মোংলা বন্দর সিবিএ নির্বাচনে শেষ মুহুর্তে ভোটের মাঠে ব্যাস্ত প্রার্থীরা

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ১২:০৪ এএম, শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর ২০২১ | ৬২৬

মোংলা বন্দরের কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) নির্বাচনের বাকী আর মাত্র দুই দিন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে বন্দরের কর্মচারীদের কাছে ভোট চাওয়ায় ব্যাস্ত তিন তিনটি প্যানেলের প্রার্থীরা। যার যার অবস্থান থেকে চালিয়ে যাচ্ছে, সাইকেল মহড়া, মিছিল, মিটিং ও প্রচার-প্রচারণা। বন্দর জুড়ে এখর ভোটের হাওয়া সড়গম। মনোনয়ন থেকে শুরু করে প্রতীক বরাদ্ধ, তার পরেই প্রার্থীরা নেমে পড়েছে ভোটের মাঠে। প্রতি বছর দুইটি প্যানেল হলেও এবারের চিত্র ভিন্ন, ১৩টি পদের অনুকুলে তিনটি প্যানেল তৈরী করে ৩৯ জন মনেনয়ন সংগ্রহ করে।


এছাড়া প্যানেল ছাড়া রয়েছে আরো ৫ প্রার্থী। এসকল প্রার্থীরা কখনও খুলনা আবার মোংলা বন্দর, সব খানেই ভোটের আশায় চষে রেড়াচ্ছে সাধারন ভোটারদের কাছে। আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তম সংগঠন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) নির্বাচন। প্যানেল প্রার্থীরা ভোটের আশায় ভোটারদের কাছে নিজেকে প্রানবন্ধ করতে দিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। ভোটের মাঠে জয়ী হওয়ার আশায় কৌশল করে নিজের দোষকে আড়াল করে অন্যের দোষকে তুলে ধরছেন ভোটারদের সামনে।


তবে এ নির্বাচনে এখনও তিনটি প্যানেলের প্রার্থীরা ভোটারদের হৃদয় রয়েছে সমানে-সমান। এরই মধ্যে কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছে সাবেক কিছু হেবিওয়েট প্রার্থীরা বলেন, ভোটারদের মুখে সোনা যাচ্ছে। তবে সাধারণ ভোটারদের অভিমত, এবারের নির্বাচন হবে ভিন্ন আঙ্গীকে।

সুত্র জানায়, বন্দর ব্যবস্থাপনায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘ (সিবিএ) উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখে বলেই সংশ্লিষ্টদের নজর সেদিকে। বন্দর ব্যবহারকারীরাও চাচ্ছে বন্দরের কর্মচারীদের পরিচালনার জন্য যোগ্য নেতৃত্ব আসুক। নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনটি আলাদা প্যানেলের ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে নাসির মৃধা-কাজী খোরশেদ আলম পল্টু, সওকত আলী-মতিয়ার রহমান সাকিব ও নাসির উদ্দিন চৌধুরী-ফিরোজ আহম্মেদ এই তিনটি প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিলেও সভাপতি পদে লড়াই হবে নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও নাসির মৃধার সঙ্গে।


এছাড়া ভোটারদের কাছে সাধারণ সম্পাদক পদে এগিয়ে রয়েছেন কাজী খোরশেদ আলম পল্টু। তবে মতিউর রহমান সাকিব এ নির্বাচনে নতুন হলেও ভোটারদের কাছে ঠান্ডা মাথায় গুছিয়ে নিচ্ছে তার অবস্থান। ফিরোজ আহম্মেদ বর্তমান পরিষদের সম্পাদক থাকায় তার অবস্থান ধরে রাখার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। লড়াই হবে তিন সম্পাদকের ভোটের মাঠে, সাধারন ভোটারদের কাছে তিনজনই চলছে সমানে-সমান।


এ নির্বাচনে সাধারন ভোটারদের অভিমত, মোংলা বন্দরে এবারের দ্বি-বার্ষিক সিবিএ নির্বাচন হবে তিন সাধারন সম্পাদকের মধ্যে। সবাই নিজেকে যোগ্য মনে করে ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন, চাচ্ছে ভোট, দিচ্ছে লোভনীয় প্রতিশ্রুতি।


সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কাজী খুরশিদ আলম পল্টু আগের পরিষদের নির্বাচনে জয়ী হয়ে যে সকল সফলতা কাজ করেছে তা নিয়েই ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছে। তবে বর্তমান সাধারন সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ বর্তমান পরিষদে ক্ষমতায় থাকায় কি কি কর্মকান্ড করেছে তা সাধারন ভোটারদের কাছে আয়নার মতো পরিস্কার হয়ে গেছে। এখন ভোটারই প্রমান দিবে তাদের ভোটাধীকার প্রয়োগের মাধ্যমে। তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে টাকার পাহাড় তৈরী করেছে। সম্পাদকের ক্ষমতার দাপটে স্বজনপ্রীতি করে নিজের লোককে বন্দরে ড্রেজিংসহ বিভিন্ন কাজ, শাখা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার বহু অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। মন্ত্রনালয় ও বন্দরের চেয়ারম্যানসহ সরকারের নানা দপ্তরে রয়েছে লিখিত অভিযোগ বলে দাবী সম্পাদক প্রার্থী কাজী খোরশেদ আলম পল্টুর।

তবে যতই অভিযোগ করুক প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী তা আমলেই আনছেনা ফিরোজ আহাম্মেদ। তিনি বলেন, কে ভাল আর কে মন্দ তার প্রমান হবে ভোটেরমাঠে, আমি কি করেছি তা সাধারণ ভোটারই প্রমান করবে তাদের ব্যালটের মাধ্যমে।


বন্দরের সিবিএ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব মুন্সি মাকরুজ্জামান বলেন, ৮৪৩ জন কর্মচারীদের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য নেতা নির্বাচনে আগামী ১৭ অক্টোবর নির্বাচন নিরেপক্ষ করতে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা সেগুন বাগিচার লিয়াজো অফিস, খুলনা বন্দর কর্তৃপক্ষের মিলনায়তন, মোংলা বন্দর স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বন্দরের হিরণ পয়েন্ট রেস্ট হাউসের এই চারটি ভেন্যুতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।


বন্দরের সিবিএ বর্তমানে সভাপতি প্রার্থী নাসির মৃধা বলেন, আমি বন্দরে চাকরী করি বহু বছর কিন্ত কোন লোক আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তুলতে পারেনি। এ সুনাম ভবিষ্যতেও কর্মচারীদের কাছে অক্ষুন্ন রাখবো। এবারের নির্বাচনে আমি প্যানেল দিয়েছি যোগ্য নেতৃত্ব দেয়ার মতো লোক নিয়ে। আমার প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক একজন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপ-ব্যাবহার বা টাকার বিনিময় কাউকে কিছু দেয়ার এরকম অভিযোগ তার বিরুদ্ধে নেই। প্যানেলের অন্য প্রার্থীরাও একই রকম, যার কারনে এ নির্বাচনে আমার প্যানেল বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ।


এস এম ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, বন্দরের কর্মচারী সংঘের নেতা হয়ে আমি এখন কর্মচারীদের কাছে একজন যোগ্য সম্পাদক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছি। ১৭ অক্টোবর নির্বাচিত হলে আমি তাদের সুখ-দুখের সাথে আগেও ছিলাম আর ভবিষ্যতেও থাকবো।


অপর প্রার্থী মতিয়ার রহমান সাকিব বলেন, বন্দরের সংঘে বেশ কয়েকবার কর্মচারীদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। কখনও দুর্নীতি করে টাকা উপার্জন করিনি। ছোট সময় থেকেই বাবার নিজের টাকা খরচ করে বন্ধু বান্দবদের মন খুশী রেখেছি, এখন নিজের টাকা খরচ করে বন্দরের কর্মচারীদের সুখ-দুঃখের সাথী হিসেবে তাদের পাশে ছিলাম এবং আছি, তাই কর্মচারীরা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে ইনশাআল্লাহ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত