সরকারের বিনামূল্যে বই বিতরণের সুফল ভেস্তে দিচ্ছে কতিপয় অসাধু শিক্ষক

শেখ আনিছুর রহমান চুলকাঠি

আপডেট : ০৮:১৫ পিএম, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০ | ৫৭০

বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার উন্নত জাতি গঠনে শিক্ষাখাতে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহনও বাস্তবায়ন করে চলেছেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার ইতি মধ্যে বাস্তবায়ন করেছেন অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ যার মধ্য রয়েছে কয়েক ধাপে হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারী করন,এমপিও ভুক্ত করন,দশম শ্রেনী পযর্ন্ত বছরের পহেলা দিন এক যোগে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া,হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের আধুনিক চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মান ,শিক্ষকদের বেতন ভাতা বাড়ানো,স্নাতক শ্রেনী পযর্ন্ত শিক্ষার্থীদের উপ বৃর্ত্তির প্রদান সহ নানা মুখী কর্মকান্ড।

কয়েক বছর খানেক আগে বছরের শুরুতে সন্তানের জন্য নতুন বই কেনার চিন্তায় দরিদ্র অভিভাবকরা দিশেহারা ছিল সেই দুঃখ অনুধাবন করে বর্তমান সরকার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেনী পযর্ন্ত বছরের পহেলা দিন এক যোগে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া শুরু করেছেন ।

কিন্তু যেখানে নতুন বইয়ের মৌ মৌ গন্ধে অভিভাবক দের সেই আনন্দআত্ত হারা হবার কথা ছিল ঠিক তখনই বাগেরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় দূর্নীতি গ্রস্থ শিক্ষক বিভিন্ন নোট বা গাইড কোম্পানির মার্কেটিং অফিসারদের আর্কষনীয় আর্থিক প্রলোভনে আকৃষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন গ্যামার,নোট বা গাইড এর বোঝা যার ফলে সৃষ্ট দূর্যোগের কালো মেঘে ঢেকে গেছে দরিদ্র শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আনন্দ ঘন মুখ।

বাগেরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরজমিনে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে ,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় দূর্নীতি গ্রস্থ শিক্ষক বিভিন্ন নোট বা গাইড কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিকট থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা গ্রহন করে উক্ত নোট বা গাইড কোম্পানী কর্তৃক সরবরাহ কৃত সিলেবাস শিক্ষার্থীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে গ্যামার,নিষিদ্ধ নোট বা গাইড কেনার উপর চাপ প্রয়োগের গুরূতর অভিযোগ উঠে এসেছে। আর এই সব নিসিদ্ধ নোট গাইড দেদারছে বিক্রি হচ্ছে সদর উপজেলার চুলকাঠি বাজার,সিএন্ডবি বাজার,যাত্রাপুর বাজার,ডেমার কাশিমপুর বাজার,বেমরতা বাজার সহ শহরের সাধনা মোড়ের প্রায় অর্ধশত বইয়ের দোকানে ।

বুধবার চুলকাঠি বাজারে বাবার সাথে বই কিনতে আসা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের মধ্যে হাকিমপুর সামসুল হুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী লেকসার পাকলিকেশনের ৮ম শ্রেনীর গাইড সেট কিনতে দেখা যায় নাম প্রকাশ্যে অনইচ্ছুক ঐ শিক্ষার্থী জানান তাদের বিদ্যালয়ে সবাই লেকচার পাবলিকেশনের গাইড কিনছে । এবিষয়ে উক্ত দরিদ্র অভিভাবককের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন সরকার ফ্রী বই দিছিল কিন্তু নোট বই কিনতে তার অনেকের কাছে হাত পাততে হয়েছে। শুধু এখানে ই শেষ নয় এমন টি চিত্র দেখা যাচ্ছে উপজেলার প্রায় সবখানেই।

এবিষয়ে লেকসার পাবলিকেশনের বাগেরহাট সদর মার্কেটিং কর্মকর্তা বশির উদ্দিনের নিকট অসাধু শিক্ষকদের মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা প্রদান ও কোম্পানী কর্তৃক সরবরাহ কৃত সিলেবাস শিক্ষার্থীদের সরবরাহ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন ছাত্র/ছাত্রীরা নিজেরাই লেকচার কোম্পানির গাইড কিনছে।

এবিষয়ে হাকিমপুর সামসুল হুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ শেখের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বাগেরহাট২৪কে বলেন, তিনি কোন শিক্ষার্থীদের নোট,গাইড কিনতে বলেননি বরং কোন শিক্ষক এ অসৎ পথ অবলম্বন করছে মর্মে অভিযোগ পেলে তিনি তদন্ত করে কর্তৃপক্ষের নিকট শাস্তির সুপারিশ করবেন।

এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার হিসামুল হকের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বাগেরহাট২৪কে বলেন,তিনি অতি সত্তর সকল বিদ্যালয় পরির্দশন করে দেখবেন নিসিদ্ধ নোট গাইড কিনতে কোন শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের চাপ প্রয়োগ করছে কিনা করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত