১০ টাকার চালে প্রতারিত হতদরিদ্র ক্রেতা

শরণখোলায় ৩০ কেজির বস্তায় ২৪ কেজি

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৫:৩২ পিএম, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১৩০০

শরণখোলায় ১০ টাকা কেজির চাল কিনে প্রতারিত হচ্ছেন হতদরিদ্র কার্ডধারী ক্রেতারা। ৩০ কেজির ইনটেক বস্তায় ৫-৬ কেজি করে কম থাকায় শুক্রবার দুপুরে কয়েকটি বস্তা জব্দ করে পুলিশ। তবে, ওজনে কম হওয়া নিয়ে ডিলার ও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা একে অপরকে দায়ি করছেন। এঘটনার পর অনেক ডিলার গুদাম থেকে চাল ছাড়াতে হিমসিম খাচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট চাল সরবরাহকারী ঠিকাদার যোগসাজসে মিল থেকেই বস্তায় কম দিয়ে শেলাই করছেন। বস্তার গায়ে ৩০ কেজি লেখা থাকায় অনেকেই তা মাপার প্রয়োজন করছেন না। ফলে ডিলার ও ক্রেতা উভয়ই প্রতারিত হচ্ছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ইনটেক বস্তায় চাল সরবরাহ করায় তারা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। এতে প্রতি বস্তায় ৩কেজি থেকে ৬ কেজি পর্যন্ত কম হচ্ছে।


রায়েন্দা বাজারের ডিলার শহিদুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ৪৭২ কার্ডের মধ্যে থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে ২৬০বস্তা চাল ছাড়িয়ে বিতরণ শুরু করি। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা না মেপে প্রতিটি বস্তা ৩০ কেজি হিসেবে আমাকে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু চাল বিতরণের সময় কোনো কোনো বস্তায় ৩ থেকে ৬ কেজি পর্যন্ত কম পাওয়ায় সুবিধাভোগীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ অবস্থায় আমাকে এখন চাল কিনে ৩০ কেজি করে কার্ডধারীদের বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে।


চাল বিতরণের সময় তদারককারী কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমার সামনেই গোডাউন থেকে চাল এনে বিতরণ কালে তাতে কম পাওয়া যায়।

অপরদিকে, উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) দেবদূত রায় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, কার্ডের সংখ্যা অনুয়ায়ী ৩০ কেজির বস্তা হিসেবে ডিলারদের বুঝিয়ে দেই। পরবর্তীতে কম হলে আমার তাতে কোনো দায়দায়িত্ব নেই।


এব্যাপারে মো. ডালিম তালুকদার, সরোয়ার তালুকদারসহ কয়েকজন ডিলারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খাদ্যগুদাম থেকে চাল কম পাওয়ার কারণে অনেকেই চাল ছাড়াতে এবং বিতরণে হিমসিম খাচ্ছে।


শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলিপ কুমার সরকার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ৩০ কেজির ইনটেক বস্তায় ২৬ কেজি করে থাকায় কয়েকটি বস্তা জব্দ করা হয়েছে।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাকে আগেই বলেছি চাল বিতরণে যেনো কোনো ধরণের ত্রুটি না হয়। এর পরও অভিযোগ ওঠায় ওজনে কম থাকা কয়েকটি বস্তা জব্দ করা হয়েছে। এব্যাপারে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত