মেট্রোরেলের ১০ম চালান মোংলা বন্দরে: খালাস শুরু

৬টি কোচ ও ২টি ইঞ্জিনসহ মেট্রোরেলের আরও একটি চালান নিয়ে বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ এমভি এস পি এম ব্যাংকক মোংলা বন্দরে ভিড়েছে। জাপানের কোবে বন্দন থেকে ছেড়ে আসা এ জাহাজটি ৬ জুলাই বুধবার বিকাল সাড়ে ৬ টায় বন্দরের ৮নং জেটিতে নঙ্গর করে। বৃহস্পতিবার সকালের পালা থেকে মেট্রোরেলের পন্যগুলো খালাস কাজ শুরু করবে পণ্য খালাসকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লিঃ। এ পর্যন্ত ১০ম জাহাজে মোট ৯৬টি কোচ মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হয়েছে। বাকি আরো ৪৮টি কোচ এ বন্দর দিয়ে খালাসের কথা রয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বন্দর সুত্রে জানায়, চলতি মাসের ৩ জুলাই জাপানের কোবে বন্দর থেকে ছেড়ে আসা মেট্রোরেলের কোচ বোঝাই সিঙ্গাপুর হয়ে চট্ট্রগ্রামে,পরে মোংলা বন্দরে আসে। জাহাজটিতে ৬টি কোচ ও ২টি ইঞ্জিন ছাড়াও আরও ৫৬টি প্যাকেজে ৩শ ৫১ মেট্রিক টন মেশিনারিজ রয়েছে। ৭জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেট্্েরারেলের পণ্যগুলো খালাস কাজ শুরু করেছে শ্রমিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লিঃ বলে জানায় আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। পানামা পতাকাবাহী বিদেশী বানিজ্যিক এ জাহাজটি এর আগেও ৩বার সহ মোট ৪ বার মেট্্েরারেলের পণ্য এ বন্দরে খালাস করেছে। গত বছরের ৩১ মার্চ ৬টি কোচ ও ২টি ইঞ্জিন সহ প্রথম চালান নিয়ে মোংলা বন্দরে এসে মেট্রোরেলের যন্ত্রাংশ খালাস করে চলে যায় এ জাহাজটি।

মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করা বিদেশী জাহাজটি থেকে এবারের চালানে মেট্রোরেলের পণ্যগুলো খালাস করতে সময় লাগবে মাত্র ২৪ ঘন্টা বলে জানায় জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কর্তৃপক্ষ। আর খালাস প্রক্রিয়া নির্বিঘœ করতে জাপান ও মালয়েশিয়া সহ দেশীয় টেকনিশিয়ানদের একটি দল উপস্থিত থেকে পণ্যগুলো তদারকি করবে। এর আগে ৯টি চালানে ৮৮টি কোচ ও ইঞ্জিন মোংলা বন্দর থেকে খালাস হয়। এ নিয়ে ১০ম চালানে মোট ৬৪টি কোচ ও ৩২টি ইঞ্জিন সহ বেশ কিছু প্যাকেজে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মোংলা বন্দরের মাধ্যমে খালাস হলো।

আগামী আগষ্ট মাসে মেট্রোরেলের আরও একটি চালান আসার কথা রয়েছে। এ পণ্যগুলো খালাসের পর দেশী-বিদেশী টেকনিশিয়ান দল তদারকির মাধ্যমে ২টি বার্জে পণ্যগুলো ঢাকার দিয়াবাড়ী ডিপোতে পৌছাবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে কোচ বাহী বার্জ দুটি নৌ-পথে আগামী ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে দিয়াবাড়ি ডিপোতে পৌছে যাবে বলে আসা করছে সংশ্লিষ্টরা। আর সেখানে পরিক্ষা-নিরিক্ষা শেষে সংযুক্ত করা হবে নির্মানাধীন মেট্টোরেলের সাথে। চলতি বছরের মধ্যে মেট্রোরেলের বাকি ৪৮টি কোচ ও ইঞ্জিন মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানায় এ আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মাদ মুসা বলেন, দেশে আমদানিকৃত মেট্রোরেলের এসব কোচ মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ায় বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে। শুধু মেট্রোরেলই নয়, এর আগে পদ্মা সেতু, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু রেল সেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মালামাল ও যন্ত্রাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হয়েছে। যা দক্ষ লোকের মাধ্যমে মালামালগুলো জাহাজ থেকে বার্জে বোঝাই করে দেয়া হচ্ছে। যা নৌ-পথে কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ী ডিপোতে পৌছাবে।

এমভি এসপিএম ব্যাংকক জাহাজের এর স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ও এনশিয়েন্ট স্টিম শিপ কোম্পানি লিঃ’র ব্যবস্থাপক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এ পর্যন্ত ১০টি জাহাজে করে মেট্রোরেলের ইঞ্জিনসহ মোট ৯৬টি কোচ ও ইঞ্জিন মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হয়েছে। আগামী মাসে মেট্রোরেলের আরও একটি চালান আসার কথা রয়েছে। সব মিলে চলতি বছরে মেট্রোরেলের আরও ৪৮টি কোচ ও ইঞ্জিন আসবে এবং মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হবে।

মেট্রোরেলের নির্মান কাজ শেষ হলে প্রতি ঘন্টায় ৮০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে, ফলে ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক ও যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখবে এ মেট্রোরেল।