“জাতীয় সবজি মেলায় দেশসেরা নির্বাচিত”

ফকিরহাটে আলু চাষে অর্ধশতাধীক চাষির সফলতা অর্জন

পি কে অলোক,ফকিরহাট

আপডেট : ০৫:৪৯ পিএম, মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ | ১২১৩

ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা এলাকায় মেটো আলু চাষে অর্ধশতাধিক চাষি ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ আর হাতে কলমে শিখনীর কারণে মাত্র ১টি আলুর ওজন ১শত ৪০কেজি হয়েছে। যা ঢাকার জাতীয় কৃষি মেলায় দেশসেরা হিসাবে বিবেচিত হয়ে সেরা পুরস্কারের গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে স্থানীয় চাষিরা যে এত সচেতন তারও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

জানা গেছে, উপজেলা বেতাগা এলাকার ৫নং ওয়ার্ডে তিন বছর আগে স্থানীয় কৃষক সুভাষ দাশের পুত্র প্রকাশ চন্দ্র দাশ মেটো আলুর চাষ শুরু করেন। তা মধ্য থেকে ১টি আলুর ওজন এখন ১শত ৪০ কেজি হয়েছে। যা বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন। প্রকাশ দাশ ছাড়াও একই এলাকার মনি মোহন দাশ, কার্ত্তিক চন্দ্র দাশ, কংকর চন্দ্র দাশ ও অমল চন্দ্র দাশ সহ একাধিক কৃষক মেটো আলুর চাষ করে ব্যাপক সফলতা লাভ করেছেন।

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার প্রদিপ কুমার মন্ডল ও বিপ্লব কুমার দাশ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মেটো আলুর চাষ করতে গেলে প্রথমে ৩ফুট চওড়া ও ৪ফুট আড়ে এবং আড়াই ফুট গভীর করে একটি বড় গর্ত তৈরী করতে হবে। তার পর তাতে পর্যাপ্ত পরিমানে ছাই এবং ১কেজি পটাশ, ১কেজি ইউরিয়া ও ২কেজি টিএসপি সার দিয়ে গর্তটি মাটি দিয়ে ভরাট করে ১মাস ফেলে রাখতে হবে। এর পর ১মাস পর ১টি বীজ পুতে দিতে হবে। বীজ উঠলে সেই গাছটি অন্যকোন গাছে উঠিয়ে দিতে হবে। গাছটির বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাতে পরিমান মত মাটি ও কিছু জৈব সার দিয়ে গর্তের চতুর পাশের্^ ঢেকে দিয়ে সেটি সময়মত পরীক্ষা নিরিক্ষা করে আবারও ঢেকে দিয়ে কিছু আবর্জনা দিয়ে রাখলে তা সহজেই পুষ্টিকর হবে। এক্ষেত্রে ছাই এর পরিমান ও জৈব সার এর পরিমানটা বেশি হবে। গত বছর যে সমস্ত কৃষক নিয়মানুযায়ী মেটো আলুর চাষ করেছিলেন, তাদের মেটো আলু মাত্র ১বছরে ৬০থেকে ৭০কেজি ওজন হয়েছে। কৃষকরা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেছেন, সাধারনত বাগানে ছায়ার মধ্যে কোন সবজি বা ফসল হতে চাই না। তাই পরিত্যাক্ত জমিতে গর্ত খুড়ে মেটো আলু রোপন করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রতি কেজি মেটো আলু বাজারে ৩৫/৪০টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। কিন্তু চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার ও পাচিং পদ্ধতির প্রর্বতক মোঃ নাছরুল মিল্লাত এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, অন্যান্য সবজীর তুলনায় এটি উৎপাদনে ঝুকি ও রোগ বালাই অত্যান্ত কম। বিঘাপ্রতি মেটো আলু গড় ফলন ৩/৪টন হয়ে থাকে। মানুষের শরীরের পুষ্টিহীনতা দুর করতে ও সবজীর ঘাটতি মেটাতে পরিত্যাক্ত জমিতে সাঠিক ব্যাবহার করতে বীষমুক্ত সবজী পেতে আর্থিক স্বচ্ছলতা অনায়নে এই সবজিটি বিশেষ অবদান রাখে। এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, মেটো আলু চাষের মাধ্যমে আর্থিক ভাবে লাভবান ও উৎপাদনমুখী উন্নয়ন করা সম্ভাব। তিনি বলেন, আদিকাল থেকে এই আলুর ব্যাবহার হওয়া সত্তেও বৈজ্ঞনিক পদ্ধতিতে এই আলুর চাষাবাদ শুরু হয়নী বলে এচাষে তেমন উন্নয়ন ঘটেনী। অথাচ একটু সচেতন হলে কম খরচে অধিক সবজী লাভ করা সম্ভাব। পুষ্টির ও আইরণ এর অভাব পূরণ করতে এবং স্বল্পপুজিতে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য মেটো আলু চাষ করার জন্য সকল কৃষকদের প্রতি আহবানও জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত