জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিংয়ের সরকারি বরাদ্দ বাতিল

কোথায় গেল সেই এতিম শিশুরা ?

পিরোজপুর প্রতিনিধি

আপডেট : ০৭:৪৪ পিএম, সোমবার, ৯ মে ২০২২ | ৬৬৭

পিরোজপুরের কাউখালি উপজেলার জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এ কোন এতিম শিশু না থাকায় সরকারি বরাদ্দ বাতিল করে দিয়েছে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তা একাধিকবার পরিদর্শন করেও সেখানে কোন এতিম শিশু পাননি। কিন্তু কোথায় গেল আগের সেই এতিম শিশুরা ? তারা কোন পাচারকারী চক্রের হাতে পড়েনি তো ? এমন অনেক প্রশ্ন এখন জনমনে দেখা দিয়েছে।

এটা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং সভাপতি ও সম্পাদক সহ কমিটির ব্যর্থতার কারণেই বরাদ্দ বাতিল হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

গত এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখে উপজেলার সমাজসেবা কার্যালয়ে থেকে এতিমদের অনুকুলে ২০২১-২২ অর্থ বছরে বরাদ্দের অর্থ কেনো ফেরত দেয়া হবে না তার উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়। জবাব দিতে ৭ কার্য দিবস ধার্য করা হলেও কোন উপযুক্ত জবাব দিতে পারেনি জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং সভাপতি হায়দার সিকদার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সভাপতি ও কমিটির লোকজনের একঘেয়েমি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কারণেই এতিম খানা ও ল্লিাহ বোর্ডিং এ কোন এতিম শিশু নেই। তারা দাবী করেন, জোলাগাতি ইসলামিয়া সিনিয়র ফজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার কমিটিকে কেন্দ্র করে দির্ঘদিন সমস্যা চলে আসছে। রাজনৈতিক আদিপত্যের কারণে এলাকার লোকজন এই এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এ তেমন কোন সহায়তা দিচ্ছে না।

অসহায় এতিম শিশুরা শুধুমাত্র সরকারি বরাদ্দের টাকায় চলতে পারেনি। এছাড়াও করোনা মহামারী লকডাউন এলাকার রাজনৈতিক প্রভাব পড়েছিল এখানে। ফলে এতিম শিশুরা চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু কোথায় গেছে সেই এতিম শিশুরা?

এর একমাত্র কারণ হিসেবে দায়ী করেছে জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সভাপতি হায়দার সিকদার ও তার কমিটির লোকদের।

স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করেন, সভাপতি হায়দার সিকদার তার ভাইদের রাজনৈতিক প্রভাব মাদ্রাসা ও এতিমখানার উপরে বিস্তার করার কারনেই এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং আজ বন্ধের পথে। সভাপতি লতিফ সিকদার ভাইদের রাজনৈতিক প্রভাবে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডি এর ক্ষতি করছে।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মহাসীন কবীর জানান, জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং নিজে তিন বার পরিদর্শন করেও কোন এতিম শিশু শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। আগে বেশ কয়েকজন এতিম শিশুর জন্য বরাদ্দ হলেও ২০২১-২২ অর্থ বছরে মাত্র ৮ জন এতিম শিশুর জন্য বরাদ্দ দেয়া হতো। কিন্ত ২০২১-২২ অর্থ বছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এ কোন এতিম শিশু না পাওয়া যায়নি। ফলে ৮ জনের ২ হাজার টাকার করে ৯৬ হাজার টাকার বরাদ্দ আটকে দিতে বাধ্য হয়েছি। এছাড়া চলতি অর্থবছরে জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত ৮ জনের বরাদ্দের ৯৬ হাজার টাকা দেয়া হবে না। কমিটির লোকজন এতিম শিশু না থাকার উপযুক্ত কোন কারণ দেখাতে পারেনি।

এর আগেও জেলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সভাপতি হায়দার সিকারের ভাই লতিফ সিকদার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেলা পরিষদের কোন টেন্ডার বা অনুমতি না নিয়ে ১২টি তালগাছ ও ১টি রেইন্ট্রি গাছ কেটে আত্মসাতের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি একসময়ে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। এই প্রভাবে মাদ্রাসা এতিমখানা লিল্লাহবোডিং এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছেন।

সভাপতি হায়দার সিকদার আরো জানান, করোনা মহামারীর কারনে এতিমখঅনা ও লিল্লাহ বোর্ডিং এর শিশুরা আস্তে আস্তে চলে গেছে। এছাড়াও সমাজসেবা থেকে যে বরাদ্দ পাওয়া যেতো তাতে হুজুর, বাবুর্চ্চি ও এতিমদের খরচ চলতো না। এছাড়াও মাদ্রাসার হুজুররা নিজেরা ঝামেলা করে। একটি স্থানীয় চক্র এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সম্পদ হাতিয়ে নিতে চায়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত