আলোক ফাঁদ পদ্ধতিতে

মোরেলগঞ্জে পোকা চিহ্নিত ও নিধণে সফলতা

মোরেলগঞ্জ সংবাদদাতা

আপডেট : ০৪:৩১ পিএম, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৭ | ১৭৬৫

কীটনাশক ছাড়াই রাতের বেলায় চলতি রোপা ক্ষেতের পাশে কিংবা আইলে উপরের আলোক ফাঁদে পড়ে হাজার হাজার পোকা নিধণ হচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা কীটনাশক ব্যবহার না করে বিনা খরচে ক্ষতিকারক পোকা চিহ্নিত ও নিধণ করতে পেরে তারা বেজায় খুশি ।


উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলা, পৌর সভা ও ১৬ ইউনিয়নে ২৬ হাজার ৮ শ’ হেক্টর জমিতে আমন চাষের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে স্থানীয় আমন ও ৩ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে উফশী ধানের জমি। এ বছর অতি বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ফসলি জমি তলিয়ে গেলেও পানির স্থায়ীত্ব না থাকার কারনে ফসলের কোন ক্ষতি হয়নি। চলতি বছরে কিছু কিছু জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা ছাড়া তেমন কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়নি। একদিকে রাতের বেলায় আলোক ফাঁদ পেতে ক্ষতিকারক পোকা চিহ্নিতকরণ ও নিধন করা হচ্ছে। অপরদিকে দিনের বেলায় ডেথ পাচিং ও লাইফ পাচিং পদ্ধতিতে কৃষকরা পোকা নিধণ প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে। এতে করে ক্ষতিকারক পোকা নিধণে কীটনাশক প্রয়োগ করা না লাগায় কৃষকরা খুব খুশি।

কৃষক ইসমাইল হোসেন, রফিকুল ইসলাম,রুস্তম আলী, দেলোয়ার হোসেন ফরাজী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, রাতে আলোক ফাঁদ ও দিনে পাচিং পদ্ধতিতে ধান ক্ষেতের পোকা নিধণ করে তারা অনেক লাভবান হয়েছে। কারন তাদের কোন কীটনাশক ক্রয় ও ব্যবহার করতে হচ্ছে না।

মোরেলগঞ্জ উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জাকির হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সন্ধ্যার পর ধানে ক্ষতিকারক পোকারা আলো দেখে আনন্দে আলোক ফাঁদে ধরা দেয়। আলোক ফাঁদে কোন উপকারী পোকা খুব কম আসে। ব্যাটারী লাইট, কোরেসিন লাইট, বৈদ্যুতিক বাতি কিংবা মশাল দিয়ে আলোক ফাঁদ তৈরী করা হয়। আর আলোক ফাঁদে পাতা গামলায় সাবান কিংবা শেম্পু মিশ্রিত পানি থাকে। উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মো. মেজবাহ আহমেদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, পাচিং পদ্ধতিতে ক্ষেতে পোতা ডালে পাখি বসে ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে ফেলে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপম রায় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, চলতি বছরে এ উপজেলার ৪৯টি ব্লকে ৪৯৬ টি আলোক ফাঁদ তৈরী করা হয়েছে। তাছাড়া ১৬ ইউনিয়নের প্রতিটি ব্লকে পাচিং পদ্ধতিতে জমিতে ডাল পোতা হয়। এ দুই পদ্ধতিতে এলাকার কৃষকরা খুবই লাভবান হচ্ছে। সব মিলিয়ে চলতি বছরে প্রকৃতি ও পরিবেশ ঠিকঠাক থাকলে আশানুরুপ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত