চিতলমারীতে ফিরছে মানুষ বাড়ছে ভীতি, ভূগছে প্রশাসন

এস এস সাগর

আপডেট : ০৪:৩৭ পিএম, শনিবার, ১৬ মে ২০২০ | ১০৫৪

চিতলমারীতে ফিরছে মানুষ

ঘনিয়ে আসছে পবিত্র ঈদূল ফিতর। ঈদে নাড়ির টানেই মানুষ বাড়ি ফেরে। আত্মীয়-স্বজনের আত্মার টানে খুশি ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফেরাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এবারের বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মরণঘাতি করোনা ভাইরাসে থমকে গেছে গোটা বিশ্ব। দেশেও বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই ঈদকে সামনে রেখে বাগেরহাটের চিতলমারীতে বাইরের থেকে যতই ঘর মুখো মানুষ ফিরছে, ততই বাড়ছে সংক্রমণের ভীতি। কারণ এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় স্থানীয় ভাবে কোন করোণা রোগি শনাক্ত হয়নি। আক্রান্ত ৩ জনই বাইরে থেকে এখানে করোনা নিয়ে প্রবেশ করেছেন। আর এ জন্য সব চেয়ে বেশী ভুগছে প্রশাসন। শনিবার (১৬ মে) দুপুরে এমনটাই জানিয়েছেন সচেতন মহল।

তারা আরও জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। সাথে গণপরিবহনও বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আর গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষ এখন খোলা পিকআপ, পণ্যবাহী ট্রাক, প্রাইভেট, মাইক্রোবাস ভাড়া, রিক্সা ও ভ্যানে চেপে গাদাগাদি করে নিজ এলাকায় ফিরছেন। পরিবহন স্বল্পতায় অনেকে আবার পায়ে হেটেও বাড়ি পৌঁছাচ্ছেন। আর পথে পথে শত বিড়ম্বনা উপো করে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগির জন্য এই ঘরে ফেরাতেই সবার সুখ। তাই যেভাবেই হোক আপনজনের কাছে পৌঁছাতেই হবে। ছুটে যেতে হবে শেকড়ের টানে চিরচেনা গ্রামে। এই ঘরে ফেরাতেই আনন্দ। কিন্তু এবারের বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মরণঘাতি করোনা ভাইরাসে থমকে গেছে গোটা বিশ্ব। দেশেও বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই ঈদকে সামনে রেখে এ উপজেলায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা শহর ও দেশের বাইরে থেকে ঘর মুখো মানুষ ফিরছে। আর যতই মানুষ এলাকায় ফিরছে, ততই বাড়ছে সংক্রমণের ভীতি। কারণ এখন পর্যন্ত এ উপজলায় স্থানীয় ভাবে বসবাসরত কোন কেউ করোণা শনাক্ত হয়নি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা ৩ জনই বাইরে থেকে এখানে করোনা ভাইরাস নিয়ে এসেছেন। আর এ জন্য সব চেয়ে বেশী ভুগছে প্রশাসন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি চিতলমারী শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পংকজ রায় ও স্থানীয় সাংবাদিক গোবিন্দ মজুমদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এতদিনে বাইরে থাকা তাদের এলাকার বহু মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর ও বিদেশ থেকে ফিরেছেন। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হলেও এবং বাড়িতে লাল পতাকা টানানো হলেও তারা তা মানছে না। তাই এলাকায় করোনা ভীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রাজধানী ঢাকা থেকে ফেরা আড়ুয়াবর্নী গ্রামের মিজানুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ভাইবোনদের সাথে ঈদ আনন্দ করতে তিনি পরিবার নিয়ে বাড়িতে এসেছেন। নিয়ম মেনে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনও পালন করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী দেশে সাধারণ ছুটি চলছে এবং সেই মোতাবেক এখানে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এখানে ভারত, ওমান, কুয়েত, সৌদি আরব, বাহারাইন, মালেশিয়া ও দুবাই থেকে আসা ৭১৬ জন এবং ঢাকা নারায়নগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ১৪৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। হোম আইসোলেশনে আছেন ৩ জন। সেই সাথে করোনা বিষয়ক নির্দেশ অমান্য করায় বহু মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে।

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মামুন হাসান মিলন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এপ্রিল থেকে এ উপজেলায় করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। এ পর্যন্ত এখানে এক নারী ও দুই পুরুষসহ মোট ৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। তারা কেউই চিতলমারীতে বসে করোনায় আক্রান্ত হননি। তারা সবাই উপজেলার বাইরে থেকে বাড়ীতে করোনা নিয়ে ফেরেন। এদের মধ্যে ফরিদপুর থেকে আসা পাটরপাড়া গ্রামের মোয়াজ্জিম করোনামুক্ত হয়েছেন এবং ঢাকা থেকে আসা চিংগুড়ি গ্রামের স্বামী ও স্ত্রী হোম আইসোলেশনে চিৎসাধীন রয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত