চাষিরা ও কৃষি বিভাগ খুশি

কচুয়ায় আউশ মৌসুমে সুগন্ধী ধানের বাম্পার ফলন

আলী আকবর টুটুল

আপডেট : ০৬:৩৯ পিএম, শনিবার, ৭ জুলাই ২০১৮ | ২৪৭৮

বাগেরহাটের কচুয়ায় আউশ মৌসুমে সুগন্ধী জাতের (এক ধরনের ধানের জাত) ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আউশ ধানের মৌসুমে আউশের পরিবর্তে অর্গানিক পদ্ধতিতে সুগন্ধী জাতের ধানের ভাল ফলন হওয়ায় চাষি ও কৃষি বিভাগ খুশি হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া আউশের মৌসুমে ব্যাপকভাবে এ ধানের চাষ করার চিন্তা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগও চায় এ সুগন্ধী জাতের ধান ছড়িয়ে পড়–ক সারা দেশে।


এ অঞ্চলে এক সময় এ মৌসুমে ব্যাপক আউশ ধানের চাষ হত। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আউশের ফলন কমে যাওয়ায় কৃষকরা আউশ ধান চাষ বন্ধ করে দেয়।


বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার দড়িচরমালিপাটন এলাকায় আউশ ধানের এ মৌসুমে গ্রীন বাগেরহাট অর্গানিক এ্যাগ্রো লিমিটেড সুগন্ধী জাতের ধান চাষের উদ্যোগ নেয়। কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে মার্চ মাসে ৪ বিঘা জমিতে সুগন্ধী জাতের ধান রোপন করেন। চার মাসে ৩৩ শতাংশে বিঘা প্রতি জমিতে ১৫-১৬ মন ধান উৎপাদন হয়েছে। ধানের ভাল ফলন হওয়ায় খুশি চাষিরা।


চাষি মনিরুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ‘আগে কখনও এই ধানের চাষ করতাম না কৃষি মন্ত্রীর কথা শুনে এই ধানের চাষ করেছি। এ ধানের ফলন খুবই ভাল। আর এই ফলন দেখে আমরা চিন্তা করছি, আগামীতে জমি বাড়াবো। আশ-পাশের চাষিদের উদ্ধুদ্ধ করব।

গ্রিন বাগেরহাট অর্গানিক এ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী আকবর মিন্টু বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বিভিন্ন সময় গনমাধ্যমে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্বুদ্ধ হয়ে আউশ মৌসুমে আউশের পরিবর্তে নতুন ধানের সন্ধ্যান করতে থাকি। পরে রাজশাহী থেকে সুগন্ধি জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করি। কোন রাসায়নিক সার ছাড়াই একমাত্র জৈব সারের ব্যবহারে আমাদের জমিতে যে ফলন হয়েছে তাতে আমরা খুবই খুশি। ভবিষ্যতে এই সুগন্ধি জাতের ধান চাষ বৃদ্ধি করব। এলাকার কৃষকরা জাতে এই ধানের চাষ করে তার জন্য বীজ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করব।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো.ওবায়দুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আউশ ধান আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে। ফলন কমে যাওয়ায় এই সুন্দর সুস্বাদু ধান হারিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা লাভবান হচ্ছে না। আমরা এই জিনিসটাকে মেকাপ করার উদ্যোগ নিয়েছি। হাইবেলু টপ এ্যারোমেটিক রাইচ টাকে (সুগন্ধি ধান) আউশ মৌসুমে উৎপাদন করে চাষিদের জন্য যদি লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে আমাদের ঐতিহ্যবাহি ধান আউশ মৌসুমটা আবার ফিরে আসবে। আমরা এক বছর গবেষনা চালিয়ে সফলতা পেয়েছি।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আউশ মৌসুম চাষিদের কাছে অবহেলিত বিভিন্ন কারনে, আমার মনে হয় এভাবে নতুন জাতের আবাদের প্রচার হলে চাষিদের আগ্রহ বাড়বে। সারাদেশে আউশ ফসলের ব্যাপক সাড়া জাগবে। আমরাও চেষ্টা করব চাষীদের মাধ্যমে সুগন্ধী জাতের ধান সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত