সৃষ্টি হয়েছে একাধিক পানি ব্যবসায়ী চক্র

চিতলমারীতে সুপেয় পানির তীব্র সংকট

এস এস সাগর, চিতলমারী

আপডেট : ০৭:৩৭ পিএম, রোববার, ২৬ মে ২০১৯ | ৩৩৫৫

চিতলমারীতে বিশুদ্ধ পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। শুধু পানীয় জল নয়, এখানে পরিস্কার পানির অভাবে রান্নাসহ সকল কাজকর্মে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। প্রচন্ড এই তাপদাহে প্রাণীকুলের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ফলে অনেকেই দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই দূষিত পানি ব্যবহারে এখানে ডাইরিয়া ও আমাশয়সহ নানা পানিবাহী রোগ দেখা দিয়েছে। এ উপজেলায় পানির সংকট দূর করার জন্য বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারিভাবে স্থাপিত পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প ও পুকুর ফিল্টারসহ (পিএসএফ) পানি পরিবেশনের স্থাপনা গুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই বলে জনসাধারণ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে একাধিক পানি ব্যবসায়ী চক্র। তাদের পানিও ততটা নিরাপদ নয়।

সরেজমিনে জানা গেছে, এ উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট নিত্যদিনের সমস্যা। বিশুদ্ধ পানীয় জল ও ব্যবহার্য পানির তীব্র সংকটে এখন মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা চলে আসলেও এটি সমাধানের জন্য কোনো পদপে নেয়া হয়নি। বিশুদ্ধ পানির অভাবে এখানে লোকজন নানা রোগ-ব্যাধিতে ভুগছে। এছাড়া এলাকার বেশিরভাগ নদী-খাল ও পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় কোথাও গোসল ও খাবারের পানি মিলছে না।

চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পরিতোষ চক্রবর্তী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য চরবানিয়ারী ও চিতলমারী ইউনিয়নে হাই-সাওয়া নামে দুটি পাম্প রয়েছে। তবে পাম্প ২ টি এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় জনসাধারন ও বিভিন্ন এনজিওর উদ্যোগে পন্ডস স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ), রেইন ওয়াটার হার্বেষ্টিং (আরডবিউএইচ) বৃষ্টির পানি সংরণের জন্য সহায়তা করলেও তার পরিমান সীমিত। যে সব পুকুরে পিএসএফ স্থাপন করা হয়েছে, তার অধিকাংশ পুকুরে বর্তমানে পানি কম থাকায় এর সুফল পাচ্ছে না সাধারন জনগন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাটির প্রায় ৮০০ ফুট গভীর ভেদ করে বালুর যে স্তর পাওয়া যাচ্ছে তাতে লবণাক্ততা বেশি। মাটির নিচে সুপেয় পানির আধার পেতে কষ্ট হয়। নলকূপের পানিতে মাত্রারিক্ত আর্সেনিক। তাই উপজেলা পরিষদ চত্বরের পুকুরসহ অন্যান্য পুকুরের পানি পান করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। শুকনোর মৌসুম হওয়ায় এসব পুকুরের পানি শুকিয়ে অনেকটা তলদেশে চলে গেছে। এ অবস্থায় এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হয়েছে একাধিক পানি ব্যবসায়ী চক্র। তাদের পানিও ততটা নিরাপদ নয়। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান করছে এলাকাবাসী। এতে তারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আজমল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মাটির নিচের শক্তস্তর ভেদ করে সুপেয় পানি উঠানোর জন্য আধুনিক প্রযুক্তির নলকূপ স্থাপন করা দরকার। অথবা মধুমতী নদী থেকে ভূউপরিস্থ পানি কিংবা ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে মিনি টেস্ট প্লান্ট স্থাপন করে সুপেয় পানি নিশ্চিত করা যেতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত