মোংলায় পরিবর্তনের অঙ্গীকারে জনতার মুখোমুখি চার আওয়ামীলীগ নেতা

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ১২:০৪ এএম, মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট ২০২৩ | ৪৮২

মোংলায় সাধারণ মানুষের মুখোমুখী হলেন মোংলা-রামপাল (বাগেরহাট-৩) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী চার আ’লীগ নেতারা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে একই মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এ চার প্রভাবশালী নেতারা। সোমবার বিকালে মোংলা বন্দর শ্রমিক সংঘ চত্তরে কৃষকলীগের ব্যানারে জাতীয় শোক সভায় এক মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ হয় এসকল তারা। পরে দুই উপজেলার আ’লীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।



আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে (মোংলা-রামপাল) বাগেরহাট-৩ আসনে রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে একই মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী চার প্রভাবশালী নেতা সহ অধিকাংশ নেতা কর্মী ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ।



মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন-সাবেক রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মোঃ আবু সাইদ, মোংলা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার, চিত্র নায়ক ও আওয়ামীলীগ নেতা শাকিল খান, খুলনা জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোঃ আবু হানিফ। সোমবার মোংলা-রামপাল এ দুই উপজেলার আ’লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও কৃষকলী সহ এর আঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দদেরন যৌথ উদ্যোগে শ্রমিক সংঘ মাঠে আয়োজিত আগামী নির্বাচনে করণীয় শীর্ষক এক সমাবেশে এ পরিবর্তনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেণ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।



এ সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ আবু সাইদ বলেন, মোংলা-রামপালের এ আসনে আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায়ে দুর্বল করে রাখার জন্য বর্তমান এমপি পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ম,ন্ত্রনালয়ের উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারকে দায়ী করে বলেন, বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসনটি স্বাধীনতার পর থেকেই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেই থেকেই তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে এখানকার আ’লীগ এর অঙ্গ সংগঠনগুলো সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত সুশৃংখল ও শক্তিশালী একটি দল। কিন্ত এ আসনে নৌকার টিকিট নিয়ে নির্বাচিত এমপি হওয়ার পর থেকেই তিনি তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে এখানকার আওয়ামী লীগকে কোণঠাঁসা করে রেখেছেন এবং তিনি রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে দুর্বল করে এলাকায় বিএনপি জামায়াতের কিছু লোককে দলে ঢুকিয়ে তিনি তাদেরকে দিয়েই এলাকার দলীয়সহ সকল উন্নযনমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। এ সুযোগে নামে মাত্র উন্নয়নের কথা বলে কাজ না করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাই এখানকার আ’লীগকে পুনরায় সু-সংগঠিত করার লক্ষেই আজ আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।



অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী খুলনা জেলা সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শেখ আবু হানিফ ও ইদ্রিস আলী ইজারাদার বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হিন্দু-মুসলিমসহ সকল বর্ণ-ধর্মের লোকজন মিলে-মিশে বসবাস করে আসলেও বর্তমানে এখানে রাজনৈতিকভাবে দক্ষ নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। বর্তমানে দলীয় ত্যাগী নেতা-কর্মীসহ সকল শ্রেণী-পেশার লোকই এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে।


তারা আরো বলেন, আমি গত ১০ বছর ধরে রামপাল-মোংলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-৩ আসনটির প্রত্যেকটি পাড়া-মহল্লায় গিয়ে দলীয় তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ এলাকার লোজনের কাছে গিয়ে দেখেছি দল ক্ষমতায় থাকার পরও তারা আজ কত অসহায়। তাই আজ সময় এসেছে পরিবর্তনের। কারণ দল পুর্নাঙ্গভাবে শক্তিশালী না হলে বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনা কষ্টকর হবে। আর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না থাকলে আমাদের কারোই অস্তিত্বই থাকবে না।



মোংলা-রামপালের মনোনয়ন প্রত্যাশী চিত্র নায়ক শাকিল খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে সফর সঙ্গি হিসেবে সাথে ছিলাম। বেশ কয়েক বার বলেছি, মোংলা-রামপাল আসনটি পরিবর্তন করুন, না হয় ধলীয় নেতাকর্মীরা আজ অসহায়। এরকম চলতে থাকলে তারা কিন্ত এ দল থেকে মুখ ফিড়িয়ে নিবে। আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি এবং অঙ্গিকার করেছি পরিবর্তনের। এ সময় সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের তৃণমূলের হাজারো নেতাকর্মীর স্লোগান আর মিছিলে শ্রমিক সংঘ এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে।


মোংলা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাহজাহান ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি এই এম মিলন শিকারীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, ওই চার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাড়াও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ওউপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল হোসেন, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এইচ এম মিলন শিকারী, জেলা পরিষদরে সদস্য শিকদার জলিল, পৌর যুব মহিলা লীগের সভাপতি সুমি লীলা, উপজেলা ছাত্র লীগের সভাপতি সরদার ইয়াসিন আরাফাত, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সজিব, সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এমরান বিশ্বাস, সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার, উদয় সংঙ্কর বিশ্বাস, উৎপল মন্ডল, বাগেরহাট জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও রামপাল বাসতলী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল। এছাড়া যুবলীগ নেতা মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা শারুপ বাপ্পি, রাসেল, শেখ আল-মামুন, মুষফিকুর রহমান সাগর, লিটন হোসেন নিরব, শ্রমিক লীগ নেতা অনিক, জনি সহ বর্তমান রাজনৈতিক দলীয় বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সহ প্রায় ৫০ হাজার স্থানীয় সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।



পরে ওই চার মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দুই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়। অপরদিকে ১৯৯৬ সাল মোংলা-রামপাল আসনে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আঃ খালেক’র পরে তার সহধমির্নী এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। তিনি বর্তমানে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে দায়ীত্ব পালন করছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত