১৭ বছর একই স্থানে কর্মরত !

মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দুর্নীতির  বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ১২:৪২ এএম, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | ৬৬০

মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতীর নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। রোববার সকালে বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে আহুত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহাজাহান শেখ। তিনি এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহাজাহান শেখ উল্লেখ করেন, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এখানে প্রায় চার লাখ লোকের বসবাস। জেলা সদর থেকে ২৮ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত এই উপজেলার ভৌগলিক অবস্থানগত কারনে নদী-নালার সংখ্যা বেশি হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থ্যা একেবারেই নাজুক। সেই সাথে এই উপজেলায় দরিদ্র, দিনমুজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। তাই এসব অসহায় মানুষের একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

আর এই অসহায়ত্বকে পুঁজি করে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতীর নেতৃত্বে একটি চক্র প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এই ডাক্তার বিভিন্ন খাতে সরাকারী বরাদ্ধকৃত অর্থ লোপাট করেই চলেছেন।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতী দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এই উপজেলায় কর্মরত থেকে দূর্নীতিতে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। তিনি ২০২১ সালেন ৩০ জুন দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে ‘মেসার্স আরিয়া ট্রেডার্স’- মহাখালীর নামে একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে নিজে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ধোলাই, স্টেশনারী ও পথ্য সরবরাহ করেন। স্থানীয়দের বিরোধীতা সত্বেও তিনি তার অফিসের প্রধান সহকারী মোঃ রেদোয়ান মাতুব্বরকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে আট লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। মোরেলগঞ্জ কলেজ রোডের নুরুজ্জামান মেডিসিন হাউজের নামে তিন বছর ধরে ঔষধ সরবরাহ করে আসছেন তিনি নিজেই। অফিস চলাকালিন সময় হাসপাতালে বসেই তিনি ৪/৫শ টাকা ভিজিট নিয়ে রোগী দেখেন। প্রতিবন্ধি ও মৃত্যু সার্টিফিকেট নিতেও টাকা দেয়া লাগে তাকে। মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোন ভাল ডাক্তার এলে তার করনে টিকতে পারেন না। নানা ভাবে হয়রানি করে তাকে বিদায় করা হয়। তার এই অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদ করলে বদলি ও মিথ্যা মামলা দেয়াসহ নানা ভাবে হয়রানি করা হয়। গতমাসে সিএইসসিপি হিসেবে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান কানিজ ফাতেমা বেতন আনতে গেলে তার ১৩ হাজার টাকা বেতনের ৩ হাজার টাকা কেটে রাখেন। এর প্রতিবাদ করায় তাকে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে বদলি করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহাজাহান শেখ আরো বলেন, ‘তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তিনি খারাপ আচারণ করেন। তাই মোরেলগঞ্জে তার বিরুদ্ধে আমরা মানববন্ধন করেছি। আমরা জানতে পেরেছি নাম তার নামে- বেনামে অনেক অবৈধ সম্পদ রয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে সেটা বেরিয়ে আসবে বলে আমি মনে করি।’

তিনি অভিযোগ করেন, তার ছয় বার বদলি হলেও বিশেষ তদবিরে কোন এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে তিনি মোরেলগঞ্জ উপজেলাতেই রয়ে গেছেন। গত ০১ ফেব্রুয়ারী স্টান্ড রিলিজ হলেও এখনও রয়েছেন বহল তবিয়তে।

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতী বলেন, এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের দৌরাত্ত্ব কমাতে উদ্যোগ নেয়ায় একটি মহল ক্ষিপ্ত হয়ে এই অপপ্রচার করছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত