অধিকাংশ শিকরা সন্তানদের পড়ান কিন্ডার গার্টেনে

চিতলমারীতে প্রাথমিক শিক্ষকদের পাঠদানের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন!

এস এস সাগর, চিতলমারী

আপডেট : ০৪:০৫ পিএম, শুক্রবার, ১২ অক্টোবর ২০১৮ | ২০৬০

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিকরা তাদের সন্তানদের কিন্ডার গার্টেনে পড়ান। নিজেরা শিক হয়েও ভাল রেজাল্টের আশায় উচ্চ বেতন দিয়ে প্রাইভেট স্কুলে পড়ানোতে এ উপজেলার প্রাথমিক শিকদের পাঠদানের মান নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাহলে কি ওই শিকদের নিজেদের শিক্ষাদানের ওপর নিজেদের আস্থা নেই ? এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা সদরের আশেপাশের স্কুল গুলোর শিার্থীর সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে। অনেক স্কুলে শ্রেণী অনুযায়ী শিার্থীর চাইতে শিক বেশী। আবার অনেক স্কুলে স্বামী-স্ত্রী দুজনে একই স্কুলের শিক হওয়ায় বিদ্যালয়টিকে পরিবার বানিয়ে ফেলেছেন। এমনটা চলতে থাকলে অচিরেই বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রী শূন্য হয়ে পড়বে। তবে এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে এমন অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবক মহল। অথচ প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট ১১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। উপজেলা সদরে রয়েছে এ কে ফায়জুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আশপাশে রয়েছে সুরশাইল, ব্রহ্মগাতী, কুরাতলা, খড়মখালী শ্রীমতি স্নেহলতা ও শ্যামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ গুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র-ছাত্রী কম। কারন উপজেলা সদরে রয়েছে শেখ হেলাল উদ্দীন একাডেমি, আজিজুল হক আইডিয়াল একাডেমী, শিশুকানন একাডেমী ও উচ্ছাস কিন্ডার গার্টেন। এসব প্রাইভেট স্কুলে শিার্থীর প্রচুর চাপ। অনেক স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের বসতে দেওয়ার জায়গা নেই। এদের মধ্যে খুঁজলে দেখা যাবে অনেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিকদের সন্তান। তাই তারা নিজেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক হয়ে সন্তানদের প্রাইভেট স্কুলে দেওয়ায় এ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর শিার মান নিয়ে অভিভাবক মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে অনুপ মজুমদার, রহিমা বেগম, পলাশ তালুকদার ও মহেন্দ্র নাথ মন্ডলসহ অনেকে বলেন, তারা শিক হয়ে যদি নিজেদের সন্তানদের প্রাইভেট স্কুলে পড়ান, তাহলে আমাদের সন্তানদের কি হবে। আর ওই সব শিকদের পাঠদানেরই বা কি যোগ্যতা আছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন সহকারি শিক্ষক জানান, সল্প শিক্ষিত যারা শিক্ষকতা পেশায় এসেছেন। তাদের পাঠদানের ক্ষমতা অত্যান্ত নাজুক। তাই প্রাইমারী শিক্ষার মান হঠাৎ নিম্মমুখি হওয়ার এটি একটি অন্যতম কারণ।

বারাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ সাফায়েত হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। সকল রেজিষ্টার স্কুল গুলোকে সরকার জাতীয়করণ করেছেন। প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণীর মর্যাদা প্রদান, সকল বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করণ ও নানামুখি সুবিধা প্রদান করেছেন।

তিনি আরও জানান, প্রাইমারী শিক্ষকদের সন্তানদেরকেজি স্কুলে পড়ানো ঠিক নয়। তাহলে শিকদের পাঠদানের মান নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন স্বাভাবিক।

এ ব্যাপারে জানতে কয়েকজন প্রধান শিক্ষককের কাছে প্রশ্ন করলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে চিতলমারী উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার এস এম আলী আকবর মুঠোফোনে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, কয়েকজন শিক্ষক তাদের ছেলে-মেয়েকে প্রাইভেট স্কুলে পড়ান এ কথা সত্য। চিতলমারী সদরে বাস করলেও অনেক শিক্ষক দূরের স্কুলে শিক্ষকতা করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত