খানজাহান আলী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের বিরুদ্ধে

বাগেরহাটে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ

এস এম সামছুর রহমান

আপডেট : ০৬:০৭ পিএম, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭ | ১৯৮৫

খানজাহান আলী পলেটেকনিক ইন্সটিটিউট

বাগেরহাট শহরের ভিআইপি মোড় এলাকায় অবস্থিত খানজাহান আলী পলেটেকনিক ইন্সটিটিউটের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার পেতে প্রতারণার শিকার ওই কলেজের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সাইফুল ইসলামের অভিযোগ থেকে জানা যায়, তিনি ২০১২ সালে ওই প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রিক্যাল বিভাগে ভর্তি হন। প্রথম সেমিস্টার হতে সপ্তম সেমিস্টার পর্যন্ত যথারিতি কলেজের প্রাপ্তি টাকা সময় মত পরিশোধ করে তিনি নিয়মিত পরিক্ষায় অংশগ্রহন করেন। তিনি ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম সেমিস্টারে কয়েকটি বিষয়ে অকৃতকার্য হন। কলেজ থেকে সাইফুল ইসলামকে ফোন করে জানানো হয় ২১ অক্টোবর ৭ম সেমিস্টারের রেজিষ্ট্রেশন ফর্মফিলাপের শেষ তারিখ। তিনি ওই দিন কলেজে গেলে তাকে জানানো হয় তার কাছে ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম সেমিস্টারের বকেয়া ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। এতে তিনি হতবাক হন।

তিনি সকল সেমিস্টারের কলেজের পাওনার টাকা যথারিতি পরিশোধ করে প্রবেশপত্র গ্রহণ করে প্রতি সেমিস্টারের পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। তাছাড়া কলেজের নিয়ম অনুসারে কাউকেই সেমিস্টার ফি বাকি রেখে পরিক্ষার প্রবেশপত্র দেয়া হয় না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালে স্কিলস প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে ১২ হাজার ৫শ টাকা খরচ করে তিনি গ্রীট সোলার সিস্টেম তৈরি করে প্রদর্শন করেছিলেন। বিচারকরা তাকে দ্বিতীয় স্থান অধিকারের সনদ পত্র প্রদান করেছিলেন। কলেজের তৎকালিন অধ্যক্ষ তাকে উক্ত প্রজেক্টের খরচের টাকা কলেজ থেকে দেয়ার কথা বললেও তাকে কোন টাকা দেয়া হয়নি।

 খানজাহান আলী পলেটেকনিক ইন্সটিটিউট


সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ৭ম সেমিস্টারে ৬৮৬৩ কোডের একটি বিষয়ে তাকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে, এটি তার ট্রেডের কোন বিষয় না। এই বিষয়টি ঠিক করে দেয়ার কথা বলে একাধিকবার তার কাছ থেকে ৫ হাজার করে টাকা নেয়া হলেও ঠিক না করে ওই বিষয়ে তাকে অকৃতকার্য দেখানো হয়। তাছাড়া এই বিষয়টির জন্য তার এক বছর লস হয়েছে।


এবিষয়ে জানতে বাগেরহাট খানজাহান আলী পলেটেকনিক ইন্সটিটিউটে গিয়ে সেখানে ওই কলেজের ইনচার্জ পরিচয় দেয়া সমরুল আলম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, তিনি অল্প কয়েকদিন এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পেয়েছেন। প্রিন্সিপ্যাল স্যারের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তবে কে এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুলনা খানজাহান আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এই প্রতিষ্ঠানেরও অধ্যক্ষ।


বাগেরহাট খানজাহান আলী পলেটেকনিক ইন্সটিটিউট সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, খুলনা খানজাহান আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের স্ত্রীর নামে এই খানজাহান আলী পলেটেকনিক ইন্সটিটিউটের অনুমোদন। আবুল কালাম আজাদের নিকট আত্মিয় মোঃ ফারুক আহম্মেদ লিটনকে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব দেন। কিন্ত মোঃ ফারুক আহম্মেদ লিটন বিভিন্ন ভাবে অনিয়ম করে শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ করেন। পরে তাকে ওইপদ থেকে অপসারণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবী তার অনিয়মের দায় শিক্ষার্থীদের উপর চাপানো হয়েছে।


এবিষয়ে জানতে মোঃ ফারুক আহম্মেদ লিটনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন রিসিভ না করে বার বার কেটে দেন।

তবে বাগেরহাট খানজাহান আলী পলেটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রিন্সিপ্যাল বলে পরিচিত খুলনা খানজাহান আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে সম্পাদকের চিঠি নিয়ে তার সাথে দেখা করতে বলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত