বাগেরহাটে ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালিত

শিশুর মেধা ও সু-স্বাস্থ্যের জন্য মিড ডে মিলে ডিম রাখা হোক

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৯:০১ পিএম, শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০২০ | ৯৩৫

শিশুর মেধা ও সু-স্বাস্থ্যের জন্য প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিলে ডিম রাখা অতি আবশ্যক। ডিম একটি সুষম পুস্টি গুণ সমৃদ্ধ খাবার। সাধারন মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে ডিম একটি উপযুক্ত সাশ্রয়ী খাদ্য। সরকার শিশুদের পুষ্টি চাহিদা মেটাত স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু করেছে। শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন স্কুল থেকে বিস্কুট বা সিংগাড়ার পরিবর্তে টিফিন হিসেবে ডিম খেতে দিলে তাদের পুষ্টি চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হবে। একটি ডিম শিশুকে সারাদিন সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে সহায়তা করে।” বাগেরহাটে ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

শুক্রবার সকালে “প্রতিদিন ডিম খাই, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই” প্রতিপাদ্য বিষয়ে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, বাগেরহাট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক দেবপ্রসাদ পাল। সভায় অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন, বাগেরহাট জেলা পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন’র সভাপতি এম.এ মতিন, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি আহাদ উদ্দিন হায়দার, ক্যাব বাগেরহাটের সভাপতি বাবুল সরদার, খামারী হাবিবুর রহমান, রেনেটা কোম্পানীর জেলা ম্যানেজার কামরুল ইসলাম প্রমুখ।

মূল প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের পোল্ট্রি ডেভেলপম্যান্ট অফিসার এ.এফএম ফয়জুল ইসলাম। পরে র‌্যালী অনুষ্টিত হয়।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, সহজলভ্য একটি ডিম শিশুর প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা পূরণে অনেক সহায়ক। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মেধা শক্তি বৃদ্ধিতে ডিমের ভূমিকা খুবই উপযোগী। ডিমের কুসুমে কোলেস্টোরেল এবং কোলিন থাকে, যা শিশুর মস্তিস্ক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিমের মধ্যে সঠিক মাত্রায় উপস্থিত সেলেনিয়াম, জিঙ্ক ও আয়রনের মত খনিজ শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ডিমের সাদা অংশ সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের যোগান দেয়। ডিমের মধ্যে যে প্রোটিন থাকে, তা শিশুর শরীরে নতুন কোষ তৈরি এবং তার বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে। ডিমের কুসুমে থাকা ফসফোলিপিড শিশুর হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। ডিমে পর্যাপ্ত পরিমাণে সালফার থাকে। এই সালফার শিশুর শরীরে কোলাজেন এবং কেরাটিন উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন ই১২ শোষণে শরীরকে সাহায্য করে বলে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে এবং লিভার ভালো থাকে। এরফলে, শিশুর চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যও ভালো হয়। ডিমের কুসুমে লুটেইন এবং জেক্সান্থিন নামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে, যা চোখকে ক্ষতিকর আলট্রাভায়লেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং চোখের স্বাস্থ্যও ভালো করে। চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। ডিমের ভিটামিন এ, ই, কে এবং ডি শিশুর হাড়ের বিকাশ ও স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশে রাইবোফ্লাভিন থাকে, যা কার্বোহাইড্রেট থেকে এনার্জি তৈরি করে শিশুকে সতেজ ও উৎফুরø রাখে।”

বক্তারা আরও বলেন, পোল্ট্রি মালিকরা তাদের বিক্রয় মুল্য থেকে কিছু কম দামে নিজ এলাকার বিদ্যালয়ে ডিম সরবরাহ করে স্কুল ফিডিং কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে পারেন। বিষয়টাকে তারা ধর্মীয় দৃষ্টিতে সদকায়ে জারিয়া হিসেবে দেখতে পারেন। আবার যারা আয়কর দেন তারা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন, তাদের এই সেবাকে আয়কর রেয়াতের আওতায় আনা যেতে পারে।

স্কুলে মিড ডে মিলের জন্য উৎপাদনমূল্যে ডিম সরবরাহের অঙ্গীকার করে সভায় খামারীরা সরকারের সহযোগীতা কামনা করেণ। তারা বলেন, কয়েক লাখ বেকার যুবা এখন পোল্ট্রি শিল্পের সাথে জড়িত। তাই বিকাশমান এই শিল্পের স্বার্থে পোল্ট্রির খাদ্যমূল্যে এবং ডিমের বিক্রয়মূল্য সমন্বয় করা খুবই প্রয়োজন। প্রাণিজ আমিষের জোগান দেয়ার জন্য ডিমের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই ডিমকে সবার কাছে পৌছানোর জন্য এবং ডিম বিষয়ে সচেতনতার জন্য তারা আহ্বান জানান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত