শরণখোলায় বাবার হত্যার বিচার চেয়ে ছেলের সংবাদ সম্মেলন 

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা 

আপডেট : ১১:৩৩ পিএম, রোববার, ২২ মে ২০২২ | ৪৫২

শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের উত্তর আমড়াগাছিয়া গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাইয়ের মারপিটে গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীর তালুকদার (৫২)। ঘটনার এক মাসের মাথায় গত ১৩ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। মৃত্যুর পর থানায় হত্যার অভিযোগ নিয়ে গেলে মামলা গ্রহন না করে গড়িমশি করে পুলিশ।


এছাড়া, ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষরা উল্টো নানা রকম হুমকি দিয়ে আসছে নিহতের পরিবারকে। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে ওই পরিবারটি। রবিবার (২২ মে) সকাল ১০টায় শরণখোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যার বিচার দাবিসহ এসব অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।


নিহতের ছেলে মো. নাইমুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, জমি নিয়ে চাচাদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। ঘটনার দিন গত ১১ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে চাচা আলমগীর তালুকদার (৪৮) আমাদের বাড়ির সীমানায় ঢুকে নারকেল গাছ থেকে জোরপূর্ব ডাব পাড়ার চেষ্টা করেন। এসময় আমার বাবা জাহাঙ্গীর তালুকদার বাধা দিতে গেলে তাকে গাছের সঙ্গে বেধে মারপিট শুরু করেন। চাচাতো ভাই রোকন তালুকদার (২২) এসে আমার বাবাকে লোহার রড দিয়ে মুখে আঘাত করলে তার মুখ থেঁতলে যায়। রডের আঘাতে একটি দাঁত ভেঙে যায় এবং দুটি দাঁত মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাবার চিৎকার শুনে আমার মা তাসলিমা বেগম ছুটে গেলে তাকেও তার পরনের শাড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেধে মারতে থাকেন তারা। পরে প্রতিবেশীদের সহায়তায় বাবাকে উদ্ধার করে শরণখোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনায় রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। এঘটনার এক মাস তিন দিন পর মারা যান তিনি।


নাইমুর আরো বলেন, আমার বাবাকে তারা পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনার পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন আমার আরেক চাচা শরণখোলা সরকারি কলেজের প্রভাষক মো. জামাল হোসেন তালুকদার। তার পরিকল্পনায় আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে তার ইন্ধনে হত্যাকারী আলমগীর তালুকদার ও তার ছেলে রোকন তালুকদার অব্যাহতভাবে আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তারা প্রভাষক জামাল তালুকদারের নির্দেশে বেপরোয়া আচরণ করছেন। তাদের হুমকিতে আমরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছি। থানায় মামলা নেওয়া বা আমাদের কোনো সহযোগিতাও করছে না পুলিশ। আমার বাবার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে।


এব্যাপারে জানতে চাইলে ইন্ধনদাতা প্রভাষক জামাল হোসেন তালুকদার বলেন, এসব ঘটনায় আমার কোনোপ্রকার সম্পৃক্ততা নেই। তারা অহেতুক আমাকে জড়িয়ে আমার মানসম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছে।


শরণখোলা থানার ওসি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার করে ওইদিনই ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে পাঠাই। ময়না তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত