ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সবচেয়ে বেশী ঝুকিতে সাউখালীর পাঁচ গ্রামের মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৩:৫১ পিএম, বুধবার, ২০ মে ২০২০ | ৪৬৩

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সবচেয়ে বেশী ঝুকিতে সাউখালীর পাঁচ গ্রামের মানুষ

ঘূর্নিঝড় ‘আম্ফান’ যতই উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে, ততই আতঙ্ক বাড়ছে শরণখোলার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাউথখালীর মানুষের মাঝে। অরক্ষিত হয়ে পড়েছে সিডরে মৃত্যুপূরীখ্যাত সাউথখালী ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী পাঁচ গ্রামের মানুষ।

সিডর প্রথম আঘাত হেনেছিলো সাউথখালীতে। মৃত্যু হয়েছিলো সাত শতাধিক মানুষের। আম্ফানের গতিপথও সেই সাউথখালী। অথচ সেখানকার দুই কিলোমিটার এলাকায় কোনো টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ হয়নি আজও। ভাঙা বাঁধের পাশে এখনো ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে শত শত পরিবার।

সামান্য ঝড় এলেই উৎকণ্ঠায় পড়ে যায় বাঁধভাঙা মানুষ। একেক বারের ঝড়ে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ঝড় থেমে গেলে আবার এসে বাসা বাঁেধ সেখানে। সর্বশেষ গত ৯মে দক্ষিণ-সাউথখালীর গাবতলা আশার আলো মসজিদের সামনের ১০০ ফুট জমি বেড়িবাঁধ বলেশ্বরে বিলীন হয়ে যায়। সেই আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের খবর তাদেরকে আরো হতাশ করেছে।

চরম ঝুঁকির মুখে রয়েছে সাউথখালী ইউনিয়নের বগী, গাবতলা, দক্ষিণ-সাউথখালী, উত্তর-সাউথখালী ও চালিতাবুনিয়া গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার। সেখানকার দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সেই ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে সিডরের পর প্রায় ১৩ বছর পর্যন্ত। প্রতিনিয়ত বাঁধ ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। আম্ফান আঘাত হানলে সিডরের চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিনতি হবে সেখানে।

বগী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রিয়াদুল পঞ্চায়েত বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সিডরে আমার স্ত্রী, ভাই, ভাইজিসহ তিন জন মারা গেছে। আমরা সেই থেকে দাবি করে আসছি একটি টেকসই বেড়িবাঁধের কিন্তু এখনো এই দুই কিলোমিটারে বাঁধের কোনো গতি হলো না। বর্তমানে বাঁধের যা অবস্থা তাতে এবারের ঝড় সবকিছু শেষ করে দিয়ে যাবে।

দক্ষিণ-সাউথখালী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ জাকির হাওলাদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বগী থেকে দক্ষিণ-সাউথখালী গাবতলা আশার আলো মসজিদ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায় নদী শাসন ও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতায় এখানে আজ পর্যন্ত টেকসই বেড়িবাঁধ হয়নি। এই দুই কিলোমিটারে নামমাত্র রিং-বাঁধ দেওয়া আছে, যা ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ভেঙে পুরো সাউথখালী ইউনিয়ণ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) মাধ্যমে শরণখোলার ৩৫/১ পোল্ডারের ৬২ কিলোমিটারে টেকসই বাঁধ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু এই পেল্ডারের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং সিডরের প্রবেশদার বগী ও দক্ষিণ-সাউথখালীর এ অংশে কোনো কাজ হয়নি। একারণে গোটা সাউথখালী এখন অরক্ষিত। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান যদি আঘাত হানে তাহলে ইউনিয়নটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই সাউথখালীবাসীকে বাঁচাতে নদী শাসন ও জমি অধিগ্রহণের জটিলতার সমাধান করে দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত