এলজিইডি ও পাউবোর হস্তক্ষেপ কামনা

ফকিরহাটে নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে বাঁধসহ দুইটি স্লুইচগেট

পি কে অলোক,ফকিরহাট

আপডেট : ১১:৪০ পিএম, রোববার, ১৫ অক্টোবর ২০১৭ | ১২৩৪

স্লুইচগেট

ফকিরহাট উপজেলার খাজুরায় অবস্থিত গুপিয়া নদীর তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধসহ দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সুইচগেট চরম হুমকির সম্মূখীন ও ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অমাবশ্যা বা পূর্ণিমায় উজানের পানি বৃদ্ধি পেলে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধসহ গেট দুটি ভেঙ্গে ৩টি উপজেলার শতাধিক গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়ে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ফসলী জমি, শিল্পকারখানা ব্যাপক নষ্ট হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর বা পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন না করেন তাহলে বাঁধ ও স্লুইচগেট ভেঙ্গে অপুরনিয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে স্থানীয়দের ধারনা।


জানা গেছে, খুলনার বটিয়াঘাটা এবং বাগেরহাটের রামপাল ও ফকিরহাট উপজেলার শতাধিক গ্রামের পানি লখপুর ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের জাহাজঘাটা ৬গেট ও ১০গেটের উপর দিয়ে সমগ্র এলাকার পানি সরবরাহ হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গত ৩০বছর পূর্বে সেই গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থানে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে দুটি স্লুইচগেট নির্মান করেন। আর গেট দুটি নির্মান করার ফলে বটিয়াঘাটা রামপাল ও ফকিরহাট উপজেলার শতাধিক গ্রামের পানি এই স্লুইচগেট দিয়ে সরবরাহ হয়ে থাকে। কিন্তু স্লুইচগেট দুইটির অবস্থা এতই খারাপ যে, যে কোন মুহুর্তে তা ভেঙ্গে পড়ে যেতে পারে।

স্লুইচগেটের ভিতর ও বাহিরের অংশ চরম ঝুকিতে রয়েছে। ৬গেট ও ১০গেটের অধিকাংশ গেট ভাঙ্গা চুরা বা কোন কোন স্থানে বড়বড় ফাঁটল ধরেছে। এছাড়া খাজুরা জাহাজঘাটা ভায়া জাবুসা সংযোগ সড়ক, যেটি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ হিসাবে কাজ করছে। এই সংযোগ সড়কের প্রায় ১২শত ফুট রাস্তা চরম ঝুকিপূর্ণ। উপরের পানির সকল চাপ এই সংযোগ সড়কটিকে ভর করতে হয়।

পার্শ্ববর্তী গুপিয়া নদীর পানির চাপে সড়কটি প্রায় বিলীত হওয়ায় পথে। আর এই সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে বিলীন হলে জাবুসা ও খাজুরা বিলের উৎপাদিত সকল ফসল শিল্প,কলকারখানা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সবই পানিতে তলিয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, পানির চাপে খুলনা-মংলা মহাসড়ক ভেঙ্গে যাওয়ারও আশংকা করা হচ্ছে।

স্থানীয় এলাকাবাসিরা জানান, ২০ল টাকা ব্যয়ে ওই সড়কের পার্শ্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁশ আর গাছের খুটি দিয়ে যেনতেন ভাবে পাইলিং করে। যা নির্মানের ৬মাসের মধে ভেঙ্গে একাকার হয়ে যায়। যা নামমাত্র কোন পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই পাইলিং করে পুরা টাকাই পানিতে গেছে।

সঠিক পরিকল্পনা তৈরী না করে তা বাস্তবায়ন করা এবং সঠিক তদারকি না থাকার কারনে সরকারের ২০লক্ষ টাকা পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আহম্মদ আলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, গত ১বছর পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ২০লক্ষ টাকা ব্যয়ে নাম মাত্র কিছু পেট বাঁশ আর গাছের খুটি দিয়ে যেনতেন ভাবে দায়সারা গোছে কথিত পাইলিং দেয়। যেটি নির্মান কাজ শেষ না হতেই উজানের পানির চাপে তা আবারও ভেঙ্গে একই অবস্থার সৃষ্ঠি হয়েছে।

লখপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এসএম আবুল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ৬গেট ও ১০গেট ও খাজুরা জাহাজঘাটা সংযোগ সড়কটি এখন পুরোপুরী ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন মুহুর্তে স্লুইচগেট -২টি ও রাস্তাটি গুপিয়া নদীর পানির চাপে ভেঙ্গে যেতে পারে। আর এটি ভেঙ্গে গেলে খুলনা-মংলা মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাড়াবে। শুধু তাই নয়, সড়কটি ভেঙ্গে বিলীন হলে জাবুসা ও খাজুরা বিলের উৎপাদিত সকল ফসল ১০টি শিল্প কলকারখানা অর্ধশতাধিক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সবই পানিতে তলিয়ে যাবে বলেও তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।

এব্যাপারে উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রিয়াংকা পাল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে শুনেছি। এবিষয়টি অচিরেই পরিদর্শন করে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবো ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্রুত পদপে গ্রহনের জন্য সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসি ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত