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের শ্রমিক-কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে হঠাৎ করে সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএম ফিরোজ সহ ৩ জনের সদস্য পদ বাতিল করেছে বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে কার্য নির্বাহী কমিটির এক সভায় আলোচনার মাধ্যমে এমন সিদ্ধান্ত নেয় সংঘের সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। সদস্য পদ থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের চিঠি মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, খুলনা বিভাগের শ্রম পরিচালক সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ফলে খুলনাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তর মোংলা বন্দরের এ সিবিএ সংগঠনটির নির্বাচনী প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুয়ায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে কর্মচারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বিধা-বিভক্তি।


মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিবিএ) কর্মচারী সংঘের সভার সিদ্ধান্ত সুত্রে জানা যায়, নব্বই দশকে কর্তৃপক্ষের অধিনে এল,ডি,এ কাম-টাইপিষ্ট পদে এস এম ফিরোজ, মোঃ মোশারফ হোসেন এবং মোঃ অকিচ আলী দপ্তরি পদে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময় তারা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রনাধীন সিবিএ সংগঠনের বিভিন্ন পদে নির্বাচন ও কর্মচারীদের নেতৃত্বেও ছিলেন। কিন্ত বিগত প্রায় ২ বছর আগে কর্তৃপক্ষের পদোন্নতি সভায় কর্মচারী থেকে জুনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন হয় বেশ কয়েকজন কর্মচারীর মধ্যে তাদেরও।


উল্লেখ রয়েছে, ট্রেড ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রের ৪(ক) ধারা এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর বিধান মোতাবেক যারা ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার বিধান রয়েছে কেবলমাত্র তারা ব্যতিত বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ২(৪৯) ধারার বিধানমতে মালিক এর সংজ্ঞায় পড়ে এমন কোন ব্যক্তি উক্ত ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হতে পারেন না। তাই মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে কর্মরত (১) এস এম ফিরোজ, জুনিয়র অফিসার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক (সিবিএ) এর আইসি নং-২৫৮৮ (২) মোঃ মোশাররফ হোসেন, জুনিয়র অফিসার, আইসি নং-২৪৪৮ ও (৩) মোঃ আকিচ আলী, সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, আইসি নং-১৩৭৯, এরা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষে কর্মকর্তা/মালিকপক্ষ হিসেবে কর্মরত এবং ব্যবস্থামুলক কাজে দায়িত্বে নিয়োজিত থাকায় তারা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এবং ২(৬৫) ধারার বিধান মোতাবেক শ্রমিকের সংজ্ঞায় পড়ে না। তাই সেকারণে তারা ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হতে পারে না বলে কর্মচারী সংঘের গঠনতন্ত্রে এমন কথা উল্লেখ রয়েছে বলেই তাদের সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনের অনুকুলের তাদের মাসিক চাঁদা কর্তন সহ বিগত দিনে জমাকৃত অর্থ বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুকুলের ফেরৎ প্রদান করা হয়। গত ৯ ফেব্রুয়ারী এ সংগঠনটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করা হয়। আর গত ১২ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় নাম ওঠে ৭শ’৬৬ জন কর্মচারীর। এ তালিকায় এক বছর আগে বাতিল হওয়া (পদোন্নতি পাওয়া) ওই তিন কর্মকর্তার নাম থাকায় প্রায় ৮০ জন শ্রমিক-কর্মচারীরা নির্বাচন পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কাছে গণস্বাক্ষরিত লিখিত আবেদন ও আপত্তি জানান। এ দিকে গত ২২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার সিবিএ সাধারণ সম্পাদক কাজী খোরশেদ আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জুনিয়ার তিন কর্মকর্তার সদস্য পদ বাতিলের নোটিশ জারি করেন। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও খুলনা শ্রম পরিচালকের কার্যালয়ে।


এ বিষয় সিবিএ সাধারণ সম্পাদক কাজী খোরশেদ আলম জানান, বিগত প্রায় দু’ বছর আগে কর্মচারী থেকে কর্মকর্তায় পদোন্নতি হওয়ায় কর্মচারীদের এ সংগঠন হতে তাদের সদস্য বাতিল করা হয়। তবে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা ভোটারের সংখ্যা ৮ শতাধিক ছড়িয়ে যেতে পারে। যারা তফসিল ঘোষনার আগে মাসিক চাঁদা ও ডি ফরম পূরন করেননি তারা সংঘের অনুকুলে চাঁদার পরিমান জমা দিলে চুড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারবে।


এ প্রসঙ্গে সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এফ ফিরোজ বলেন, সংঘের সদস্য পদ বাতিলের কোন নোটিশ হাতে পাননি। তবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়টি তার নজরে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের দশম গ্রেড হতে ১৩ গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। ভোটার তালিকায় তারা অর্ন্তভুক্ত হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী হা’-না, ভোটে সিদ্ধান্ত হবে। এ ভোটে তিনি জিতলে সিবিএ’র আসন্ন নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহন করবেন বলে জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত