চিতলমারীর হিন্দু বাড়িতে আগুন

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৬:৪০ পিএম, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৭ | ৮৭০

চিতলমারীতে প্রতিপক্ষরা একটি হিন্দু বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় দুই প্রতিবেশি জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঝষিকেশ মন্ডল ও তার স্ত্রী শেফালি রাণী মন্ডলকে ঘরে তালাবদ্ধ করে পুড়িয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা পরিকল্পিতভাবে এই আগুন দেয় বলে অভিযোগ তাদের। মঙ্গলবার আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের আড়–লিয়া গ্রামের ঝষিকেশ মন্ডলের বাড়িতে এই আগুনের ঘটনা ঘটে। বসতঘর পুড়ে যাওয়ায় ঝষিকেশ মন্ডল তার পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই বসবাস করছেন।


আগুনে ঝষিকেশ মন্ডলের বসত ঘর ও রান্নাঘর এবং পাশ^বর্তি সুনীল মন্ডলের একটি রান্নাঘর সম্পূর্ণ ভষ্মিভূত হয়। আগুনে ঝষিকেশের ঘরে থাকা আলমারি, রেফ্রিজারেটর, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ অন্তত দশ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।

বুধবার সকালে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ ক্ষতিগ্রস্থ ঝষিকেশের বাড়ি পরিদর্শন করে ঘর তৈরির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে চার বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন নগদ দশ হাজার টাকা দেন।

ক্ষতিগ্রস্থ ঝষিকেশ মন্ডল অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় নরেশ গোসাই ও ফারুক শেখের সঙ্গে আমার জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। তারা আমাকে আমার ভিটামাটি থেকে উৎখাত করতে পাঁচটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তার মধ্যে আমি তিনটায় বেকসুর খালাস পেয়েছি আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। প্রতিদিনের মত আমি ও আমার স্ত্রী রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত আমার বাড়িতে ঢুকে আমার ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দেখতে পেয়ে আমি ও আমার স্ত্রী ঘুম থেকে উঠে দরজা ভেঙ্গে বাইরে আসি। আগুনের লেলিহান শিখায় আমার দুটি ঘর ও আমার পাশের সুনীল মন্ডলের একটি পুড়ে সম্পূর্ণ ভষ্মিভূত হয়ে গেছে। এতে আমার সব মালামাল পুড়ে অন্তত দশ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষ ফারুক ও নরেশ বিভিন্ন সময়ে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যা করতে আমার ঘরে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ তার।


চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ঝষিকেশ মন্ডলের বাড়ি পরিদর্শন করেছি। বসতঘর তুলতে তাকে চার বান্ডিল টিন দেওয়া হয়েছে। তার বাড়িতে কারা এই আগুন দিয়েছে তা তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ঝষিকেশকে নগদ দশ হাজার টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে। তার সাথে স্থানীয় ফারুক ও নরেশের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে কি না তদন্ত করতে পুলিশের কাছে দাবী জানান তিনি।


চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকুল চন্দ্র বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, কারা এই বাড়িতে আগুন দিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এবিষয়ে কথা বলতে ফারুক শেখ ও নরেশ গোসাই এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত