রামপালে ১৯৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫০টিতেই কোন শহীদ মিনার নেই

এম,এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ০৯:০৩ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ | ৮১৫

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কী তা ভূলিতে পারি। অনবদ্য এই গান আজও আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের আহব্বান। অবহেলিত ও উদাসিনতায় বাগেরহাটের রামপালে ১৯৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্টানেই কোন শহীদ মিনার নেই।

ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর ও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় ৫০ বছর পার হলেও বাঙ্গালী জাতির গর্ব মহান একুশে ফেব্রুয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার দিবস পালনের জন্য ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। সরকারি ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ দিবস পালনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও শহীদ মিনার না থাকায় কোথাও কোথাও কলাগাছে কাপড় জড়িয়ে দায়সারা গোছের শহীদ দিবস পালন করতে দেখা যায়। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও সমাজের নামিদামি ব্যক্তিগন পরিচালনা পর্ষদে থাকলেও দীর্ঘ ৬৮ বছরেও নির্মিত হয় শহীদ মিনার।

এতে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না। ফলে ভাষা প্রেমী মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারী মাস আসলেই শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচী গ্রহন করা হয়। সরকারি, বে-সরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনের জন্য বেশ তৎপর লক্ষ করা যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ভাষার মাস শেষ হলেই এবিষয়ে আর কোন চেতনাবোধ বা দায়বোধ দেখাই যায় না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে এই উপজেলায় নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, কলেজ ও মাদ্রসার মোট ৬৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৪টি, তার মধ্যে ৮টি তে শহীদ মিনার রয়েছে ৬টিতে নাই, ৩২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ২১টি, ১১টিতে শহীদ মিনার নাই, ১৭টি মাদ্রাসার কোনটিতেই শহীদ মিনার নাই, ৩টি কলেজের মধ্যে গীলাতলা আবুল কালাম ডিগ্রী কলেজ ও ভাগা সুন্দরবন মহিলা কলেজে শহীদ মিনার থাকলেও রামপাল সরকারি কলেজে শহীদ মিনার নাই। অথচ ১৯৬৮ বা ১৯৬৯ সালে ওই সরকারি কলেজে উপজেলার প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়।

যা বর্তমানের অবহেলা ও অযত্নে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এ বিষয়ে প্রতি বছর লেখালেখি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরই উদাসিনতা দেখিয়েছে। উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা সূত্রে জানাগেছে অত্র উপজেলায় ১২৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১২টিতে শহীদ মিনার রয়েছে এবং বাকি ১১৫টিতে কোন শহীদ মিনার নেই।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল হক-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বাগেরহাট২৪কে বলেন,স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগন অস্থায়ী বেদী তৈরি করে শহীদ দিবস পালন করবে। আগামীতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে শহীদ মিনার নির্মান করা হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মতিউর রহমান বাগেরহাট২৪কে বলেন,এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে খুব শিঘ্রই প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল বাগেরহাট২৪কে বলেন,সরকারি বে-সরকারি পর্যায়ের দান-অনুদানে কয়েক মাসের মধ্যেই শতভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মানের জোর চেষ্টা চলছে। তিনি এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত