উপকূলে অবিরাম বৃষ্টিতে শারদীয়া দুর্গোৎসবে বিড়ম্বনা

আপডেট : ০৯:৫৫ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর ২০২০ | ৫১০

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে বাগেরহাটসহ গোটা উপকূল জুড়ে কার্ত্তিকে শ্রাবনের মত বিরামহীন বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ক্রমশ তা ভারি বৃষ্টিতে রূপ নিচ্ছে। করোনা দুর্যোগে নানা বিধিনিষেধের মধ্যে অঝোর বৃষ্টিতে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সূচনাতেই প্রাণচাঞ্চল্য, উচ্ছাস যেন ম্লান হতে বসেছে। চেনা পরিসরে অচেনা ছবি ভেসে উঠছে।

মোংলা বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেওয়া হয়েছে। মোংলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মোহাম্মাদ আলী জানিয়েছেন, বঙ্গোপসগারে সৃষ্ট লঘূ চাপের কারণে সকাল থেকে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত আমরা ৩৯ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছি। আগামী দুই-তিনদিন এধরনের বৃষ্টিপাত থাকবে।

অবিরাম এ বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়ছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয়া দূর্গোৎসব শুরুর দিনে উৎসব মুখরতার পরিবর্তে বৃষ্টিবিঘ্ন স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এদিন দুপুরে দশানী, নাগেরবাজার, মুনিগঞ্জ, কাপুড়িয়াপট্রী, বাসাবাটী দুর্গা মন্ডপসহ অধিকাংশ দূর্গা পূজা মন্ডপে ঘুরে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি খুব কম দেখা গেছে। রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। অনান্য বছরে এ সময়ে বিকিকিনিতে দোকান-পাট জমজমাট থাকলেও এদিন সেখানে প্রায় ক্রেতা শুণ্য লক্ষ্য করা গেছে। আক্ষরিক অর্থেই কার্ত্তিকে শ্রাবনের অঝোর ধারায় শারদীয়া দুর্গোৎসবে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে।



বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমিত রায় ও জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শিবপ্রসাদ ঘোষ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, করোনার কারনে নানা বিধি নিষেধের মধ্যে এবার শারদীয়া দুর্গোসব শুরু হয়েছে। রাত ৯-টার পর মন্ডপ বন্ধ থাকার নির্দেশনা রয়েছে। এঅবস্থায় নি¤œচাপের প্রভাবে অবিরাম অকাল বর্ষণে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠেছে। মানুষজন ছেলে-মেয়ে, পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হতে পারছে না। ভক্ত, দর্শনার্থী, ব্যবসায়ী সকলে বিড়ম্বনায় পড়েছেন।

বাগেরহাট কাপুড়িয়া পট্টীর ব্যস্ততম দোকানী অচিন দাস বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, করোনার কারণে বেচাবিক্রি না থাকায় গত ছয় মাসে পুঁজি ভেঙ্গে চলতে হয়েছে। এখন বড়পূজোর সময় কিছু বেচাকেনা হবে ভেবে নতুন মাল(কাপড়-পোশাক) তুলে ছিলাম, তাও গেল। এখন মোকামের দেনা কিভাবে দেব, আর নিজেরা কিভাবে চলব,৩ টা দোকানের খরচ ও কর্মচারীর বেতনই বা কিভাবে শোধ করব বুঝে উঠতে পারছি না।’ রাবেয়া গার্মেন্টের রিফাত রাসুল পিয়াস, উত্তম বস্ত্রলয়ের উত্তম কুমার, স্বরুপ সাহা-সহ অধিবাংশ দোকানী প্রায় অনুরূপ হতাশা ব্যক্ত করেন।


দশানী মন্দিরের সামনে এদিন দুপুরে কথা হয়, পূজারী মোহনলাল হালদার, সুমন দাস, কাকলী রানী পাল, প্রদীপ দাস ও সুশান্ত কুমার দাস এর সাথে। তাঁরা বলেন, অবিরাম বৃষ্টিতে উৎসবের আনন্দ ভেস্তে যেতে বসেছে। খুব সমস্যা হচ্ছে। লোকজন আসতে পারছেন না। দর্শক নেই। তবে দুর্গা-মায়ের কৃপায় দ্রুত এ সমস্যা কেটে মন্দিরে ভক্ত দর্শনার্থীদের সমাগম হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহাদাত হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, মোংলায় বৃষ্টিপাত হলেও বন্দরের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। বন্দরে জাহাজ আগমন, নির্গমন, খালাস ও বোঝাই সবই চলমান রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত