ফকিরহাটে সরকারী খালে চলছে দখলের মহাৎসব

পি কে অলোক.ফকিরহাট

আপডেট : ১২:৫৯ পিএম, বুধবার, ১১ জুলাই ২০১৮ | ৬৫৬

ফকিরহাট উপজেলার ধনপোতা-মাসকাটা সাবপ্রজেক্টের ১টি সরকারী খালে ভেড়িবাধ জালপাটা ভেশাল ও নাগানি দিয়ে পানি নিঃস্কাশনে প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টি করায় ৫টি বিলের পানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষক ও কয়েক হাজার মৎস্য চাষি পথে বসার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় দখলের মহাৎসব অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের খাজুরা ৬গেটের উপর দিয়ে প্রবাহিত প্রায় ২০কিলোমিটার লম্বা এই খালটি ভবনা ভট্টেখামার হয়ে বেতাগা ইউনিয়নের ধনপোতা মাসকাটা হয়ে পিলজংগ ইউনিয়নের ভেড়বাড়ী শ্যামবাগাত ও টাউন নওয়াপাড়ার বিভিন্ন প্রত্যান্ত গ্রামে গিয়ে প্রবেশ করেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে এই তিনটি ইউনিয়নের সকল পানি ধনপোতা-মাসকাটা সাব প্রজেক্টের এই গুরুত্বপূর্ণ খাল দিয়েই সকল পানি নিঃস্কাশন হয়ে থাকে। কিন্তু প্রবাহমান খালটির প্রায় ১০কিলোমিটার অর্থাৎ ধনপোতা মাসকাটা ভবনা ও খড়িবুনিয়া অংশে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী ব্যাক্তিরা ভেড়িবাধ জালপাটা ভেশাল ও নাগানি দিয়ে পানি নিঃস্কাশনের সম্পূর্ন পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। যে কারণে উপরে উঠা জোয়ারের পানি বিল গুলিতে প্রবেশ করতে পারছেনা। শুধু তাই নয়, বৃষ্টির পানিও উপরে বা নিচেই সরবরাহ হতে পারছে না। আর না পারার কারণে কৃষক ও মৎস্য চাষিরা পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

স্থানীয় মৎস্য চাষি বাবুল শেখ, রুহোল আমীন, ইব্রাহিম গাজী, মুজিবুর রহমান, কামরুল ইসলাম, মইন উদ্দিন ও জলিল শেখ সহ একাধিক মৎস্য চাষি অভিযোগ করে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, মাসকাটা ধনপোতা সাব প্রজেক্টের অধিকাংশ খাল ধনপোতা গ্রামের আজগার হোসেন, আব্দুল গফ্ফার শেখ, তাজামুল ইসলাম, আজিজুল ইসলাম, আকবার মল্লিক, বিল্লাল হোসেন, মোঃ মিঠু, আবদুল শেখ ও আজমল হোসেন সহ প্রায় শতাধিক ব্যাক্তিরা খাল দখল করে সেখানে জালপাটা ভেশাল ও নাগানি দিয়ে পানি নিঃস্কাশনের পথ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে জোয়ারের পানি বা বৃষ্টির পানি উপরে বা নিচেই উঠানামা করতে পারছে না। যে করনে মৎস্য চাষি ও কৃষকদের চরম ক্ষতি হচ্ছে।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেছেন, ধনপোতা ব্রীজের পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে ১০/১২জন ব্যাক্তি খালের দক্ষিন পাড়ে ভেড়িবাধ দিয়ে পানি সরবরাহে প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টি করেছেন। সরকারী খালে ভেড়িবাধ দেওয়া বেআইনী হলেও তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ দিনেও কোন আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। উল্টো দখলকারীদের কিছু বলতে গেলে তারা চাষিদের-কে নানা প্রকার হুমকি দিচ্ছে। লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ আরিদ হোসেন ও ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ বিল্লাল হোসেন মিলন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এই ৫টি বিল এলাকায় যাদের জমি আছে তারা অধিকাংশ কৃষক ও মৎস্য চাষি। তাদের জমিতে ঠিকমত পানি উঠানামা করতে না পারলে ফসল রোপন করা সহ ঘেরে মাছ চাষ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পানি উঠানামা করতে না পারলে যেমন ফসলের ক্ষতি হবে তেমনি মাছের ক্ষতি হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।

লখপুর গ্রুপ অব কোম্পানীজ লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও লখপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এবিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলেও তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তাই আগামী উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলেও তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত