কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধুকে বাড়ী ছাড়া করার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ১২:৫৩ পিএম, শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০২২ | ৪০৫

প্রতিকী ছবি

কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক গৃহবধুকে কৌশলে বাড়ী ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে এক মুদি দোকানী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে। দুই সন্তান নিয়ে অসহায় ওই গৃহবধু তার বাবার বাড়ীতে অবস্থান করছেন। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গৃহবধু সুমি রানী বালা বাগেরহাট পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

গৃহবধু সুমি রানী বালা বলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের গোবরদিয়া গ্রামের বাচ্চু মুন্সীর বাড়ীতে সন্তান ও স্বামী বিধান বালাকে নিয়ে ভাড়া থাকতাম। কয়েক মাস পূর্বে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার স্বামী অসুস্থ্য হয়ে পরে। এরপর থেকে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে আমি মানবেতর জীব-যাপন করতে থাকি। এসময় বাড়ীর পার্শ্ববর্তি বাবু ড্রাইভার নামের এক মুদি দোকানীর কাছ থেকে বাকিতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় ও বাড়ি ভাড়া বাবদ ৭ হাজার টাকা বকেয়া হয়। একটা সময় বাবু ড্রাইভার আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে আমাকে কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সে আমাকে নানা ভাবে হুমকী দিতে থাকে। এক পর্যায়ে বাড়ীর মালিক বাচ্চু মুন্সীর লোক স্থানীয় ফারুক হোসেন বাড়ী ভাড়ার টাকার জন্য আমার স্বামীকে চাপ দিতে থাকে। এরই মধ্যে গত ৫ আগষ্ট সন্ধ্যায় মুদি দোকানী বাবু ড্রাইভারের কু-পরামর্শে আমার স্বামী ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার অভিনয় করে অসুস্থ্যতার ভান করেন। এক পর্যায়ে রাত ১১টার দিকে বাড়ির কেয়ারটেকার ফারুক হোসেনকে সাহায্যের জন্য ডাকি। ফারুক আমাদের ঘরে প্রবেশ করলেই আমার স্বামী আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। ফারুকের সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। উপয়ান্তু না পেয়ে পরেরদিন সকালে সন্তান নিয়ে আমি বাবার বাড়িতে চলে যাই। আমার স্বামী বিভিন্ন স্থানে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেন। ওইদিন (০৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় আমার অনুপস্থিতিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় লোকজন এক শালীস বৈঠকের মাধ্যমে বাড়ির কেয়ারটেকার মোঃ ফারুক হোসেনকে মারধর করে। বিষয়টি জানতে পেরে ০৭ আগস্ট সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলামের অফিসে বসে তাকে মৌখিকভাবে ঘটনা খুলে বলি। সবকিছু শোনার পরে আমাকে বাবার বাড়ি যেতে বলেন ইউপি সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম। এই অবস্থায় দুই সন্তান নিয়ে আমি চরম দূরাবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। স্বামীর মিথ্যে অভিযোগ, বাবু ড্রাইভারের অনৈতিক প্রস্তাব ও ষড়যন্ত্রের বিচার দাবি করছি। এই ঘটনার বিচার না পেলে সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার হুমকী দেন এই নারী।

বাড়ির কেয়ারটেকার ও ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, বাগেরহাটের শিক্ষার্থী মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, গৃহবধু সুমি রানী বালার সাথে আমার কোন অনৈতিক সম্পর্ক নেই। ঘটনার দিন সুমি রানী বালার স্বামী অনেক বেশি অসুস্থ্য হওয়ায় আমি ওই বাসায় যাই, পরবর্তীতে বিচার শালিস বসিয়ে আমাকে মারধর করা হয়। এতে আমাকে মারাত্মক বদনাম দেওয়া হয়। তাদের এই মিথ্যা অপবাদে এলাকায় বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমি অন্যায়ে বিচার চাই।


অভিযুক্ত বাবু ড্রাইভার বলেন, আমার দোকান থেকে তারা বাকি পণ্য ক্রয় করত। কিন্তু আমি কখনও তাকে কোন প্রকার কু প্রস্তাব দেইনি।

ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ফোন দিলে আমি ঘটনাস্থলে যাই। এলাকার লোকজন ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়। সবার কথা শুনে ফারুক হোসেনের বাবা-মা-ই তাদের ছেলেকে মারধর করে। আমি ফারুককে মারধর করিনি। পরবর্তীতে ওই নারী আমার কাছে আসলে আমি তাদেরকে আইনের আশ্রয়ে যেতে বলি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত