প্রশস্ততা ও গভীরতা বৃদ্ধিতে

মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে দ্বিমুখী নৌ চলাচলের দাবী

এমএ সবুর রানা,রামপাল

আপডেট : ১০:৩৫ পিএম, মঙ্গলবার, ২০ মার্চ ২০১৮ | ১৫৮১

  • মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে দ্বিমুখী নৌযান চলাচল সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয়রা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বর্তমান অবস্থায় ওই চ্যানেলটিতে দ্বিমুখী নৌযান চলাচল করলে ¯্রােতের প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং পলি পড়ার হার কমবে ফলে চ্যানেলটি স্থায়ী সচল করনে তা ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে। দিবা-রাত্র ও দ্বিমূখী নৌ-যান চলাচল ব্যবস্থা চালুর জন্য কার্যকরী নৌ-ট্রাফিক সিস্টেম চালু করে নৌ-যানের সংখ্যা বৃদ্ধি করলে সরকারের রাজস্ব আয় কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে।


জানা গেছে, মোংলা-ঘষিয়াখালী এই নৌ-চ্যানেলটি ২০১১ সালের পর থেকে সম্পুর্ন ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ২০১৪ সালের ১ জুলাই ৫টি ড্রেজারের মাধ্যমে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু হয় । বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয় প্রশাসন নিরলসভাবে খনন করে চ্যালেনটি ২০১৫ সালের ৬ মে নৌ চলাচল উপযোগী করে উন্মুক্ত করে দেয়। এরপর চ্যানেলটি প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে গত ২৫/১০/২০১৬ তারিখ উদ্বোধন করেন। সেই থেকে দিনের বেলায় একমূখীভাবে নৌ-যান চলাচল করে আসছে। বিআইডাব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগ সংরক্ষন ড্রেজিং এর পাশাপাশি প্রশস্থকরনের কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে । ইতোমধ্যে এই চ্যানেলটির গভীরতা ও প্রশস্থতা বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিমূখী নৌ-যান চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এ রুটে ৪ মিটারের বেশী ড্রাফটের জাহাজ চলাচল করছে।


মংলা- ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ইজারাদার শফিকুর রহমান পলাশ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে
জানান, প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে চলতি অর্থ বছরে ইজারা গ্রহন করা হয়। সপ্তাহে দুই দিন রকেট সার্ভিস চলাচলের কারনে অন্যান্য নৌ-যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে এবং শুধুমাত্র দিনের বেলায় একমূখী নৌ-যান চলাচল করায় বিপুল পরিমান লোকসানের শিকার হচ্ছেন তিনি।


নদী গবেষক মোঃ শাহাবুদ্দিন শিকদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বাস্তব প্রেক্ষাপটে এই চ্যানেল দিয়ে দিবা-রাত্র ও দ্বিমূখী নৌ-যান চলাচল শুরু করা যেতে পারে। এতে চ্যানেলের ¯্রােত প্রবাহ বৃদ্ধি, সিল্টেশনের হার হ্রাস, নৌ-যানের সংখ্যা বৃদ্ধি ও রাজস্ব আয় বহুগুনে বেড়ে যাব্ ে তবে এ ব্যবস্থায় নৌ দূর্ঘটনা এড়াতে কার্যকর নৌ-ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সম্প্রতি চ্যানেলের রামপাল খেয়াঘাটের কাছে সিমেন্ট ভর্তি যে কার্গোটি ডুবে আছে যে কোন মূল্যে তা উদ্ধার করতে হবে। তানা হলে এটি সদ্য খননকৃত চ্যানেলের অপমৃত্যুর কারন হতে পারে। এর ফলে দীর্ঘ দিনের চেষ্টায় বিপুর অর্থ ব্যয়ে চ্যানেলটি সচল করনের উদ্যোগ সম্পূর্ণ ভেস্তে যাবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের যে কোন দূর্ঘটায় তাৎক্ষনিক জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।


এ বিষয়ে সিইজিআইএস এর নদী মর্পোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট কামাল হুসাইন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বর্তমানে এই চ্যানেলের মংলা থেকে জয়খা অংশে সিল্টেশনের হার অনেক বেশী। মাটি ফেলানোর জায়গার অভাবে খনন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। খননকৃত মাটি দ্রুত অপসারন করা না হলে মারাতœক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। খননকৃত মাটি অপসারনের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ৮৩ টি নদী-খাল দ্রুত করে ¯্রােতের প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। তবে দিবা-রাত্র ও দ্বিমূখী নৌ-যান চলাচলের বিষয়ে বলেন, পরীক্ষা মূলকভাবে এ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।


বিআইডাব্লিউটিএ’র তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মোঃ সাইদুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে জোয়ারের সময়ে ২৫ থেকে ৩০ ফুট এবং ভাটার সময়ে ১৮ থেকে ২২ ফুট গভীরতা বিদ্যমান এবং গড়ে ১ শত মিটার প্রশস্ততা রয়েছে। এ অবস্থায় দিবা-নৈশ ও দ্বিমূখী নৌ-যান সতর্কতার সাথে চলাচল সম্ভব বলে মত প্রকাশ করে বলেন, এ ক্ষেত্রে নৌ- ট্রাফিক সিগন্যাল বিশেষ করে ড্রেজার মেশিনের পাশ দিয়ে সতর্কতার সাথে চলাচল করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত