বাগেরহাটে শিক্ষক পদায়নে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ

আলী আকবর টুটুল

আপডেট : ০৬:৩৬ পিএম, সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১৩৭৯

বাগেরহাটের প্রধান শিক্ষকদের পদায়নে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে অর্থ না পেয়ে নিয়ম বহির্ভুতভাবে পদায়ন করেছে বলে অভিযোগ ঐ শিক্ষকদের। বিষয়টি নিয়ে গোটা শিক্ষাঙ্গনে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া উচ্চাদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্তেও কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজের পছন্দমত শিক্ষকদের পদায়ন করেছেন এ কর্মকর্তা। তবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার সমাদ্দার পদায়নের ক্ষেত্রে কিছুটা ত্রুটির কথা স্বীকার করলেও অর্থ বানিজ্যের কথা অস্বীকার করেছেন।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৬৬ নং বলভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিক সেলিানা খানম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত। সম্প্রতি আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদন্নোতি পাই। পরে আমাকে বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ২৭৯ ঝান্টিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার সমাদ্দার। পদায়নের পরে আমি অশোক কুমার সমাদ্দার স্যারের কাছে যাই, অনেক অনুনয় বিনয় করি। নিজের অসুস্থতার কথা বলে, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখাই। তাতেও মন গলেনি সারের। তিনি আমাকে বলেন যেখানে দিয়েছি সেখানে চাকুরী করবেন। না পারলে চাকুরী ছেড়ে দিন। শুধু আমি নই এরকম অনেক শিক্ষককে টাকা না পেয়ে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেমত পদায়ন করেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

বি উমাজুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেখ আকবর আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদন্নোতি পাই। পদায়নের জন্য বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে পদায়ন করা হচ্ছে। এটা জানতে পেরে আমিও পছন্দমত জায়গায় পদায়ন পেতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যাই। আমাকে ৩টা বিদ্যালয়ের নাম দিতে বলে। পরে জানতে পারি টাকা না দেয়ায়। ঐ ৩টি বিদ্যালয়ের কোনটিতে আমাকে পদায়ন না করে, আমার বাড়ি থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অন্য ইউনিয়নের চরকগাছিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন করেন। পরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অফিস সহকারী নিরঞ্জন বাবুর কাছে ১০ হাজার টাকা নিয়ে গেলে, কিছুক্ষন পরে জানায় ঐ টাকায় পদায়ন হবে না।

আকবর আলী আরও বলেন, রেনু বেগম, ফারজানা রহমানসহ উপজেলার আরও অনেক শিক্ষককে এভাবে পদায়ন করে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার সমাদ্দারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গন শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষামন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তোভোগী শিক্ষকরা।

সোমবার দুপুরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার সমাদ্দারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, পদায়নের ক্ষেত্রে কিছুটা ত্রুটি হয়েছিল সেগুলো ঠিক করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ অনেকেই করতে পারেন। তবে অর্থ বানিজ্যের বিষয়টি শ্রেফ কাল্পনিক। নিয়মের মধ্যে থেকে পদায়ন দেয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত