বাগেরহাটে প্রতিপক্ষের হামলায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও দুই ছেলে আহত

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৮:১৩ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ ২০২২ | ৬৮৯

প্রতিকী ছবি

বাগেরহাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সলেমান খানের স্ত্রী ও দুই ছেলে আহত হয়েছেন। গুরুত্বর আহত অবস্থায় বড় ছেলে বেলাল শেখ(২৪) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ছোট ছেলে জালাল শেখ (১৯) বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলাকারীরা তার ঘেরের ৩ লক্ষ টাকার মাছ লুটে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। এঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আহত নাজমা বেগম।


বাগেরেহাট সদর উপজেলার পারকুরশাইল গ্রামের নাজমা বেগম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, আড়পাড়া কুরশাইল মৌজায় ক্রয়সূত্রে আমাদের এক একর ২৩ শতক জমি রয়েছে। যা আমরা ৩০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। ওই জমিতে আমাদের মৎস্য ঘের রয়েছে। কিছুদিন হয়েছে পারকুরশাইল গ্রামের আশরাফ আলী শেখের ছেলে জিহাদ শেখ ও খালিদ শেখ আমাদের এই জমি দখলের চেষ্টা করে। জমি রক্ষায় আমরা বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা ১৪৪ ধারার আবেদন করি। আদালতের নির্দেশে সহকারি কমিশনার ভূমি সরজমিন তদন্ত করে ওই জমিতে আমাদের মৎস্য ঘের রয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর পরেও জিহাদ ও খালিদ আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করে। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৩ মার্চ) সকালে আমি, আমার দুই ছেলেসহ কয়েকজন ওই ঘেরে মাছ ধরতে গেলে জিহাদ, খালিদ, সুমন, শিমুল, হাকিম, জুয়েল, রাসেলসহ ১০-১১ জন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীদের এলোপাথারি পিটুনিতে আমি, আমার বড় ছেলে বেল্লাল শেখ ও জালাল শেখগুরুত্বর আহত হই। গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা আমাদেরকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আমার বড় ছেলে বেলাল শেখকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। বেলালের নাকের বাসি ফেটে গেছে, আমার ছেলে বাঁচবে কিনা জানিনা এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

নাজমা বেগম আরও বলেন, আমার স্বামী একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার একটি পা নেই, দুই ছেলেই পড়াশুনা করে। এই সুযোগে আমার জমি দখলের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তারা। তারা শুধু আমাদের মারধর করেনি, আমার ঘেরের ১৪টি বস্তায়, ১২ মন মাছ নিয়ে গেছে। যার মূল্য আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা। আমি এ অন্যায়ের বিচার চাই।


বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জালাল শেখ বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, ভাইয়া নর্দান বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে পড়েন, আমি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিব। আমরা দুই ভাই কারও সাথে কোন ঝগড়া বিবাদে যাই না। নিজেদের জমিতে মাছ ধরছিলাম, তখন এসে আমাদের উপর অতর্কীত হামলা করেছে তারা। এতে ভাইয়ার নাক ফেটে গেছে, অনেক জায়গা জখম হয়েছে। আমারও হাত, পা, পিঠসহ কয়েক জায়গা জখম হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।

স্থানীয় মতিয়ার শেখ বলেন, জিহাদ ও খালিদ শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা সলেমান খানের পরিবারের উপর হামলা করেনি। এর আগে স্থানীয় অনেককে মারধর করেছে তারা। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এলাকায় কোন দূর্বল অসহায় মানুষ পেলেই তাদের উপর অত্যাচার করে খালিদ ও জিহাদ।


বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, মারধর ও ঘের দখলের চেষ্টার একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত