শরণখোলায় পল্লী বিদ্যুতের হালচিত্র

আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়!

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৪:১৫ পিএম, শনিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৮ | ১৬১২

আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়! আর একটু ঝড়বৃষ্টি হলেতো কথাই নেই। দু-একদিনেও তখন বিদ্যুতের নাগাল পাওয়া যায়না। তাছাড়া দিনে রাতে অসংখ্যবার লোডশেডিংতো নিয়মিত ব্যাপার। এছাড়া মাঝেমধ্যে ঘোষনা দিয়ে, আবার অনেক সময় ঘোষনা ছাড়াই লাইন সংস্কারের নামে সারাদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এটা হলো বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের অবহেলিত জনপদ উপকূলীয় বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার হালচিত্র। বছরের পর বছর ধরে পিরোজপুর পল্লী বিদুৎ সমিতির এমন অব্যবস্থাপনায় একদিকে যেমন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের, অন্যদিকে সরকারেরও ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হচ্ছে।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় তিন দশক আগে বাগেরহাটের এ অঞ্চলের (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) বিদ্যূৎ ব্যবস্থাপনাকে পিডিবি থেকে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় স্থানান্তর করা হয়। শুরুর দিকে মাসের পর মাস বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে খুঁটি ও তার পরিবর্তনসহ নানা সংষ্কার কাজ করা হয়েছে। কিন্তু এর পরেও সামান্য মেঘ-বৃষ্টি হলেই খুঁটিপড়ে যাওয়া বা তার ছিড়ে যাওয়ার অজুহাতে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক উন্নতি ঘটলেও শরণখোলায় বরাবরই অতি মাত্রায় লোডশেডিং থেকেই যাচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিকৃয়া ও ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সরকার চাহিদার সঙ্গে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি করে সারাদেশের লোডশেডিং একটি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। কিন্তু শরণখোলার অবস্থা দেখে মনে হয় সরকারের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করার জন্য পল্লী বিদ্যুতের কেউ হয়তো চক্রান্ত করছে।

রায়েন্দা হাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেনসহ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সামান্য মেঘের গর্জন বা বিজ্বলী চমকালেই বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কিছু সময় পর মেঘ সরে গেলেও বিদ্যুৎ আর আসেনা। অনেক সময় সারা রাতেও বিদ্যুৎ না আসায় দক্ষিণাঞ্চলের প্রশিদ্ধ এ রায়েন্দা বাজার অন্ধকারে ভুতুড়ে অবস্থায় পরিনত হয়। এমনকি অন্ধকারে বহুবার বাজার চুরির ঘটনাও ঘটেছে।

পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শরণখোলার পরিচালক ফরিদ খান মিন্টু বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, অন্যান্য এলাকার চেয়ে আমাদের এ অঞ্চল পুরনো লাইন সংষ্কারের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। যার কারনে সামান্য মেঘ বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।


শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, শরণখোলার অতিমাত্রায় লোডশেডিং নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম এর সাথে বহুবার কথা হয়েছে। সবসময় তিনি টেকনিক্যাল সমস্যার কথা বলেন। যার কারনে আমাদের কিছু বলার থাকে না।

(মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. জুলফিকার রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এ অঞ্চলের বিদ্যুতের লাইন গুলো গাছপালার মধ্যে দিয়ে চলে গেছে। যার কারনে মেঘ বা ঝড় হলে মানুষের নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। আর লোডশেডিং মূলত প্রতিদিন সন্ধ্যায় দেওয়া হয়। টেকনিক্যাল সমস্যার কারনে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হয়। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত