প্রতিমার সংখ্যা ৭০১

উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ মন্দিরে চলছে রং তুলির উৎসব

জিএম মিজানুর রহমান

আপডেট : ০৩:০১ পিএম, রোববার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ৩০৩৫

উপমহাদেশের সর্ব-বৃহৎ মন্দির হিসাবে খ্যাতি অর্জনকারী বাগেরহাটের হাকিমপুরের শিকদার বাড়ীর দূর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষের পথে, চলছে রং তুলি আর নানা রংয়ের সাজ সজ্জার কাজ। সারা দেশের সাড়া জাগানো এই মন্দিরে এবার প্রতিমা তৈরী চলছে ৭০১ টি। স্বারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে অন্যান্য বছরের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে ভিন্ন রুপে। প্রতিবছরের ন্যায় এই মন্দিরে প্রতিমা আর সাজ সজ্জার এটি হবে উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সর্ব শ্রেষ্ঠ।


জানা গেছে, সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর আর কলি যুগের বিভিন্ন অবতারের কাহিনী নিয়ে এবারও মন্দিরকে সুসজ্জিত করা হচ্ছে। গত বৈশাখ থেকে খুলনার কয়রা উপজেলার হাতিয়াডাঙ্গা গ্রামের বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় এর নেতৃত্বে ১৫জন ভাস্কর দিন রাত অকান্ত পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। অধিকাংশ প্রতিমা রংয়ের কাজ শেষ হলেও মুল প্রতিমা অর্থাৎ মা দুর্গার রংয়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি। চোঁখ ধাধাঁনো সব প্রতিমা আর রং বে-রঙের সুসজ্জিত করে মন্দিরকে যেন মুখরিত করে তোলা হচ্ছে। প্রতিমা তৈরীর কাজে নিয়োজিত ভাস্কর বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ রামায়ণ ও মহাভারতের চারযুগের দেবদেবীর নানা কাহিনী অবলম্বনে হিন্দু ধর্মের হাজার বছরের পুরাতন পৌরাণিক কাহিনীকে প্রাধান্য দিয়ে তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মূর্তি দিয়ে। কলিকাতার সীতারাম এর গীতা প্রেস এর বই হতে সংগৃহীত সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর আর কলি যুগের বিভিন্ন অবতারের লীলা কাহিনী নিয়ে এবারও প্রতিমা গুলি তৈরী করা হয়েছে। যা ভক্তদের মনকে আরো পুলকিত এবং আকৃষ্ঠ করে তুলবে। তিনি বলেন, এখানে রয়েছে বিশ্বামিত্রের সঙ্গে শ্রীরাম-লন, তাড়কা-সংহার, বিশ্বামিত্রের যজ্ঞ-রা, অহলা উদ্ধার, পূষ্পে বটিকাতে শ্রীরাম-লন, রঙ্গভূমিতে দুই রাজ কুমার, স্বয়ংবর সভায় লণের রোধ, ধনুক ভঙ্গ, চার কুমারের বিবাহ, পিতার বাক্য পালন, সীতার উপদেশ-বন গমন, শ্রীকৃষ্ণের ক্রুক্ষেত্রের যুদ্ধ কাহিনী, মাঝির ভাগ্য ও চিত্রকুটের শোভা সহ নানান কাহিনী নিয়ে বিশাল মন্দিরটিকে সুসজ্জিত করা হচ্ছে।


সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, মনু-শতরুপাকে বর দান, দেবতাদের প্রার্থনা, শ্রীরামাবতার,সচ্চিদানন্দের দ্যোতিষী, দশরথের ভাগ্য, ধনু বিদ্যার অভ্যাস, সখ্যদের সঙ্গে শিকার সহ সতেরোটি বাল্য লীলার কাহিনী রুপায়িত করা হয়েছে। মন্দির কমিটির কয়েকজন সদস্য বলেন, মন্দিরের ভিতরে বিভিন্ন দেব দেবীর ৭০০ টি প্রতিমা তৈরী করা হলেও বাইরে অর্থাৎ পুকুর পাড়ে ৪০ হাত লম্বা বিশাল আকৃতির লক্ষী নারায়নের প্রতিমা তৈরী করা হবে। যে গুলি শুধু মাত্র রং সোলা আর লাইটিং দিয়েই তৈরী করা হচ্ছে। এর সামনে থাকছে আকর্ষনীয় ঝর্ণা ধারা।


শিকদার বাড়ী পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি ও প্রধান পৃষ্টপোশক ডাঃ দুলাল কৃষ্ণ শিকদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ২০১০ সাল হতে তারা এই মন্দিরে স্বারদীয় দুর্গা পূজা শুরু করেন। তার পর হতে ধারাবাহিক ভাবে এই ৮ম বার অন্যান্য বছরের তুলনায় জাকজমক পূর্ণ ভাবে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও দেশ-বিশের ধর্মানুরাগীদের উপচে পড়া ভীড় পড়বে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ।

এ প্রসংগে এ পূজার পৃষ্ঠপোষক শিল্পপতি লিটন শিকদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ধর্মানুরাগীদের সন্তুষ্টির জন্য আমি এ ধরণের উদ্যোগ নিয়েছি। ধর্মের প্রতি মানুষ বেশি আকৃষ্ট হলে আমার এ প্রচেষ্টা স্বার্থক হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত