চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস, সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন চাষিরা

এম, এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ১০:৫৭ পিএম, রোববার, ৮ মে ২০২২ | ৪০৯

রামপাল উপজলায় ভাইরাস জনিত কারনে ব্যাপক হারে চিংড়ি মড়ক দেখা দিয়েছে। এর ফলে এ মৌসুমের শুরুতে এ উপজলার কোটি কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন চাষীরা। এ অবস্থায় বেশির ভাগ চিংড়ি চাষীর মাথায় হাত উঠেছে। কিভাবে ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
রামপাল উপজলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের একটি সুত্র জানায়, রামপাল এ মৌসুমে নিবন্ধনকৃত ৬ হাজার ৬৪৪ টি ঘেরে চিংড়ি চাষ হয়েছে। এখন বাগদা চিংড়ির ভরা মৌসুম। অনেক ঘের থেকে চিংড়ি ধরা শুরু করেছেন চাষিরা। আবার অনেকে চিংড়ি ধরার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এরই মধ্যে মাত্র এক সপ্তাহর ব্যবধানে এ উপজলার বিভিন্ন এলাকায় চিংড়ি ঘেরে হঠাৎ করে চিংড়িতে মড়ক শুরু হয়েছে। কি কারনে চিংড়ি মরছে চাষীরা তার সঠিক কারন খুজে পাচ্ছেন না। চাষীরা বলছেন যারা সরকারি-বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋন নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছেন তারা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এখন তাদের ঋন পরিশাধের কোন পথ খোলা নেই। এবার রামপাল উপজলায় চিংড়ি চাষীদের অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে চাষীরা জানান।
উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের মুজিবনগর এলাকায় শনিবার কয়েকটি চিংড়ি ঘেরে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা মরা চিংড়ি পরখ করছেন। ওই ইউনিয়নের বেশির ভাগ চিংড়ি ঘেরের চিংড়ি মারা গেছে। পার্শ্ববর্তী ভোজপাতিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঘের মালিক নুরুল আমিন জানান, ওই ইউনিয়নের ৯৮ ভাগ চিংড়ি ঘেরে মড়ক লেগে চিংড়ি মরে গেছে। এতে চাষীরা সর্বস্ব হারিয়েছে। গৌরম্ভা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজীব সরদার, হুড়কা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তপন গোলদারসহ অন্যান্য চাষিরা জানান, ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ ঘেরের চিংড়ি মরে শেষ। তিনি আরও বলেন, যারা লোন নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছে তারা একবারই নিঃস্ব হয়ে গেছে। রামপাল সদর, রাজনগর, বাইনতলা ও পেড়িখালি ইউনিয়নের সব চিংড়ি ঘরের অবস্থা একই রকম।
ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবী করেছেন। গত বছর এ উপজেলায় ৬ হাজার ৭০০ মে, টন চিংড়ি উৎপাদন হলেও ভাইরাসের কারনে এ মৌসুমে উৎপাদন মারাত্মক ভাবে হ্রাস পাবে বলে চাষীরা মনে করেন।
এ ব্যাপার রামপাল উপজলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, হোয়াইট স্পট সিনড্রম ভাইরাস নামক এক ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে চিংড়ি মারা যাচ্ছে। তিনি বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে এ রোগ দেখা দিয়েছে। গত বছরও এ রোগে কোটি কোটি টাকার চিংড়ি মরে গেছে। ঘের প্রস্ততির আগে ব্লিচিং পাউডার সহ ভাইরাস মুক্ত করণের যে সব পদ্ধতি আছে তা প্রয়োগ না করে গতানুগতিক ভাবে চাষীরা ঘের প্রস্তত করে চিংড়ি ছাড়ার কারনে পুর্বের ভাইরাস আবার দেখা দিয়েছে। আর একারনে চিংড়ি মরে সাবাড় হচ্ছে। তাছাড়া চিংড়ি পোনা ছাড়ার আগে পাোনা ভাইরাস মুক্ত কিনা তা পিসিয়ার পরীক্ষা না করে পোনা ছাড়ার কারনে এমনটা হতে পারে বলে তিনি মত দেন। তিনি আরো বলেন, আমি মাত্র ৫ মাস রামপালে এসেছি। এ সময়ের মধ্যে আমি ৫/৬ শ চাষীক চিংড়ি চাষের উপর প্রশিক্ষন দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সব চাষীকে প্রশিক্ষন দিতে পারলে এরকম অবস্থা আর হবেনা।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত