১লা নভেম্বর থেকে শুঁটকি মৌসুম শুরু

দূর্যোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ নানা সমস্যা নিয়ে দুর্গম দুবলার চরে ছুঁঠছে জেলেরা

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০২:৫৮ পিএম, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০১৯ | ৭০৯

দূর্যোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ নানা সমস্যা নিয়ে শুঁটকি তৈরীর জন্য হাজার হাজার জেলে ছুঁঠছে বঙ্গোপসাগর উপকূলের দুর্গম দুবলার চরে। ১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন পাঁচটি চরে শুরু হচ্ছে এই শুঁটকি তৈরীর প্রকৃয়া। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ২০ হাজার জেলে, শ্রমিক, বহদ্দার ও ব্যবসায়ী দুবলা জেলেপল্লী টহল ফাঁড়িতে পাস গ্রহণের জন্য পৌঁছেচে। পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কার্যালয় থেকে শর্তসাপেক্ষে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত অনুমতি দিয়েছে। পাস গ্রহনের পর থেকেই পরোদমে শুরু হবে শুঁটকি তৈরীর প্রকৃয়া।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছরে শুঁটকি আহরণের জন্য ১০৪০টি জেলে ঘর, ৫৩ টি ডিপো ঘর ও ৭৯ টি অস্থায়ী দোকান ঘর তৈরীর অনুমোতি দেওয়া হয়েছে। বনবিভাগের নির্ধারিত দুবলা জেলে পল্লী টহল ফাঁড়ির আওতাধীন অফিস কিল্লা/মাঝের কিল্লা, মেহেরআলীর চর, আলোরকোল, নারিকেল বাড়িয়া ও শেলারচরসহ পাঁচটি শুরু হবে শুঁটকি তৈরীর কাজ। আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত পাঁচ মাস ধরে চলবে এ কার্যক্রম।

দুবলার চর ফিসারমেন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহম্মেদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, প্রতি বছর খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, সাতক্ষিরা ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০হাজরেরও বেশি জেলে, শ্রমিক ও মহাজন পাঁচ মাস ধরে দুর্গম চরে অবস্থান করে। শুঁটকি তৈরীর এ মৌসুমে ঝড়-জলোচ্ছাস ও শুরু হয়। এসব চরে পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র নেই। ২০ হাজার মানুষের জন্য মাত্র পাঁচটি সাইকোন শেল্টার রয়েছে। তাতে ঠাসাঠাসি করে খুব বেশি হলে চার থেকে পাঁচ হাজার লোক আশ্রয় নিতে পারে। এসব শেল্টার সিডরে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা সংস্কার করা হয়নি।

ওই মৎস্যজীবি নেতা আরো জানান, সুন্দরবন থেকে রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস্য হচ্ছে এই দুবলার শুঁটকি পল্লী। অথচ এখানে জেলেদের জন্য কোনো চিকিৎসা কেন্দ্র নেই। খাবার পানির চরম সংকট রয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই এখানে। এসব সমস্যা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।


পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, শুঁটকি পল্লীতে অবস্থানকালে জেলেদের ঘর তৈরী ও অন্যান্য কাজে সুন্দরবনের কাঠ, গোলপাতাসহ কোনো সম্পদ ব্যবহার করতে পারবেনা। ২৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের ঘর তৈরীর করতে পারবে। শুটকি প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত সবকিছুই তাদের নিজ নিজ এলাকা থেকে নিয়ে আসতে হবে।

বন কর্মকর্তা আরো জানান, শুধুমাত্র গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ আহরণ করে সুন্দরবনের উল্লেখিত পাঁচটি চর ব্যবহারের অনুমোতি দেওয়া হয়েছে জেলে ও শুঁটকি ব্যবসায়ী বহদ্দারদের। বনবিভাগের এসব শর্ত কেউ ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে বনআইনে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। গত বছর শুটকি খাত থেকে দুই কোটি ৭১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। এ বছর আরো বেশী লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত