স্কুলগুলোতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে

বাগেরহাটে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা

শেখ আহসানুল করিম

আপডেট : ১২:২২ এএম, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭ | ১৩৯৭

বাগেরহাট জেলা সদরের সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়সহ অন্যান্য স্কুলগুলো এবছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্টেশন ফি ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বোর্ডফি হিসেবে ১৬শ টাকার বেশি না নেওয়ার বিধান থাকলেও বাগেরহাটের এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সহযোগিতায় কোচিং-ফি, টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছেন। প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় ফেলসহ নানা ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারনে ছাত্র ও অভিভাবকবৃন্দ এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজী হচ্ছে না।


অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেছেন, যশোর বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের জন্য ১৬শ টাকা এবং কর্মাস বিভাগের ছাত্রদের থেকে ১৫ টাকা নেয়ার পাশাপাশি কোচিং বাবদ অতিরিক্ত আড়াই হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ন অযোক্তিক। নভেম্বর থেকে জানুয়ারী এই তিন মাসের কোচিং বাবদ ছাত্রদের কাছ থেকে ওই টাকা নিচ্ছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো। অনেক অভিভাবক জানান, স্কুলের প্রত্যেক ছাত্রই ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ে নিয়ম অনুযায়ী বেতনসহ অন্যান্য অর্থ পরিশোধ করছে। তাহলে শিক্ষকদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে ছাত্রদের ভাল রেজাল্টের জন্য পড়াশুনা করানোর। কিন্ত তারা নভেম্বর থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত কোচিংয়ের জন্য আড়াই হাজার টাকা নিচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধানগন যে ছাত্ররা টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে তাদেরকেও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ সৃস্টি করে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহন করছে। অভিযোগ রয়েছে, যে ছাত্র একটি বিষয়ে ফেল করেছে তার কাছ থেকে একহাজার টাকা হিসেবে সর্বোচ্চ তিনটি বিষয়ে ফেলকরা শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে তিন হাজার টাকা। এমনকি ঐচ্ছিক বিষয়ে ফেল করা ছাত্রদেও কাছ থেকেও এভাবে অর্থ গ্রহন করছে এসব বিদ্যালয় প্রধান। বাগেরহাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জাহানাবাদ বালিকা বিদ্যালয়, সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমলাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দশানী যদুনাথ কলেজিয়েট স্কুল, নাগেরবাজার রহমানীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দশানী বালিকা বিদ্যালয়সহ খোদ শহরের স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে এবছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্টেশন ফি ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এবিষয়ে বাগেরহাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন বোর্ড নির্ধারীত অর্থ ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার কোন সুযোগ সরকারী বিদ্যালয়ে নেই। তবে তিনি প্রত্যেক ছাত্রের কাছ থেকে তিন মাসের কোচিং হিসেবে আড়াই হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন। এবছর তার বিদ্যালয় থেকে কোন ছাত্রই টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়নি। এবছর বানিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৭৮ জন ছাত্র এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে দাবী করে বলেন কোন অভিভাবক বা ছাত্র অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার বিষয়ে কোন অভিযোগ করেননি।

এবিষয় জানতে বাগেরহাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মামুন উল হাসান বলেন সংবাদকর্মীদের কাছ থেকে এই প্রথম এধরনের বিষয়টি তিনি জানলেন। কেউ তাদের কাছে এমন কোন অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।


এবিষয়ে বাগেরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন সরকারী বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তার সীমাবব্ধতা রয়েছে। তারপরও বাগেরহাট শহরের যে সকল বিদ্যালয় অতিরিক্ত অর্থ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে গ্রহন করছে সে বিষয়ে সুনিদৃষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক বিধিমত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত