মোংলায় ঘুর্নিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে
ভাঙ্গন কবলিত উপকুলীয় এলাকার ভেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামত করা হবে-ডিসি
আপডেট : ০৫:১০ পিএম, মঙ্গলবার, ২৬ মে ২০২০ | ৬৩৯
ঘুর্নিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত উপকুলীয় এলাকার নদী সংলগ্ন ভেড়িবাঁধ, বসতঘর, রাস্তাঘাট আর ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য ঘেরের ক্ষয়ক্ষতি পুশিয়ে নেয়া ও মানুষদের পুর্নবাসনের আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ। একই সাথে দ্রুত নদী পাড়ের ভেড়িবাঁধ সংস্কারের কথাও বলেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত উপকুলীয় এলাকার ভাঙ্গন কবলিত কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
মোংলার কাইনমারী, কানাইনগর, চিলাসহ বেশ কিছু ক্ষতিগ্রস্ত ভেড়িবাঁধ ভাঙ্গন পরিদর্শন করেন তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খানঁ, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফ হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
গত ২০ মে রাতে প্রলয়ংকারী ঘুর্নিঝড় আম্পান আঘাতহানে মোংলা উপজেলার উপকুলীয় বেশ কয়েকটি এলাকায়। এসময় গুড়িয়ে দেয় এখানকার অসহায় মানুষের বসত ঘর, রাস্তাঘাট, আর মৎস্য ঘের। ভাসিয়ে নিয়ে যায় নদী সংলগ্ন বসবাসকারীদের মাথার উপরের চালা ও ঘরে থাকা শেষ সম্বলটুকু। একই সাথে নদী পাড়ের ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় বেশ কয়েকটি এলাকা। ঘুর্নিঝড়ের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটে জেলেসহ অসংখ্য মানুষের।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী মোংলায় ঘুর্নিঝড় আম্পানের আঘাতে ১২৫টি বসত ঘর সম্পুর্ন বিদ্ধস্ত হয়। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ৫২৫টি বসত ঘর। এছাড়া রাস্তা ভেঙ্গে যায় প্রায় ৬ কিলোমিটার, ১৫শ ৮৫টি মৎস্য ঘের তালিয়ে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয় মৎস্য চাষিদের বলে জানায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
মোংলার নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন কালে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ বলেন, ঘুর্নিঝড় আম্পানে যাদের ক্ষতি হয়েছে, তাদের পুর্নবাসন ও রাস্তাঘাট মেরামতের ব্যাবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি নদী ভাঙ্গন রোধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেয়ারও আশ্বাস দেন তিনি। এছাড়াও উপকুলীয় এলাকার মানুষকে যাতে আম্পানের মতো ঘুর্নিঝড়ে যান মালের ক্ষতির মধ্যে পরতে না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
বাগেহোটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খাঁন জানান, ঘুর্নিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ভেড়িবাঁধ গুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় নির্মান করা হয়নি। তার পরেও আমরা এলাকাটি ঘুরে দেখে গেলাম এবং টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মান করার জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে অবহিত করবো । তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই এলাকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় যে কাজ চলছে তা, বাস্তবায়নে বিভিন্ন বাঁধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সরকারের উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড বাধাগ্রস্থ হওয়ার আশংকা করেন তিনি।
গত ২০ মে ঘুর্নিঝড় আম্পানের আঘাতে মোংলা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং প্রায় ১০ কিলোমিটার নদী সংলগ্ন এলাকার ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়।