গরুর স্থানে বাঁশ-ঐতিহ্য হারাচ্ছে হাট
চিতলমারীতে জমেনি কোরবানী’র পশুর বাজার
আপডেট : ০৪:২৯ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট ২০১৮ | ১৯২০
‘গরুর জায়গা দখল করেছে বাঁশ। তাই দু’শ বছরের ঐতিহ্য হারিয়ে এ গোহাটটি এখন পৌড়। এক সময় এটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম গরুর হাট ছিল। দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা গরু বেঁচা-কেনা করতে ছুটে আসতেন এখানে। কিন্তু সময়ের বিবর্তন ও নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ গোহাটটি অচল হতে বসেছে।’-বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী চিতলমারী গরু-ছাগলের হাটের এক কোণে বসে এমনটাই জানালেন এক সময়ের বিশিষ্ট কয়েকজন গরুর ব্যবসায়ী।
তারা আরও জানান, ব্রিটিশ আমল থেকে চিতলমারী গরুর হাটের একটি আলাদা নাম-ডাক ছিল। সুনামের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে বিক্রেতা, ক্রেতা ও ব্যপারীরা এ হাটে ছুটে আসতেন ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে। নিরাপত্তা ও সুনাম ছিল এ হাটের। কিন্তু কালক্রমে এ হাটের ভাটা পড়তে থাকে। আস্তে আস্তে বিলীন হতে থাকে এর সুনাম ও ছোট হতে থাকে হাটের সীমানা। দিনে দিনে দখল হয়ে গেছে হাটের অধিকাংশ জায়গা। যেটুকুও আছে সেটুকুও দখল করে আছে বাঁশের হাটের বাঁশ। তাই দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোরবানি উপলক্ষে পশু কেনা-বেঁচা শুরু হলেও এবার জমেনি ঐতিহ্যবাহী চিতলমারী গরুর হাট। । তাই দু’শ বছরের ঐতিহ্য হারিয়ে এ গোহাটটি এখন পৌড় আকার ধারণ করেছে।
চিতলমারীর এক সময়ের নামকরা গরুর ব্যবসায়ী লায়েক আলী ফকির, হোসেন মল্লিক, কেরামত শেখ, অহিদ ফরাজী ও আফজাল মাঝি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, তাদের সময় কুরবানির এক মাস আগে থেকেই বেঁচা-বিক্রি শুরু হয়ে যেত। দিন যত ঘনিয়ে আসত পশুর হাট তত জমজমাট হত।
এ ব্যাপারে বর্তমান প্রজম্মের গরু ব্যবসায়ী রেফাজুল খান, কচি সরদার, ফায়জুল শেখ, জাফর শেখ ও আবু সাঈদ ফকির বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, প্রতি বছরই তারা কুরবানির আগে বিভিন্ন জাত, রং ও সাইজের গরু দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আমদানি করে থাকেন। তবে কেন জানি এ বছর বাজার একটু মন্দা যাচ্ছে। সামনে ভাল হতে পারে বলেও তারা আশা ব্যক্ত করেছেন।
চিতলমারী হাট-বাজারের ইজারাদার মোঃ নজরুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, গরু হাটের অর্ধেকটা জুড়ে বাঁশ হাট বসেছে। এছাড়া কতিপয় ব্যাক্তি হাট দখল করে পাঁকা ইমারত নির্মান করায় গোহাটের পরিধি একেবারে ছোট হয়ে গেছে। তাই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখন আর এ হাটে আসতে চায় না।
তবে বাঁশ হাটের খাজনা আদায়কারী শেখ আনিসুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে তিনি বাঁশ হাটের ডাক নিয়েছেন। কমিটির পক্ষথেকে বাঁশ বিক্রির জন্য তাকে ওই জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।