তদন্ত পুর্বক বিচার দাবী

শরণখোলার মাতৃভাষা কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কয়েক লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ১১:৩৯ পিএম, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০ | ৩০৮২

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত মাতৃভাষা কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. অলিউর রহমানের বিরুদ্ধে কলেজ ফান্ডের অর্থ সহ শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে শিক্ষার্থী,অভিবাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছে। এদিকে ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অবৈধ অর্থেও প্রভাবে আতংকের মধ্যে থাকতে হয় অপর শিক্ষকদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুত্র জানায়, ২০০০ সালে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত মাতৃভাষা কলেজে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে এলাকার কিছু জামায়াত পন্থী অসাধূ ব্যাক্তিদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে তৎকালীন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শুরু করে নানা ষড়যন্ত্র। নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করার জন্য একেরপর এক মিথ্যা মামলা জুড়ে দেন প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে নানা হুমকি এমনকি ওই অধ্যক্ষের বাসায় রাতের আধারে ডাকাত পাঠিয়েও তাকে হত্যার চেষ্ঠা চালায়। পরে প্রানের ভয়ে ও মিথ্যা মামলায় পালিয়ে বেড়ায় ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম। এসুবাদে তৎকালীন জামায়াত নেতাদের সহযোগীতায় নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করার সাধটি মিটিয়ে ফেলেন।

তৎকালীন প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে শুরু করেন এক রাজত্ব, কোন মতামত তো দুরের কথা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আদেশ, শিক্ষা বোর্ড,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক,জেলা প্রশাসক এমনকি আদালতের আদেশও তিনি তোয়াক্কা করেননি।

গত ১৪ বছরে ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. অলিউর রহমান নিয়োগ বানিজ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের দুইজন প্রভাষকের কাছথেকে ৫লাখ ২০ হাজার টাকা। ডিগ্রী পর্যায়ে ৬জন প্রভাষকের কাছথেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৪লাখ ৯১ হাজার। এছাড়া বিভিন্ন পদে চাকুরীর নামে হাতিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা।

কলেজের সংরক্ষিত তহবিলের ৫লাখ ও সাধারন তহবিলের ৩লাখ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ ও রয়েছে ওই অলিউর রহমানের বিরুদ্ধে। এছাড়া ১৪ বছরে২৮জন শিক্ষক-কর্মচারীদের টিউশন ফি পুরোটাই নিজ পকেটে নিয়েছেন।পপাবলিক পরীক্ষা এইচএসসির ফরম ফিলাপেরউৎবৃত্ত টাকা নিজের ভেবে নিয়েছেন। ২০০৭ সালথেকে একাধিক বার প্রবেশপত্রফি,নম্বর ফর্দ, সনদপত্র ফি যাহা ফরমফিলাপের সময় নিয়েও পুনরায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে পুরোটাই আতœসাত করেছেন।

এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্র ফি কলেজের ৩বিঘা চাষকৃত জমি,মৎস্য লেক ও পুকুর থেকে আয়ের পুরোটা পকেটে রেখেছেন। ২০১৯ সালে যশোর বোর্ড থেকে দেয়া ৪জন শিক্ষার্থীর ১৮ হাজার ৪শত টাকা এখনো দিতে পারেনি কোন শিক্ষার্থীকে। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কোন সরকারী বরাদ্ধের কাজ না করিয়ে সমস্ত টাকা আতœসাত করেছেন এমন অভিযোগ ও রয়েছে ওই মো. অলিউর রহমানের বিরুদ্ধে। কলেজ সভাপতি সাবেক এমপি ডা. মোজাম্মেল হোসেন এর গত ১০ জানুয়ারী ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর পরেও গত ১৪ জানুয়ারী ৫০ হাজার টাকা, ২৬ জানুয়ারী ১৩হাজার ৫শ টাকা কলেজের সাধারন তহবিল থেকে উত্তোলন করেছেন।
হাইকোর্টের রায়ে মো.নজরুল ইসলামকে পুনর্বহাল করা হলেও কোন কাগজপত্র, কলেজের হিসাব বুঝিয়ে না দিয়ে তালবাহানা শুরু করে আবারো পুরনো জামায়াত পন্থী বন্ধুদের সাথে মিলে নতুন ষড়যন্ত্রেরও পায়তারা চালাচ্ছেন। এনিয়ে মো.নজরুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আবেদন করেছেন।

একাধিক শিক্ষক বলেন, তিনি যে অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন শুধু তা নয়। কলেজের টাকা আত্নসাত করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন তিনি। এর সুষ্ঠু তদন্ত পুর্বক বিচার দাবী করেছেন তারা।

এবিষয়ে মো. অলিউর রহমান মুঠোফোনে বলেন,শিক্ষক নিয়োগে এতটাকা নেয়া হয়নি হয়তো ১০/২০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছথেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন, বাকী টাকার বিষয়ে বলেছেন ওই টাকা কলেজ ও মামলা চালাতে খরচ হয়েছে। তবে কলেজ ফান্ডের টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, কলেজের ফান্ডে কোন টাকা ছিলো না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত