বাগেরহাট ২৪ এ সংবাদ প্রকাশের পর

দূর্যোগ সহনশীল ঘর মালিকরা ফেরত পেলেন টাকা, সংস্কার করা হলো ঘর

এম,এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ০৩:৫১ পিএম, শুক্রবার, ৬ মার্চ ২০২০ | ৬৭৬

বাগেরহাটের রামপালে জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে দূর্যোগ সহনশীল ঘরে “রামপালে জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের নির্মিত ঘরগুলিতে ৩ মাসেই ফাটল” শিরোনামে বাগেরহাট২৪ এ প্রকাশ হওয়ার পর বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। মাত্র চারদিনের মধ্যে উপকারভোগীদের ঘরের ফাটল সংস্কার ও ফেরত পেলেন পরিবহন খরচের টাকা।

তাৎক্ষনিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিয়ম তদন্তে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। জানা গেছে, গত অর্থ বছরে জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে দূর্যোগ সহনশীল ২২ টি সেমি পাকা ঘর নির্মান করে দেওয়া হয়। ওই ঘর নির্মানের ত্রুটি বিচ্যুতি লক্ষ্য করা যায়। কিছু কিছু উপকারভোগীদের তথ্য মতে জানা যায়, পরিবহন খরচ বাবদ মোটা অংকের টাকা তাদের গুনতে হয়।

এ বিষয়টিও উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। গত দুইদিন ধরে প্রকল্প এলাকার উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে ও সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে ঘরের ত্রুটি বিচ্যুতি ও ফাটল সংস্কার করা হয়েছে। উপকারভোগী মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের ছোট সন্নাসী গ্রামের রমেশ মন্ডল ও তার স্ত্রী শুক্লা মন্ডল বাগেরহাট২৪কে জানান, আমাদের দেওয়া পরিবহন খরচ আমরা ফেরত পেয়েছি এবং আমার ঘরে নিম্নমানের কাঠ দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। আমি ভুলক্রমে বিষয়টি বলে ফেলেছি।

উপজেলার হুড়কা ইউনিয়নের চাড়াখালী গ্রামের অসুস্থ্য আজাহার আলীর স্ত্রী তাসলিমা বেগম বাগেরহাট২৪কে জানান, তার ঘরের ফাটল সংস্কার করে দেওয়া হয়েছে এবং পরিবহন খরচ বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত পেয়েছেন।

একইভাবে পরিবহন খরচের টাকা ফেরত পেয়েছেন, ছিদমখালী গ্রামের অজয় মন্ডল এবং তার ঘরটিও সংস্কার করা হয়েছে। বেলাই গ্রামের বিশ্বজিৎ রায় জানান, তার ঘরটি সংস্কার ও পরিবহন খরচ বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত পেয়েছেন। গৌরম্ভা ইউনিয়নের ছায়রাবাদ গ্রামের আকরাম শেখের স্ত্রী আফরোজা বেগম ও বর্ণি গ্রামের ফিরোজ শেখের স্ত্রী শিরিনা বেগম জানান, তাদের ঘর দুটিও মেরামত করে দেওয়া হয়েছে এবং পরিবহন খরচ বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত পেয়েছেন বলে এই বাগেরহাট২৪কে জানান।

ঘর নির্মানে অনিয়মের বিষয়টির একাংশের প্রতিবাদ করে মল্লিকেরবেড় ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার নাজমুল কবির ঝিলাম বাগেরহাট২৪কে বলেন, রমেশ মন্ডলকে দেওয়া ঘরটিতে কোন অনিয়ম হয়নি এবং নিম্নমানের কাঠ দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। বরং ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তার ঘর নির্মানে আরো সহযোগীতা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল বাগেরহাট২৪কে জানান, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ঘরগুলো নির্মানে যেসব অসংগতি ছিলো সেগুলো তাৎতক্ষনিকভাবে সংস্কার এবং উপকারভোগীদের পরিবহন খরচ বাবদ যে টাকা ব্যয় হয়েছিল তাদেরকে সে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে যে অনিয়ম ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো হয়েছে সে বিষয়ে পূর্বে কেউ কোন অভিযোগ না করায় বিষটি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসেনি। যে কারনে সমস্যগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এরপর আর কোন অনিয়ম সহ্য করা হবেনা এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত