সুন্দরবনের বাঘ লোকালয়ে, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক

শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের সুন্দরবন সংলগ্ন পানিরঘাট ও সোনতলা গ্রামে বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ বুধবার রাতে বগী-শরণখোলা ভারানী খাল পার হয়ে বন থেকে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। রাতে গ্রামবাসী বাঘের গর্জন শুনেছেন। দুই গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাঘের পায়ের ছাপ রয়েছে।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বনবিভাগ, ওয়াইল্ড টিম, টাইগার টিম (ভিটিআরটি), কমিউনিটি পেট্রোলিং (সিপিজি) গ্রুপের সদস্য ও শত শত গ্রামবাসী অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে বাঘ তল্লাশিতে নেমে পড়েন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৩টা) বাঘের কোনো সন্ধ্যান মেলেনি। লোকালয়ে বনবিভাগের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। হ্যান্ডমাইক ও মসজিদের মাইক থেকে এলাকাবসাীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

বাঘ অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, হয়তো খাল সাতরে লোকালয়ে আসা বাঘটি রাতেই আবার বনে ফিরে গেছে। তবুও এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। গ্রামবাসীকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

ওয়াইল্ড টিমের শরণখোলার মাঠ কর্মকর্তা মো. আলম হাওলাদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সকালে গ্রামবাসীর মাধ্যমে বাঘ আসার পেয়ে ভিটিআরটি ও সিপিজি গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এসময় বনবিভাগকে খবর দেওয়া হলে শরণখোলার রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বনবিভাগের একটি দলও সেখানে আসেন। পরে গ্রাবসীদের নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু বাঘের কোনো সন্ধান না পেলেও বাঘের পায়ের ছাপ সবখানেই দেখা গেছে।

সোনতলা গ্রামের আ. সালাম মোল্লা, আউয়াল মাতুব্বরসহ অনেকই বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, রাত ১টা দেড়টার দিকে বাঘের গর্জন শুনতে পেয়েছেন তারা। সকালে তারা ওয়াইল্ড টিমের সদস্যদের খবর জানান। বর্তমানে গ্রামের মানুষের মধ্যে বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাস্তাঘাটেও লোকজন সতর্কভাবে চলাফেরা করছে।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. শামসুল হক বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সকাল পৌনে সাতটার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাঘ আসার খবর পাই। পরে রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তবে গ্রামের বনজঙ্গল ও পরিত্যাক্ত ঘরবাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নিয়ে রাতে বাঘটি বিচরণ করেছে। সবখানেই পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তবে রাতেই বাঘটি বনে ফিরে গেছে।

স্টেশন কর্মকর্তা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, রাতে আবার বাঘটি লোকালয়ে ফিরতে পারে। সেজন্য এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। রাতে বগী স্টেশন, তেড়াবেকা টহল ফাঁড়ি ও শরণখোলা স্টেশনের বনরক্ষীরা নদীতে টহলে থাকবে। এছাড়া, ওয়াইল্ড টিম, ভিটিআরটি ও সিপিজি সদস্যরা ও বনবিভাগের সাথে টহলে থাকবে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।