নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে চলাচলরত বিভিন্ন নৌযানসহ জেলে ও নৌকা

মোংলা বন্দরে ৭ নম্বর সংকেত, বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

মাসুদ রানা,মোংলা

আপডেট : ০৭:০২ পিএম, সোমবার, ১৮ মে ২০২০ | ৮০৮

মোংলা বন্দরে ৭ নম্বর সংকেত

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান’র কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে সোমবার বিকেলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ নদী উত্তাল থাকলেও স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করছে মোংলা, সুন্দরবনসহ আশপাশ উপকূলীয় এলাকা জুড়ে। তবে সংকেত বৃদ্ধি পাওয়ায় মোংলা বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ।

মোংলা বন্দরে কয়লা ও কিংকারবাহীসহ মোট ১১টি বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। বন্দরের হারবার মাষ্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে জরুরী কন্ট্রোল রুম খুলেছে বন্দর কর্তৃৃপক্ষ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন সম্ভাব্য ঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান, অবস্থা বুঝে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অপরদিকে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ঘূর্নিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি ও সতর্কতামুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে পৃথক কন্ট্রোল রুম। উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট ১০৩টি সাইকোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের এসব সাইকোন শেল্টারগুলোকে ঝাড়ু দিয়ে ছেড়ে ময়লা আর্বজনা পরিস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক দলসহ প্রশাসনের সদস্যদেরকেও। এছাড়া মাইকিং করে জনসাধারণকে সাইকোন শেল্টারে গিয়ে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

তবে সোমবার সন্ধ্যায় কয়েকটি সাইকোন শেল্টারে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি হওয়ার পরও মোংলা পৌর শহর এবং শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলো এখনও খোলা হয়নি। কেন্দ্রগুলো খুলে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কথা থাকলেও তাতে এখনও তালা ঝুলছে। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার কানাইনগর, চালনা বন্দর মডেল বিদ্যালয়, দিগন্ত প্রকল্প স্কুল, আরাজী মাকোরডোন, চালানা বন্দর ফাজিল মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে সবগুলোর দরজায় তালা মারা। সেখানে গিয়ে কেউ আশ্রয় গ্রহণ করেননি।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, করোনা পরিস্থিতির আগ থেকেই এসব আশ্রয়কেন্দ্র যেমন তালাবদ্ধ ছিল, এখনও তেমন আছে। কেউ আসেনি পরিস্কারও করেনি। আর তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকলে আশ্রয়কেন্দ্রে কে আসবে আশ্রয় নিতে। এনিয়ে তারা আতংকে রয়েছেন বলেও জানান তারা।

এদিকে নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা দিনের জোয়ারে বৃদ্ধি পায়নি। তারপরও বন্দর কেন্দ্রিক চলাচলরত বিভিন্ন নৌযান ও সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর নদীতে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। মোংলা নদীর পূর্ব পাড়ে কয়েকশ’ ট্যুরিষ্ট বোট নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া আশপাশের বিভিন্ন খালেও বিভিন্ন নৌযান নিরাপদে নঙ্গর করে রয়েছে।


পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বনের গহীনে সব ষ্টেশন ও টহল ফাঁড়িতে সতর্কতামুলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দুর্যোগের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুস্কৃতিকারীরা যাতে হরিণসহ অন্যান্য বন্য প্রাণী ও বনজ সম্পদ ধ্বংস করতে না পারে সে জন্য বনকর্মীদের সজাগ থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত